সিলেটে ইতিহাস গড়ার অপেক্ষায় টগবগে আত্মবিশ্বাসে বাংলাদেশ

সিলেটে ইতিহাস গড়ার অপেক্ষায় টগবগে আত্মবিশ্বাসে বাংলাদেশ

১-১। দুই ম্যাচ শেষে এই হচ্ছে সিরিজের স্কোরলাইন। শনিবার ( ৯ মার্চ) দুপুরে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কার। ম্যাচটা তাই অঘোষিত ফাইনালেই পরিণত হয়েছে। 

‘ফাইনালের’ সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ আছে ইতিহাসের সামনেও। নিজেদের ইতিহাসে যে কখনোই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সিরিজ জিততে পারেনি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সিলেটে লঙ্কানদের হারাতে পারলেই গড়া হয়ে যাবে ইতিহাসটা। 

তবে সেজন্য পূর্বশর্ত হচ্ছে জয়। এমনিতে এই ম্যাচের আগে বাংলাদেশ কিছুটা এগিয়ে আছে শ্রীলঙ্কা থেকে। আত্মবিশ্বাসের দিক থেকে। এই ম্যাচের আগে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসের পারদ চড়ে আছে তুঙ্গে।

হবেই বা না কেন? প্রথম ম্যাচে ২০৭ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ৩ রানে হার। জাকের আলী অনিকের ৩৪ বলে ৬৮ রানের ইনিংস শুধু বাংলাদেশকে জয়ের খুব কাছেই নিয়ে যায়নি, মহামূল্য বিশ্বাসটাও দিয়েছে দলকে। সেটা আজ সংবাদ সম্মেলনে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেও মেনে নিয়েছেন এক বাক্যে। 

অমন লড়াইয়ের পর জয় না পেলেও নৈতিক জয়টা সঙ্গী হয় ঠিকই। বাংলাদেশেরও তাই হয়েছে।

এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে তো বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কাকে রীতিমতো ধসিয়েই দিয়েছে! ব্যাটিং, বোলিং কিংবা ফিল্ডিং সব দিক থেকে স্বাগতিকরাই ছিল এগিয়ে। যার ফল ৮ উইকেটের দারুণ এই জয়। যার ফলে এখন সিরিজে চলে এসেছে সমতা, শেষ ম্যাচটা পরিণত হয়েছে অঘোষিত ফাইনালে। সব মিলিয়ে শনিবারের এই ফাইনালের আগে বাংলাদেশই এগিয়ে থাকার কথা মনস্তাত্বিক লড়াইয়ে। যা দলকে ফাইনালে বেশ সুবিধাই দেবে।

তবে অন্য এক দিক থেকে শ্রীলঙ্কাই এগিয়ে আছে বাংলাদেশের তুলনায়। চলতি সিরিজে প্রত্যেকটা ম্যাচেই শেষে বোলিং করেছে শ্রীলঙ্কা। সন্ধ্যার পর থেকে রাতে মাঠে পাল্লা দিয়ে বাড়ে শিশিরের উপস্থিতি। ভেজা বল গ্রিপ করা যায় না ঠিকঠাক। যে কারণে শেষে বোলিং করাটা হয়ে যায় দুনিয়ার কঠিনতম এক কাজ। 

ঠিক এ জন্যেই দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কা তাদের একাদশে এনেছিল পরিবর্তন। স্পিনার দনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে বসিয়ে দলে ঢুকিয়েছিল দিলশান মাদুশঙ্কাকে।

লঙ্কানরা পরে বোলিংয়ের এই অসুবিধা সামলেও একটা জয় তুলে নিয়েছিল প্রথম ম্যাচে। সব মিলিয়ে শেষ টি-টোয়েন্টিতে যদি বোলিংই করতে হয় শেষে, সেক্ষেত্রে এই অভিজ্ঞতাটা কিছুটা এগিয়েই রাখবে সফরকারী দলটাকে। 

প্রথম দুই ম্যাচে টস জিতেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। শেষ ম্যাচে যে তিনি ল অফ অ্যাভারেজের কাটায় পড়ে টসটা হারবেন না, সে গ্যারান্টিটাই বা কে দিচ্ছে? সেটা যদি শেষমেশ হয়েই যায়, নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে এ ম্যাচ দিয়ে একাদশে ফেরা লঙ্কান অধিনায়ক হাসরাঙ্গা ডি সিলভা যে শুরুতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্তটাই নেবেন, তা বলাই বাহুল্য। প্রথম দুই ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে টসের সময় এ কথাই বলতে শোনা গেছে। 

শেষ ম্যাচে যদি শেষে বোলিং করতে হয়, তাহলে বাংলাদেশকে ভোগাতে পারে অভিজ্ঞতার এই অভাবটা। তার ওপর যোগ করতে পারেন বাংলাদেশের স্পিন নির্ভরতাকে। দুই ম্যাচে বাংলাদেশ স্পিনারদের দিয়ে বল করিয়েছে ১৪ ওভারে, প্রতি ম্যাচেই খেলেছেন দুজন স্পিনার শেখ মাহেদি আর রিশাদ হোসাইন। শেষ ম্যাচে শিশিরভেজা মাঠে বোলিংটা নিশ্চয়ই সহজ হবে না তাদের জন্য!

ফাইনালের আগে তাই ‘সমতা’ সব দিক থেকেই। যে সমতা ভাঙবে একমাত্র ফাইনালের ফলাফলই।

সম্পর্কিত খবর