তীরে এসে তরি ডুবল যুক্তরাষ্ট্রের
এবারের বিশ্বকাপে দুইশ ছুঁইছুঁই রান তাড়া করার কীর্তি আছে একটা দলের। সে দলটা যুক্তরাষ্ট্র, নিজেদের প্রথম ম্যাচে কানাডাকে হারিয়েছিল দলটা। সেই আমেরিকানরা আরও এক অবিশ্বাস্য কীর্তির খুব কাছাকাছিই ছিল। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাদের শেষটা মনমতো হলো না। ১৮ রানে হেরে বসেছে এবারের বিশ্বকাপের সহ-আয়োজকরা।
লক্ষ্যটা ছিল ১৯৫ রানের। তা তাড়া করতে প্রয়োজন ছিল ভয়ডরহীন ব্যাটিংয়ের। অ্যারন জোন্সের দল তাই করছিল বৈকি! যুক্তরাষ্ট্র না বলে আন্দ্রিস গাউস বললেই বুঝি কথাটা বেশি যুক্তিযুক্ত শোনায়। পাওয়ারপ্লেতে একাধারে ব্যাটারদের যাওয়া আসার মিছিল যখন চলছিল, তখন এপাশ থেকে তিনি তাণ্ডব বইয়ে দিচ্ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের ওপর।
এপাশে উইকেট পড়ছিল নিয়মিত। পাওয়ারপ্লেতে তবু ৫৩ রান তুলল যুক্তরাষ্ট্র। আস্কিং রেটকে যে পাল্লা দিচ্ছিল দলটা, তার কৃতিত্ব পুরোটাই গাউসের। স্টিভেন টেলর শুরুতে একটু চেষ্টা করেছিলেন, তবে তার সে চেষ্টা ১৪ বলে ২৪ রান করেই শেষ হয়। এরপর প্রথম ম্যাচের নায়ক জোন্স, নিতিশ কুমার, কোরি অ্যান্ডারসন কিংবা শায়ান জাহাঙ্গীরদের কেউই ব্যাট হাতে দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেক ইনিংস হাওয়া হয়ে যায় ৭৬ রান তুলতেই।
এরপরই দলটা বিরুদ্ধ স্রোতে সাঁতরান শুরু করে। ৭ ওভারে ৯১ রানের জুটি দাঁড় করিয়ে ফেলেন হারমিত সিং আর গাউস। ২২ বলে ৩৮ রান করা হারমিত যখন বিদায় নিচ্ছেন কাগিসো রাবাদার শিকার বনে, তখনও দলের জয়টা খুব সম্ভবই ছিল। ১১ বলে প্রয়োজন ছিল ২৮ রানের। কিন্তু সেটাই আর নিতে পারল না যুক্তরাষ্ট্র। পরের ১১ বল থেকে রাবাদা আর আনরিখ নরকিয়া মিলে দিলেন মোটে ১০ রান। আর তাতেই শেষ অঙ্কটা আটকে যায় যুক্তরাষ্ট্রের।
এর আগে অ্যান্টিগার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে আজ টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাট করতে পাঠান যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক অ্যারন জোন্স। শুরুটা প্রোটিয়াদের ভালো হয়নি। ১১ বলে ১১ রান করে আউট হন রিজা হেনড্রিকস।
তবে এরপরই রুদ্ররূপ ধারণ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। অধিনায়ক এইডেন মার্করামকে সঙ্গে নিয়ে আক্রমণে যান কুইন্টন ডি কক। দুজনের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আসে ১১০ রান। এরপর আবার জোড়া ধাক্কা খায় প্রোটিয়ারা। দলীয় ১২৬ রানে ডি কক ফেরেন ৪০ বলে ৭৪ রানে। একটু পর ডেভিড মিলারও ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই।
১৪১ রানের মাথায় মার্করামকেও হারায় দলটা, ৩২ বলে ৪৬ রান করে আউট হন প্রোটিয়া অধিনায়ক। তবে এরপর থেকে শেষ পর্যন্ত আর কোনো পা হড়কায়নি দলটার। হাইনরিখ ক্লাসেন ও ট্রিস্টান স্টাবস মিলে ২০ ওভার পর্যন্ত কাটিয়ে দিয়ে আসেন। ক্লাসেন ২২ বলে ৩৬ ও স্টাবস ১৬ বলে ২০ রানে অপরাজিত ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯৪। এই লক্ষ্য সামনে রেখে দারুণ লড়ে গেলেও আর শেষ অঙ্কটা মেলান হয়নি যুক্তরাষ্ট্রের।