ফিক্সিংয়ের গন্ধ পাওয়া একাত্তর টিভিকে মুশফিকের আইনি নোটিশ
নিষ্ঠা ও পরিশ্রমী ক্রিকেটার হিসেবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে আদর্শ মুশফিকুর রহিম। দীর্ঘ ১৮ বছর বাংলাদেশ জাতীয় দলকে সার্ভিস দিয়ে এখন অবস্থান করছেন ক্যারিয়ারের গোধূলি লগ্নে। সেই তাকেই কিনা প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে ফিক্সিং কেলেঙ্কারির মতো নোংরা প্রতিবেদনের মাধ্যমে। তাও কোনো রকম প্রমাণ ছাড়াই।
মিরপুর টেস্টের প্রথম দিনে অবস্ট্রাটিং দ্য ফিল্ড আউট হওয়ার পর ৭১ টিভির খেলাযোগে মুশফিককে ইঙ্গিত করে 'মিরপুর টেস্টে ফিক্সিংয়ের গন্ধ' এই শিরোনামে একটি রিপোর্ট করা হয়। যা মানতে পারেননি অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। যার জবাব চেয়েই এবার আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন মুশি। মুশফিকের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খানের পক্ষ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চারটি বিষয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষ্পত্তি চাওয়া হয়েছে-
বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়েছে-বাংলাদেশ- নিউজিল্যান্ড টেস্ট সিরিজ চলাকালীন গত ০৬-১২-২৩ইং তারিখে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের ‘আউট অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড' কে কেন্দ্র করে “মিরপুর টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ের গন্ধ! সন্দেহ সিনিয়র ক্রিকেটারের দিকে! শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ৭১ টেলিভিশনের নিয়মিত অনুষ্ঠান খেলাযোগের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে প্রতিবেদন প্রচার করা হয়। সেখানে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের আউট নিয়ে মনগড়া, অসত্য, উদ্দেশ্য-প্রণোদিত তথ্য পরিবেশন করে তার দীর্ঘ ১৮ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ওপর কালিমা লেপন করা হয়েছে এবং তাঁর সুনাম ক্ষুন্ন করা হয়েছে । প্রতিবেদনটি এমন সময়ে করা হয়েছে যখন বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট চলমান । উক্ত প্রতিবেদনের কারনে মুশফিকুর রহিম পারিবারিক, সামাজিক ও ব্যক্তি পর্যায়ে সুনাম ক্ষুন্ন শিকার হয়েছেন এবং তিনি এই বিকৃত তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদনের কারনে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত সময় পার করেছেন।
“Mr. Dependable” খ্যাত মুশফিকুর রহিমের পরিশ্রম ও ঘামে অর্জিত সুনাম এমন দায়িত্ব জ্ঞানহীন প্রতিবেদনের কারনে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে । উক্ত প্রতিবেদনের কারনে তাঁর অপূরনীয় সুনামহানি হাওয়ার প্রেক্ষিতে ৭১ টেলিভিশনের হেড অফ নিউজ, ক্রীড়া সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকের কাছে কিছু বিষয়ের নিষ্পত্তি চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে । মুশফিকুর রহিমের পক্ষে নোটিশটি আজ ইমেইলের মাধ্যমে প্রেরন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান । আইনি নোটিশে চারটি বিষয়ে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে নিষ্পত্তি চাওয়া হয়েছে -
১. অতি সত্ত্বর ইউটিউবসহ অন্যান্য প্লাটফর্ম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অসত্য ও মনগড়া প্রতিবেদনটি সরিয়ে ফেলতে ও সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
২. ভুল ও অসত্য এবং মানহানিকর তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদনের জন্য ৭১ টেলিভিশনকে নি:শর্ত ক্ষমা প্রার্থনাসহ তাদের টিভি চ্যানেলে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রচার করতে বলা হয়েছে।
৩. ৭১ টেলিভিশনকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তাদের এই মনগড়া, ভুল প্রতিবেদনের জন্য নি:শর্ত ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে।
৪. সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক সাইফুল রূপককে ভবিষ্যতে এমন অসত্য ও মনগড়া প্রতিবেদন না করার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে মর্মে মুশফিকুর রহিমের নিকট লিখিত ভাবে ৭১ টেলিভিশন কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে ।
প্রতিবেদন সাংবাদিকতার নীতি-আদর্শ মেনে করা হয়নি উল্লেখ করে একাত্তর টিভির মত সুপরিচিত চ্যানেলে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ অপ্রত্যাশিত বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। নোটিশে উক্ত প্রতিবেদন দন্ডবিধির ৫০০ ধারায় মানহানির অপরাধ ও সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ এর ২৫(১)(ক), ২৫(২) এবং ২৯ ধারায় সাইবার বুলিং এর অপরাধ উল্লেখ করে প্রতিকার না পেলে ফৌজদারি ও ক্ষতিপূরন আদায়ের দেওয়ানী আদালতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।