শান্তর দিনে চালকের আসনে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ চালকের আসনে কি না, তা নিয়ে সংশয়টা এখন আর নেই। তবে সকালের সেশনটা ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিতই দিচ্ছিল বৈকি! নিউজিল্যান্ডের লেজও যে পীড়া দিচ্ছিল বেশ! তবে সেসব সামলেই বাংলাদেশ এখন চলে এসেছে চালকের আসনে। তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে যোগ হয়েছে ২০৫ রানের লিড। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত অপরাজিত আছেন ১০৪ আর মুশফিকুর রহিম অপরাজিত আছেন ৪৩ রানে।
সব ছাপিয়ে দিনটা অবশ্য শান্তরই। দিনের শুরুর কথাটা ভাবুন। একটু আগ্রাসী অধিনায়কত্ব হলে হয়তো বাংলাদেশ লিডও পেয়ে যেতে পারত নিউজিল্যান্ড ইনিংস শেষেই। সেটা হয়নি। সাজানো রক্ষণাত্মক ফিল্ডিং সুযোগ করে দিয়েছিল কাইল জেমিসন আর টিম সাউদিকে থিতু হওয়ার। যার ফল নবম উইকেটে তাদের ৫১ রানের জুটি আর নিউজিল্যান্ডের ৭ রানের লিড। এরপর বাংলাদেশ যে ম্যাচে ফিরল, তাও শান্তর কল্যাণেই। মুমিনুল হককে ফেরালেন আক্রমণে, সেই তিনি এনে দিলেন দুই উইকেট। নিউজিল্যান্ড শেষ ৩১৭ রান তুলতে।
বাংলাদেশ ইনিংসের শুরুতে দুটো উইকেট দলকে ভড়কে দিয়েছিল খানিকটা। এরপরই শান্ত চলে এলেন সামনে। ভুল অবশ্য এখানেও করলেন। মুমিনুল হকের সঙ্গে যখন উইকেটে জমে গেছে তার জুটি, তখনই তার এক ভুলে রান আউট হতে হলো মুমিনুলকে। মিড অনে ঠেলে দিয়ে মুমিনুল চাইছিলেন একটা রান বের করতে, বলের দিকে তাকিয়ে থেকে সে 'কলটা' ধরতেই পারেননি শান্ত, যখন পারলেন, ততক্ষণে বল ফিল্ডারের হাতে, আর মুমিনুল উইকেটের মাঝে। মুমিনুল ফিরলেন ফিফটির একটু আগে।
এরপর থেকে আর কোনোপ্রকার ভুল নয়। শান্ত যেন সব ভুল শুধরে নেবার পণ নিয়েই দাঁড়িয়েছিলেন। প্রথম ইনিংসে উইকেটটা স্রেফ ছুঁড়ে দিয়ে এসেছিলেন। আজ তা করলেন না। একেবারে নিখুঁত এক ইনিংস খেললেন তৃতীয় দিনের ট্রিকি উইকেটে। মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে আর কোনো সুযোগই দিলেন না নিউজিল্যান্ডকে।
গড়ে ফেললেন ইতিহাসও। প্রথম বাংলাদেশি অধিনায়ক হিসেবে অভিষেকেই সেঞ্চুরির কীর্তি গড়লেন। পেছনে ফেললেন গ্রস আইলেটে ২০০৯ সালে সাকিব আল হাসানের করা অপরাজিত ৯৬ রানকে।
তার কাজটা এখনো শেষ হয়নি। ইনিংসটা শেষ হয়নি এখনো। তিনি অপরাজিত আছেন ১০৪ রান করে। কাল যে কাজটা পুরো করে তবেই ফিরতে চাইবেন সাজঘরে তা নিশ্চিত।