বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাকে দৌড়ালেন শান্ত-মুশফিকরা 

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাকে দৌড়ালেন শান্ত-মুশফিকরা 

সবশেষ শ্রীলঙ্কা সিরিজের পর আন্তর্জাতিক বিরতি কাটাচ্ছেন বাংলাদেশের জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। অবশ্য এর মধ্যে বেশিরভাগই খেলেছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে। আগামী মাসের শুরুতেই ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে সিরিজ দিয়ে ঠিক এক মাস পর আন্তর্জাতিক দায়িত্বে ফিরবেন শান্ত-মিরাজরা। দলটির সঙ্গে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হবে ৩ মে। 

সিরিজটি মাথায় রেখে আজ (শনিবার) থেকে শুরু হয়েছে ক্রিকেটারদের ফিটনেস টেস্ট। সেখানে অংশ নেবেন সিরিজের জন্য বিবেচনায় থাকা ৩৫ জন ক্রিকেটার। ফিটনেস টেস্টের শুরুটা হলো বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাকে ১৬০০ মিটার দৌড়ের মধ্য দিয়ে। ভোর ৬টায় সেখানে পৌঁছে ৪০০ মিটারের এই ট্র্যাকে মোট চারটি চক্কর মেরে দৌড় শেষ করেছেন ক্রিকেটাররা। তবে এই পর্বে উপস্থিত ছিলেন না তামিম, সাকিব, তাসকিন, সৌম্যর মতো তারকারা। সাকিব আছেন দেশের বাইরে, তাসকিন ও সৌম্য চোটের কারণে নেননি ঝুঁকি। 

১৬০০ মিটারের দৌড় শেষে ৪০ মিটারের স্প্রিন্টেও অংশ নেন সবাই। এরপর মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে গিয়ে জিম সেশন দিয়ে শেষ হবে আজকের ফিটনেস ট্রেনিং। ট্রেনিং এই পর্বগুলো পর্যবেক্ষণ করছেন দলের নতুন ট্রেইনার নাথান কেলি। ফিটনেস টেস্টগুলো সাধারণত হয়ে থাকে মিরপুরেই। তবে বিশ্বকাপ সামনে রেখে এবার ভিন্নধর্মী সব উদ্যোগ নিয়েছে বিসিবি। 

এই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামটি তরুণদের কাছে একদম নতুন পদচারণা হলেও মুশফিক-মাহমুদউল্লাহদের কাছে এটি একটি স্মৃতিমাখা মাঠ। কেননা এখনকার জাতীয় দলের মধ্যে কেবল মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহই আছেন যারা এই মাঠে ক্রিকেট খেলেছেন। 

যেই মাঠে ক্রিকেট এখন কেবলই অতীত সেখানে ক্রিকেটকে মনে করতে হলে যেতে হবে ১৮ বছর আগে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম থেকে বিদায় নিয়েছে ২০০৫ সালের ৩১ জানুয়ারি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে। কাকতালীয় হলেও সত্যি, সেই জিম্বাবুয়ে সিরিজকে সামনে রেখেই ফিটনেস পর্ব হিসেবে আরও একবার এই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের প্রাঙ্গণে হাজির হলেন ক্রিকেটাররা। 

সাবেক ক্রিকেটারদের বড় অংশই এই স্টেডিয়ামকে এখনো যেন লালন করছেন মনে। তাদের মধ্যে একজন দেশের ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ইনচার্জ শাহরিয়ার নাফীস। এদিন সকালে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে জানালেন ৩০ বছর আগে প্রথম এই মাঠে আসার স্মৃতি। কার্যত বর্তমানের জাতীয় দলের অনেকের তখন জন্মই হয়নি। নাফীস বলেন, ‘১৯৯৪ সালে প্রথম এই মাঠে আসি। অনেক আইকন ক্রিকেটাররা এখানে খেলতেন। তাদের দেখতেই মাঠে আসতাম। ২০০৪ সালে আমার ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস এ মাঠে খেলেছি, ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলাম। তখন হয়তো বুঝিনি। তবে এখন বুঝি সেই ইনিংসটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের প্রত্যেকটা ইঞ্চি ইতিহাস বহন করে। আমাদের প্রজন্মের খেলোয়াড়, শুধু ক্রিকেটার নয়, অন্য খেলার খেলোয়াড়েরাও এই একই কথা বলবে।’

সাবেক ক্রিকেটারদের তালিকার আরেক নাফিস, নাফিস ইকবাল, বর্তমানে জাতীয় দলের ম্যানেজার। কিছুটা স্মৃতিচারণ করলেন তিনিও। তার মতে, স্টেডিয়ামের অনেক কিছুই বদলে গেছে। অবশ্য সেটিই স্বাভাবিক। 

ফিটনেস নিয়ে সবচেয়ে সিরিয়াস থাকেন যিনি, সেই নাম অনায়াসেই মুশফিকুর রহিমের। স্মৃতিচারণের মধ্যে কিছুটা খুনসুটিতে মাতলেন মিঃ ডিপেন্ডেবল খ্যাত এই ক্রিকেটার। ১৬০০ মিটারের দৌড় শুরুর আগে করে বসলেন দাবী। যেহেতু অ্যাথেলেটিক্স ট্র্যাকে রানিং, সেহেতু তার চাই পুরষ্কার, অ্যাথলেটিকসের মতো, সোনা, রুপা, ব্রোঞ্জের ম্যাডেল। সেখানে প্রথম পুরষ্কার সোনা জিতবেন বলেও দাবী করেন মুশফিক।

সম্পর্কিত খবর