সিলস ঝড়ে সর্বনাশ বাংলাদেশের
বোলিং স্পেলটা মনে রাখুন। ক্রিকেট আলোচনায় কাজে দেবে! ১৫.৫-১০-৫-৪! বোলারের নাম জয়ডেন সিলস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ফাস্ট বোলারের এই বোলিং কীর্তিতেই জ্যামাইকা টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে গেছে মাত্র ১৬৪ রানে। জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে স্বাগতিকরা তুলেছে ১ উইকেটে ৭০ রান। বাংলাদেশের স্কোর টপকানো এবং বড় লিড নেওয়ার অপেক্ষায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
অ্যান্টিগার মতো জ্যামাইকায়ও বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের করুণ দশা কাটেনি। এবার শুরুটা ভালো হলো। কিন্তু মাঝের এবং শেষের ব্যাটিংয়ে শনির দশা লেগেই রইলো। আর তাই ৮৩ রানে ২ উইকেটের বাংলাদেশের ১৬৪ রানে শেষ।
মুমিনুলের শূন্য রানে বিদায়ের পর ধাক্কা ভালোভাবে সামাল দিচ্ছিলেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। বেশ কয়েকবার জীবন পেয়েও যেভাবে সামনে বাড়ছিলেন তাকে মনে হচ্ছিল আরেকটি বড় ইনিংস আসছে তার ব্যাটে। কিন্তু সাদমান ফিরলেন ১৩৭ বলে ৬৪ রান করে। দেখতে না দেখতে বাংলাদেশের ইনিংসে বড় ধসের শুরু। স্কোরবোর্ডে রান তিন অংকে যাবার আগেই ড্রেসিংরুমে ফিরে এলেন শুরুর ৬ ব্যাটার। ৮৩ রানে ২ উইকেটের বাংলাদেশ হঠাৎ ৯৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা। মাত্র ৩৪ বলের ব্যবধানে এই সময়ে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এই ধাক্কা সামাল দেওয়ার দায়িত্ব পড়ে অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজের কাঁধে। তাইজুল ইসলামকে সঙ্গী করে লড়াই চালান মিরাজ। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের চার তেজি পেস বোলার যেভাবে তেড়েফুঁড়ে বোলিং করেন তাতে টিকেনি তাদের প্রতিরোধ। তাইজুল সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন ৬৬ বলে ১৬ রান করে। আর মিরাজের প্রাইজ উইকেট তুলে নিলেন জয়ডেন সীলস তার শর্ট বলে। হুক করেছিলেন মিরাজ। কিন্তু ফাইন লেগে দাড়ানো ফিল্ডারের হাতে পড়ে তার ক্যাচ। ৭৫ বলে ৩৬ রান করে শেষ হয় মিরাজের প্রতিরোধ। লেজের সারিতে তাসকিন, হাসান মাহমুদ ব্যাট হাতে তেমনকিছু করতে পারেননি।
সিলস একপ্রান্ত থেকে বল হাতে গতির যে ঝড় তুলেন তাতেই বাংলাদেশের ব্যাটাররা যেন রান করতেই ভুলে যায়! টানা মেডেন পান সীলস। ১৬ ওভারের মধ্যে তার ১০ ওভারই ছিল মেডেন। ৪ উইকেট শিকারে যে মাত্র ৫ রান খরচ করেছেন তিনি সেই রান এসেছে মুলত ব্যাটের খোঁচায়!
ওয়েস্ট ইন্ডিজ জবাবি ইনিংসে ওপেনার মিকেল লুইসকে হারায়। নাহিদ রানার শুরুর স্পেলটা হলো দুর্দান্ত। প্রায় প্রতিটি বলে তিনি ১৫০ কিলোমিটার বেগে বল করলেন। লুইসকে বাধ্য করলেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে। ২৫ রানে প্রথম উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজ এরপর দৃঢ় ভঙ্গিতে সামনে বাড়লো। অধিনায়ক কার্লোস ব্রাথওয়েট ধৈর্যশীল কায়দায় ব্যাট করলেন। ৩৩ রান নিয়ে খেলছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক। রিভিউ’র কল্যানে দু’দফা রক্ষা পান তিনি। যেভাবে খেলছেন তাকে মনে হচ্ছে ১৩ নম্বর টেস্ট সেঞ্চুরি তাকে ডাকছে!