ওয়ার্নারের চোয়াল শক্ত, জনসনের মুখ বন্ধ
সেঞ্চুরি করলেই একটা বড়সড় লাফ দেন ডেভিড ওয়ার্নার। মুষ্টিবদ্ধ এক হাত, অন্য হাতে গ্ল্যাডিয়েটরের তরবারির মতো ব্যাট। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে পার্থ টেস্টের প্রথম দিনে সেঞ্চুরির পর শুধু লাফ দিয়েই ক্ষান্ত হননি ওয়ার্নার। ট্রেডমার্ক লাফের পর পার্থ স্টেডিয়ামের রেডিও বক্সগুলোর দিকে তাকিয়ে ঠোঁটের সামনে আঙুল এনে কোনো একজনকে যেন চুপ থাকতে ইশারা করলেন। সেই কোনো একজন কে তা বুঝতে নিশ্চয়ই আপনার খুব একটা কষ্ট করতে হবে না। ওয়ার্নারেরই সাবেক সতীর্থ মিচেল জনসন। পার্থের রেডিও বক্সে বসে খেলার ধারাবিবরণী দিচ্ছিলেন তিনি।
ওয়ার্নার কেন জনসনকে চুপ থাকার ইশারা করবেন, ক্রিকেট সম্পর্কে টুকটাক খোঁজখবর রাখলে সেটাও নিশ্চিত আপনাকে বলে দিতে হবে না। ওয়ার্নারের বিদায়ী টেস্ট শুরু কয়েকদিন আগে তাকে নিয়ে এক্তি বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন জনসন। বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারির কেন্দ্রে থাকা ওয়ার্নারের বিদায়ী সিরিজের জন্য এত আয়োজন কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জনসন। বর্তমান ও সাবেক সতীর্থরা ওয়ার্নারের পক্ষে দাঁড়ালেও ওয়ার্নার নিজের মুখে কোনো পাল্টা জবাব দেননি।
বৃহস্পতিবার পার্থে ব্যাট হাতে ১৬৪ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলে সে জবাবটা দিয়ে দিলেন ওয়ার্নার। তাই তো সেঞ্চুরির পর ট্রেডমার্ক লাফের সঙ্গে ওই বাড়তি সংযোজন। ম্যাচের পর ওয়ার্নার নিজেও সেটাই জানালেন, ওটা কি ছিল তা তো আপনারা দেখেছেনই, ওটা ছিল চুপ থাকার ইশারা।
তবে চুপ থাকার সে ইশারা কি শুধুই জনসনের উদ্দেশেই ছিল? ওয়ার্নারের টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়া নিয়েও তো কম কথা হয়নি। এমনকি পাকিস্তানের বিপক্ষে পার্থ টেস্টের দলে তার সুযোগ পাওয়াটাকেও যেন একজন বিদায়ী ক্রিকেটের প্রতি দয়াদাক্ষিণ্য হিসেবেই দেখা হচ্ছিল। ওয়ার্নার ইঙ্গিত দিয়েছেন সিডনিতে তথা নিজের ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ টেস্ট দিয়েই বিদায় নিতে চান তিনি।
অথচ পার্থ টেস্ট শুরুর আগেই সবমহল থেকে ওয়ার্নারকে পরিস্কার বার্তা দেয়া হচ্ছিল, পারফরম্যান্স দিয়েই সিডনি টেস্টের দলে জায়গা করতে হবে। পার্থে রান না পেলে এটাই হতে পারে অজিদের হয়ে তার শেষ টেস্ট। সতীর্থের কটু কথা আর টিম ম্যানেজমেন্টর এমন সতর্কবার্তা মাথায় নিয়ে পার্থে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন। আর বাকিটা তো ইতিহাস।
২১১ বলে খেললেন ১৬৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। তার ব্যাটে চড়ে পার্থ টেস্টের প্রথম দিনটা অস্ট্রেলিয়ার হয়ে রইল। ৫ উইকেটে ৩৪৬ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করবে অজিরা। আর সিডনি টেস্টের দলে জায়গা প্রায় নিশ্চিত করে ফেলা ওয়ার্নারও নিন্দুকদের মুখ বন্ধ করে একটা শান্তির ঘুম দিতে পারবেন।