বিশ্বকাপ দলে না থাকার কারণ জানালেন তামিম
স্লামালাইকুম সবাইকে।
গলায় ইনফেকশন হয়েছে, ক্লিয়ারলি কথা বলতে পারছি না।
স্ট্যাটাস দেখেই বুঝতে পেরেছেন, শেষ কয়েক দিনে যা যা লেখা হয়েছে আর আসলে যা ঘটেছে—কমপ্লিটলি ডিফারেন্ট। যা যা ঘটেছে, পুরো জিনিসটাই স্টেপ বাই স্টেপ জানাই। কারণ এটি আমার যারা ফ্যান এবং বাংলাদেশের ক্রিকেট লাভার তাদের জানা উচিত।
বেসিক্যালি সবাই জানেন, আমি অবসরে যাই, অবসরে যাওয়ার কারণ ছিল। এরপর প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে ফিরে আসি। এরপর যে দুই মাস আমি প্রচণ্ড পরিমাণ কষ্ট করি নিজেকে ফিট করার জন্য। আমি নিশ্চিত, যারা সম্পৃক্ত ছিল, ফিজিও থেকে শুরু করে। আমি নিশ্চিত সবাই একমত হবেন, এমন কোনো সেশন বা এক্সারসাইজ নেই যেটি তারা চেয়েছেন কিন্তু আমি করি নাই।
খেলা শুরু হওয়ার আগে যখন কাছাকাছি আসল, আমি মেন্টালি ওয়াজ নট হ্যাপি। নিজের লাইফের সঙ্গে রিলেট করলে বুঝতে পারবেন, এটা সহজ না। প্রথম ম্যাচে ৩০-৩৫ ওভার ফিল্ডিং করলাম, ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাইনি আনফরচুনেটলি। পরের ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ এল। আমার জন্য যেটা বেষ্ট পসিবল আউটকাম দরকার ছিল, আনফরচুনেটলি উই লস্ট দ্য গেম। তবে ওই সময় আমার দরকার ছিল কিছুটা রান করা, ব্যাটিংটা কেমন হচ্ছে ফিল করা। যেভাবে ব্যাটিং করেছি তাতে অনেক খুশি ছিলাম। আমি মাত্র ৪৪ রান করেছি, তবে আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম বড় কিছুর জন্য। তবে সেটি হয়নি দুর্ভাগ্যজনকভাবে। সে ম্যাচের পর আমি মানসিক দিক দিয়ে খুশি ছিলাম। যা শেষ ৪-৫ মাস হয়েছে, সেগুলো মাথায় অতটা ছিল না সেভাবে। খেলতে মুখিয়ে ছিলাম আবার, বিশ্বকাপ খেলতে মুখিয়ে ছিলাম।
স্বাভাবিকভাবেই এত দিন পর যখন ক্রিকেট খেলবেন, চোট থেকে সেরে উঠেছেন, ব্যথা অস্বস্তি থাকবেই। প্রথম ম্যাচের পরও ব্যথা অনুভব করেছি। যখন খেলা শেষ হলো, আমার অবস্থান ফিজিওকে বললাম যে আমি কেমন বোধ করছি। ঠিক ওই মুহূর্তে তিনজন নির্বাচক ড্রেসিংরুমে আসেন। একটা জিনিস ক্লিয়ার করতে চাই, আমি কোনো সময়, কোনো মুহূর্তে কাউকে কোনো সময় বলি নাই আমি ৫টা ম্যাচের বেশি খেলতে পারব না। আমি নিশ্চিত, গতকাল নান্নু ভাইও ক্লিয়ার করছে। এটা মিথ্যা কথা, ভুল কথা। আমি জানি না এটা মিডিয়ায় কীভাবে ফিড করা হয়েছে বা কে করেছে। এটা একেবারে ভুল। যেটা নির্বাচকদের বলেছিলাম, আমার শরীর এখন এমনই থাকবে। ব্যথা থাকবে। দল যখন নির্বাচন করবেন, এটা মাথায় রেখে করবেন। এটার কারণ আছে।
কারণ, আপনারা যদি কিছুদিন আগের কথা চিন্তা করেন, অধিনায়ক ছিলাম, যে ম্যাচের পর অবসর নেই, একটা কথা ছিল, ফিজিও ও কোচ মিলে কথা বলেছিলাম। তিনজন এগ্রি করেছিলাম যে আমার খেলা উচিত। এরপর আপনারা জানেন যে কেমন ধরনের কথা মিডিয়ায় বলা হয়েছে, ফিট না থাকলে খেলা উচিত না। অবাক লাগছে কারণ ওই রুমে সবাই এগ্রি করছিলাম। আমি আরেকটি বিতর্ক তৈরি করতে চাইনি। পুরোপুরি সৎ থেকে আমার তরফ থেকে নির্বাচকদের বলেছি, আপনারা মাথায় রেখে সিলেক্ট করিয়েন। এমন হতে পারে, ৯ ম্যাচ খেলি সমস্যা ছাড়া। বিশ্বকাপের ফিকশ্চার এমন ছিল, প্রতি ম্যাচের পরই ৩-৪ দিনের গ্যাপ আছে, প্রথম দুটি ম্যাচ ছাড়া।
যে কোনো সুস্থ মানুষের সাথেও হতে পারে, দুটি ম্যাচ খেলার পর ইনজুরড হলো, এরপর দেশে পাঠিয়ে দিলেন। রিপ্লেসমেন্ট নিতে পারেন। এ কারণে আমি এ জিনিসটা ক্লিয়ারলি বলি। বলার পর যখন হোটেলে যাই, আমাকে অ্যাসেস করে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কথাটা, যেটা ফিজিওর রিপোর্টে ছিল। এক্সাক্টলি যে কথাটা ছিল, আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করি। কেউ যদি চ্যালেঞ্জ করতে চায়, তারা মোস্ট ওয়েলকাম। পাবলিক ফোরামে বসেন, বলেন যে আমি ভুল করেছি।
ফিজিওর রিপোর্ট যেটা ছিল, আমার কন্ডিশনটা বলা হয়েছিল। প্রথম ম্যাচের পর এমন পেইন হয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচের পর এমন পেইন হয়েছে। আর আজকের দিন হিসাবে হি ইজ অ্যাভেইলেবল ফর সিলেকশন ফর দ্য টুয়েন্টি সিক্সথ (২৬ সেপ্টেম্বর) গেম। বাট মেডিকেল ডিপার্টমেন্ট মনে করে যদি আমি রেস্ট নিই, টুয়েন্টি সেভেনথ আমাদের ট্রাভেলিং ছিল, টুয়েন্টি এইটে আমাদের একটা প্র্যাকটিস গেম। তারপর এক-দুই তারিখে আরেকটি প্র্যাকটিস গেম। আমি যদি এখন রেস্ট নিই, আমি যদি দ্বিতীয় প্র্যাকটিস ম্যাচটা খেলি তাহলে পর্যাপ্ত সময় পাব। রিহ্যাবও হয়ে যাবে ওভারঅল ১০ সপ্তাহের রিহ্যাব হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে প্রথম ম্যাচটা খেলার জন্য খুব ভালো অবস্থায় থাকব।
কোনো জায়গায় বলা হয়নি পাঁচ ম্যাচ-দুই ম্যাচ, ইনজুরি, খেলতে পারব না এতকিছু। হ্যাঁ আমার শরীরে পেইন ছিল যেটা অস্বীকার করছি না। বেসিক্যালি এটা হয়েছে। তারপর যেটা ঘটেছে, আমার কাছে যেটা মনে হয় মিডিয়াতে যেটা আসতেছে ইনজুরি, পাঁচ ম্যাচ..আমার কাছে মনে হয় না বিশ্বকাপে না যাওয়ার পেছনে এটার বড় অবদান ছিল। কারণ আমি যেহেতু ইনজুরড হইনি এখনো, ব্যথা থাকতে পারে কিন্তু ইনজুরড হইনি এখনো।
তার দুই-একদিন পর আমাকে বোর্ডের টপ লেভেল থেকে একজন ফোন করলেন। উনি বেশ ইনভলভড আমাদের ক্রিকেটে। আমাকে হঠাৎ করে ফোন করে বললেন তুমি তো বিশ্বকাপে যাবা তোমাকে তো ম্যানেজ করে খেলতে হবে। তুমি এক কাজ করো তুমি প্রথম ম্যাচ খেলো না, আফগানিস্তানের সঙ্গে। আমি বললাম ভাই এটা এখনো ১২-১৩ দিনের কথা। আমি তো এর মধ্যে ভালো কন্ডিশনে থাকব। কী কারণে খেলব না? তখন বললেন আচ্ছা তুমি যদি খেলোও আমরা এমন একটা পরিকল্পনা করছি তুমি যদি খেলোও তাহলে নিচে ব্যাট করাব।
ন্যাচারালি ভাই একটা জিনিস মনে রাখতে হবে আমি কোন মাইন্ডসেট থেকে আসতেছিলাম। হঠাৎ করে একটা ভালো ইনিংস খেলেছি। আমি হ্যাপি ছিলাম। হঠাৎ করে এসব কথা আমার পক্ষে নেওয়া সম্ভব না। আমি ১৭ বছর ধরে এক পজিশনে ব্যাটিং করেছি। জীবনে কোনো দিন তিন-চারে ব্যাটিংই করিনি। এমন যদি হতো আমি তিনে ব্যাটিং করি, চারে ব্যাটিং করি তাহলে যদি ওপর নিচ করা হয় সেটা মানিয়ে নেওয়া যেত। কিন্তু আমার তিনে চারে পাঁচে ব্যাটিংয়ের অভিজ্ঞতা নেই।
আমি কথাগুলো ভালোভাবে নিইনি। উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিলাম। কারণ কথাগুলো পছন্দ হয়নি। মনে হচ্ছিল আমাকে জোর করে অনেক জায়গায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। দিস ইজ হোয়াট আই ফেল্ট। তখন আমি বললাম দেখেন, আপনারা একটা কাজ করেন যদি আপনাদের এমন চিন্তাধারা থাকে তাহলে আপনারা আমাকে পাঠায়েন না।
আমি এই নোংরামির মধ্যে থাকতে চাই না। প্রতিদিন আপনারা আমাকে একেকটা নতুন জিনিস ফেস করাবেন, আমি এই জিনিসগুলোয় থাকতে চাই না। তারপরও ফোনে উনার সঙ্গে আমার অনেক কথাবার্তা হয়। সেগুলো এই প্লাটফর্মে না বলাই ভালো। এটা আমার আর উনার মধ্যেই থাক। তারপরও বলেছি যদি এগুলো হয় আমাকে রাখিয়েন না। আমি এই নোংরামোর মধ্যে থাকতে পারব না।
সো ওভারঅল আমি ব্যক্তিগতভাবে যে জিনিসটা ফিল করেছি, মিডিয়াকে আই ডোন্ট নো আমি ঠিক বলছি কি বলছি না, কারণ আমাদের অনেকেরই অভ্যাস আছে বড় একটা জিনিসকে ঢাকার জন্য আরেকটা জিনিস ঠিক করা। সে পাঁচ ম্যাচ খেলবে তাকে ক্যামনে সিলেক্ট করব। অ্যাজ আই সেইড ইট ওয়াজ ফলস। এমন কোনো কথাই হয়নি। আমি নিশ্চিত সেদিন টিম সিলেক্টর ছিল, ফিজিও ছিল, ট্রেনার ছিল—সবাই ছিল। কী বলেছি সেটা আপনাদের সঙ্গেও ক্লিয়ার করেছি। বাট ওভারঅল আমার কাছে মনে হয় ইফ ইউ রিয়েলি ওয়ান্ট মি টু মেক মি মেন্টালি ফ্রি অ্যান্ড হ্যাপি। বিকজ আই অ্যাম কামিং আউট অব অ্যা ভেরি ব্যাড থ্রি-ফোর মান্থস। আমার জন্য খুব কঠিন ছিল তিন-চার মাস। হয়তো এই কথাই যদি আমাকে অন্যভাবে বলা হতো তাহলে হয়তো আমি বিষয়টি মেনে নিতাম।
কিন্তু হঠাৎ করে কেউ যদি ফোন করে বলে খেলিয়েন না, বা বলে যে আচ্ছা যদি খেলেনও আমাদের এমন আলোচনা হচ্ছে নিচে ব্যাটিং করাবে, আই অ্যাম নট টু শিউর যে এটা কতটুকু ফেয়ার। দিস ইজ হোয়াট এক্সাক্টলি হ্যাপেনড। এর চেয়ে বেশি কিছু আমার বলার নেই। আমি এতটুকুই বলব আমি নিজের তরফ থেকে যতটুকু ফিল করেছি, যেটা ঘটেছে সেটা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করলাম।
আমি উইশ করব যে ১৫ জন বিশ্বকাপে গিয়েছে, তারা যতটুকু সম্ভব বাংলাদেশের জন্য সাকসেস নিয়ে আসবে। আরও অনেক কিছুই ঘটেছে এটা আপনারা দেখেছেন আমি নিশ্চিত। একটা কাহিনী বিচ্ছিন্ন ঘটনা হতে পারে, দুটো কাহিনী ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। কিন্তু একজনের সঙ্গে তিন-চার মাসে যদি সাত-আটটা কাহিনী হয় তাহলে সেটা ইচ্ছাকৃত হয়।
আর একটা কথা আমাকে সবাই মনে রাখিয়েন। ভুলে যাইয়েন না।