মেসির পূর্ণতায় তৃপ্ত বিশ্বকাপ

মেসির পূর্ণতায় তৃপ্ত বিশ্বকাপ

ফিফার বর্ষসেরা। ইউরোপের সেরা। রেকর্ড আটটি ব্যালন ডি’অর। লা লিগায় সবচেয়ে বেশি গোল। আর্জেন্টিনার হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল। আঙ্গুলের কড়ায় গুনে আপনি শেষ করতে পারবেন না-একক এবং দলীয় কৃতিত্বে এতো বেশি ফুটবল ট্রফি জয় এবং ফুটবল মাঠে রেকর্ড গড়েছেন লিওনেল মেসি। কিন্তু সব ছাপিয়ে তার একটাই দুঃখ ছিল, এতোগুলো বিশ্বকাপ খেললাম। বিশ্বকাপে সেরা ফুটবলারও হলাম। দলকে ফাইনালেও তুললাম। কিন্তু বিশ্বকাপ ট্রফিটা উঁচিয়ে ধরা হলো না।

এই দুঃখটা মেসির ছিল ২০২২ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালের আগ পর্যন্ত। আর তাই এক সাক্ষাতকারে তিনিও বলেও দিয়েছিলেন, ‘বিশ্বকাপ ট্রফির বিনিময়ে আমি আমার জেতা বাকি সব ট্রফি দিয়ে দিবো!’
বিশ্বকাপ না জেতার একটা অপূর্ণতা ছিল তার।

সেই দুঃখ, অপূর্ণতা মেসির ঘুচে গেল ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বরের রাতে। এই রাতে লুসেইল আইকনিক স্টেডিয়ামে হাজার হাজার রঙিন টুকরো কনফেত্তির আলোয় মেসির হাতে বিশ্বকাপ এবং তার আবেগ দেখে মনে হলো-ট্রফি নয়, যেন পুরো বিশ্ব তার মুঠোয়। আলোয় স্নাত চারিধার। সেই রঙিন আলোয় আর্জেন্টিনার পাগল পারা উল্লাস। মেসির অবিস্মরণীয় জাদুকরী রাত। নিজের পঞ্চম বিশ্বকাপে এসে বিশ্বকাপ ট্রফি ছোঁয়ার স্বপ্ন পূরণ হল মেসির।

বিশ্বকাপের সেই রাতের আর্জেন্টিনা বনাম ফ্রান্সের ফাইনাল আইকনিক অর্থে মেসি বনাম এমবাপেও হয়ে রইলো! মেসির দুই গোল, এমবাপের তিন। ব্যক্তিগত এই লড়াইয়ে এমবাপে হয়তো জিতলেন। কিন্তু বিশ্বকাপ যে শেষপর্যন্ত উঠলো মেসির হাতেই! এই বিশ্বকাপের সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য সম্ভবত সেটাই! বিশ্বসেরা ফুটবলারের হাতে উঠলো বিশ্বকাপ। সেই আনন্দের সবটুকুতে ঝরছে একটা উপসংহার-পূর্ণতায় পরিসমাপ্তি!

কাতার বিশ্বকাপের ফাইনাল আবেগ-উত্তেজনা, ফুটবল আনন্দ-বেদনা, ম্যাচের বাঁক বদল, ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই-সবকিছুকেই ছাড়িয়ে গেছে। এই ফাইনাল শুধু মাঠের খেলোয়াড়দের নয়, গ্যালারির দর্শক এমনকি টেলিভিশন সেটের সামনে বসা ফুটবলপ্রেমিদের চোখে জল এনেছে। আনন্দে অনেকে হেসেছেন। কেঁদেছেন সুখের হাসিতে। কখনো আর্জেন্টিনা কখনো ফ্রান্স-উভয় দলের নিক্তিতে ঝুলেছে বিশ্বকাপ পুরো ১২০ মিনিট।

তাতেও সমাধান আসেনি। টাইব্রেকারে হলো শ্রেষ্ঠত্বের ফয়সালা। ৩৬ বছর পর আর্জেন্টিনার ঘরে ফের গেল বিশ্বকাপ। ১৯৮৬ সালে মেক্সিকো বিশ্বকাপ থেকে ট্রফি নিয়ে ঘরে ফিরেছিলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। সেসময় মেসির জন্মও হয়নি। ‘৮৬’র পর প্রতিটি বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা মানেই আর..জে..তে..না ঠাট্টা মস্করার শিকার। ম্যারাডোনা যুগ শেষে আর্জেন্টিনা ফের স্বপ্ন সাজায় লিওনেল মেসিকে ঘিরে। ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে মেসির অভিষেক। তবে বেশিরভাগ সময় ডাগআউটে বসে সেই বিশ্বকাপে দলের বিদায় দেখেন মেসি। ২০১০ সালে মেসি অধিনায়ক, ম্যারাডোনা কোচ। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সেই বিশ্বকাপে ‘মেসি-ডোনার’ এই জুটিতে হাইপ উঠে-বিশ্বকাপ আসছে আর্জেন্টিনার ঘরে। কিন্তু আর্জেন্টিনার সেই স্বপ্নও অপূর্ণ রইলো।

মেসি ২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপে নতুন করে কোমর বেঁধে নামলেন। লড়লেন। খেললেন। প্রায় একাই পারফরমেন্স দেখিয়ে দলকে ফাইনালেও তুলে আনলেন। কিন্তু ফাইনালে শেষ বাধা টপকাতে পারলো না আর্জেন্টিনা। সে দফায় রানার্স আপ হয়েই থাকতে হলো মেসি ও আর্জেন্টিনাকে। হাতের এতো কাছে এসেও বিশ্বকাপ চলে গেল অনেকদূরে! হতাশ হয়েই পড়ে রইলো বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন।

২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে তো আরো শোচনীয় অবস্থা। কোনমতে টেনেটুনে দ্বিতীয় পর্বে এলো আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয় রাউন্ডে ফ্রান্সে গতিময় ফুটবলের কাছে হেরে বিদায়।
২০২২ কাতার বিশ্বকাপের শুরুতে আর্জেন্টিনা ফেভারিটের তালিকায় থাকলেও হট ফেভারিট ছিলো ব্রাজিল। আর আর্জেন্টিনা প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের কাছে হারল ২-১ গোলে। কিন্তু সেই হারই যেন বদলে দিলো আর্জেন্টিনাকে। তেড়েফুঁড়ে উঠলো পুরো দল। পরের প্রতিটি ম্যাচেই আর্জেন্টিনা সাফল্যের সিঁড়িকে ক্রমশ নতুন উচ্চতায় তুললো। প্রতি ম্যাচেই স্বপ্ন জাগালো বিশ্বকাপ জয়ের। নকআউট রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস ও ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে এলো। ফাইনালে প্রতিপক্ষ ফ্রান্স। এই ফ্রান্স গেল বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই আর্জেন্টিনাকে বিদায় করে দিয়েছিল। চার বছর পুরানো একটা হিসেব চুকানো বাকি ছিল মেসির।

দোহার লুসেইল স্টেডিয়ামে রবিবারের ফাইনাল ঠিক যেভাবে শুরুটা চেয়েছিল আর্জেন্টিনা, তাই পেলো যেন। কিকঅফের সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁপাল ফ্রান্সের সীমান্তে। বুঝিয়ে দিলো তারা গোলক্ষিদে নিয়েই নেমেছে তারা। সেই ক্ষিদের নাম-ফাইনাল জেতা। বিশ্বকাপ নিয়ে বাড়ি ফেরা। ফাইনালে গোলপোস্টে প্রথম শট নেয় আর্জেন্টিনাই। পাঁচ মিনিটের সময় ডি বক্সের কোনা থেকে ম্যাক অ্যালিস্টার জোরালো শট নিলেন। ফ্রান্সের ভাগ্য ভালো বল সোজা গোলকিপারের হাতে গেল।

শুরুর অর্ধে প্রায় পুরোটা জুড়েই ফ্রান্স কেবল আক্রমণ ঠেকিয়ে যাওয়া ফুটবল খেললো। মাঝমাঠে কি তাদের কেউ ছিলো? ম্যাচের আগে বলাবলি হচ্ছিল ফাইনাল হবে এমবাপে বনাম মেসির। কিন্তু শুরুর ২০ মিনিটে বোঝাই গেল না এমবাপে একাদশে আছেন কিনা? স্ট্রাইকার অলিভার জিরুদ খামোকা শুধু দৌড়াদৌড়ি করলেন। ওসমান ডেম্বেলে আর্জেন্টিনাকে পেনাল্টি উপহার দেওয়া ছাড়া ফাইনালে আর কিছুই যে করতে পারলেন না! এই দুজনের চরম বিরক্তিকর খেলা দেখে ফ্রান্স কোচ বাধ্য হলেন মাত্র ৪১ মিনিটের সময় তাদের মাঠ থেকে তুলে নিতে। চরম নিষ্প্রভ ও নেতিয়ে যাওয়া ফুটবল খেললো এই সময়-জুড়ে ফ্রান্স। ফাইনালের আগে ফ্রান্সের কয়েকজন খেলোয়াড় ফ্লু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ফাইনালের শুরুর অর্ধ দেখে মনে হলো গোটা ফ্রান্সই বোধহয় ‘নির্জীব ভাইরাসে’ আক্রান্ত!

আর্জেন্টিনা যে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলছিল তাতে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল- গোল আসছে। ২৩ মিনিটের সময় ডি মারিয়াকে ডি বক্সে ফেলে দিয়ে ওসমান ডেম্বেলে আর্জেন্টিনার সেই কাজটা আরো সহজ করে দিলেন। মেসির পেনাল্টি শট ঠেকাতে উল্টো দিকে ঝাঁপ দিলেন লরিস, বল জালে..(১-০)। গে..ও..ল চিৎকারে পুরো লুসেইল স্টেডিয়াম যেন আনন্দে ফেটে পড়লো। পুরো স্টেডিয়ামকে তখন মনে হচ্ছিল রোমান কলোসিয়াম! অ্যাম্পিথিয়েটার! যুদ্ধক্ষেত্র! যে যুদ্ধে আর্জেন্টিনা তেড়েফুঁড়ে আক্রমণ করছে আর বেচারা ভঙিতে মুখ লুকাচ্ছে ফ্রান্স!

ম্যাচের ৩৬ মিনিটের সময় আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় গোলকে নিশ্চিতভাবে আপনি এই বিশ্বকাপের সেরা টিমগোলের মর্যাদা দিতে পারেন। বর্ণনাটা ঠিক এমন। সেন্টার থেকে মেসি বলটা ফ্লিক করলেন। ডান দিকে দৌড়ে হুলিয়ান আলভারেজ সেই বল ধরে সামনে এগিয়ে যাওয়া অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের দিকে বাড়ান। অ্যালিস্টার সেই বলে বামদিকের বক্সে ডি মারিয়ার দিকে পাস দিলেন। ডি মারিয়ার সামনে তখন কোন ডিফেন্ডার নেই। উপায় না দেখে পোস্ট ছেড়ে সামনে বাড়লেন গোলকিপার লরিস। ডি মারিয়া চলন্ত বলে নিচু শট নিয়ে বল জালে জড়িয়ে দিলেন.. (২-০)। বিউটিফুল টিমগোল! পাসিং ফুটবলের সৌন্দর্য একেই বলে। দুর্দান্ত দলীয় সংহতি। স্বার্থহীন টিমগোলের অনবদ্য উদাহরণ হয়ে থাকবে ডি মারিয়ার এই গোল।

ম্যাচে আর্জেন্টিনার লিড ২-০ গোলে। গোটা স্টেডিয়াম জুড়ে তখন ভামোস আর্জেন্টিনা, ভামোস আর্জেন্টিনা-র সেই উন্মাদনা জাগানো সুর। ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জয়ের অপেক্ষা ফুরানোর গল্পের সেই তো শুরু। গোলের পর আনন্দে এবং বিশ্বকাপে হাত ছোঁয়ানোর সম্ভাব্য আবেগে ডি মারিয়া চোখে জল। এমন আনন্দাশ্রুর জন্য অনেক লম্বা সময় ধরে অপেক্ষায় ছিলো আর্জেন্টিনা। তবে তখনো যে ফাইনালের অনেক বাকি। এমবাপের ‘খেল’ যে তখনো শুরুই হয়নি। ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকা ফ্রান্সকে ম্যাচে ফেরালেন এমবাপে। ৮০ মিনিটের সময় পেনাল্টিতে প্রথম গোল। পরের মিনিটেই তার ডানপায়ের গোলার মতো শটে ম্যাচে সমতা। আলোকিত হয়ে থাকা আর্জেন্টিনা আকস্মিক এই দুই গোলে যেন অন্ধকারে!

২-২ গোলে ড্র থাকা ম্যাচ গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। তবে এই বিশ্বকাপ যেন লিখেই রেখেছিল এটা আর কারো নয়, হবে শুধু এবং শুধুই মেসির। আর তাই ফাইনালে জয়-পরাজয়ের পার্থক্য গড়ে দেওয়ার গোলটা এলো যেন মেসির পায়েই! অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ফাইনালের ১০৮ মিনিটের সময় পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে গোল পায় আর্জেন্টিনা। ফরাসি গোলকিপার লরিসের হাতে লেগে বলটা বাউন্স হলো। ফিরতি বলে গোল করলেন মেসি (৩-২)। ম্যাচ শেষ হতে তখন বাকি আর মাত্র মিনিট পাঁচ। ঠিক তখনই আবার নাটক! মন্টিয়েল হ্যান্ডবল করে বসলেন। তাও আবার বক্সে! ফ্রান্স পেল পেনাল্টি। স্পট থেকে কিক করে আরেকবার ফ্রান্সকে ম্যাচে ফেরালেন এমবাপে।
নির্ধারিত ৯০ মিনিট এবং অতিরিক্ত ৩০ মিনিট-এই দুই পর্বেই আর্জেন্টিনা এগিয়ে থেকে বিশ্বকাপ জয়ের দারুণ সুযোগ তৈরি করলো। কিন্তু দু’বারই ঠিকই সমতা আনলো ফ্রান্স। ফ্রান্সের হয়ে এই ফাইনালে আর্জেন্টিনার জালে ৩ গোলের সবগুলোই এমবাপের! আর ফ্রান্সের জালে আর্জেন্টিনার তিন গোলের দুটোর মালিক মেসি।

টাইব্রেকারে গড়ালো ফাইনাল। এই পর্বে ফ্রান্স গোল করার চেয়ে মিস করলো বেশি। সেই অঙ্কে আর্জেন্টিনা জিতলো ৪-২ ব্যবধানে। এবং তাতেই বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ।
অতিরিক্ত সময়ে মন্টিয়েলের হ্যান্ডবলের কারণে ফ্রান্স পেনাল্টি পায়। স্পট কিক থেকে এমবাপে গোল করেন। হ্যাটট্রিক করলেন। তাতেই ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মতো সমতা ফিরেছিল। মন্টিয়েলের সেই হ্যান্ডবলের জন্যই তো ম্যাচ গেল টাইব্রেকারে। সেই মন্টিয়েলের টাইব্রেকার শটেই ফাইনালের ভাগ্য নির্ধারিত হলো। তার শট জালে জড়াতেই বিশ্বকাপে লেখা হয়ে গেল আর্জেন্টিনার নাম। মন্টিয়েল এখন সারাজীবন বলতে পারবেন-আমার গোলে বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা।

মেসি এগিয়ে দিচ্ছেন আর্জেন্টিনাকে। এমবাপে সমতায় ফেরাচ্ছেন ফ্রান্সকে। ফাইনালের শুরুর ৯০ মিনিট ধরে চললো এই সমতার লড়াই। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও সেই একই দৃশ্য। মেসির গোলে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার একহাত। খানিকবাদে আবারো এমবাপের গোলে ফ্রান্স বিশ্বকাপের সমান দাবিদার! ১২০ মিনিটের স্নায়ুক্ষয়ী এই লড়াইয়ে কেউ জিতলো না। না আর্জেন্টিনা, না ফ্রান্স! না মেসি, না এমবাপে! অথচ গোল হলো সবশুদ্ধ ছয়টা। ফ্রান্সের জালে তিনটা। যার দুটোই মেসির। আর্জেন্টিনার পোস্ট কাঁপলো তিন গোলে। যার সবগুলোই এমবাপের শটে! আর্জেন্টিনা ৩, ফ্রান্স ৩। দলীয় লড়াইয়ে মধ্যে একক কৃতিত্ব, ক্যারিশমার প্রর্দশনীও চললো বেশ। আর্জেন্টিনা বনাম ফ্রান্সের ফাইনাল আইকনিক অর্থে মেসি এমবাপের দ্বৈরথও হয়ে গেল! মেসির দুই গোল, এমবাপের হ্যাটট্রিক। টুর্নামেন্টে মেসির চেয়ে বেশি গোলও করলেন এমবাপে। সবমিলিয়ে বিশ্বকাপে মেসির গোল সাতটি। এমবাপের আট। ব্যক্তিগত গোলের লড়াইয়ে এমবাপে হয়তো জিতলেন। কিন্তু বিশ্বকাপ শেষপর্যন্ত মেসির হাতেই শোভা পেল! কাতার বিশ্বকাপের সবচেয়ে সুন্দর এবং আইকনিক দৃশ্য যে ওটাই!
পূর্ণতায় পরিসমাপ্তি, অবশেষ!

সম্পর্কিত খবর