সাকিবের ইচ্ছেপূরণেই নাফিস ইকবালকে সরিয়ে দিয়েছে বিসিবি

সাকিবের ইচ্ছেপূরণেই নাফিস ইকবালকে সরিয়ে দিয়েছে বিসিবি

টি- স্পোর্টসের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে অনেক কিছুই বলেছেন সাকিব আল হাসান। তামিম ইকবাল ও তার ভাই নাফিস ইকবালের বিরুদ্ধে একগাদা ক্ষোভও উগরে দিয়েছেন তিনি। পুরো সাক্ষাৎকারে যথারীতি স্মার্ট ভঙ্গিতে হাসিখুশি মেজাজে উত্তর দিয়েছেন সাকিব। তবে এই সাক্ষাৎকারে সাকিব যা বলেছেন তার সবটুকু আবার সঠিক বলেননি। সত্য বলেননি।

তামিম ইকবালের বড় ভাই নাফিস ইকবালের বিষয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক যা বলেছেন তা মোটেও সঠিক তথ্য নয়। সত্য আড়াল করে সাকিব একতরফাভাবে নাফিস ইকবালের দোষ খুঁজে গেছেন। 

নাফিস সম্পর্কে কি বলেছিলেন সাকিব?

সেটাই শুনি আগে। সাকিব বলেছিলেন, বিশ্বকাপ দলে ছোটভাই তামিম ইকবাল নেই শুনেই হয়তো বড় ভাই নাফিস ইকবালও দলের লজিস্টিক ম্যানেজারের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। এটা পুরোপুরি অপেশাদারমূলক একটা আচরণ। এমনটা হয়ে থাকলে বিসিবির আসলে তাকে নিয়োগ দেওয়াই উচিত হয়নি।

নাফিস ইকবাল সম্পর্কে সাকিবের এই তথ্য মোটেও সঠিক নয়। এবং সেই প্রমাণও স্পোর্টস বাংলার কাছে রয়েছে।  

বিশ্বকাপের জন্য সব প্রস্তুতি ছিল নাফিস ইকবালের। বিশ্বকাপে দলের লজিস্টিক ম্যানেজারের পদে তাকে আগেই দায়িত্ব দিয়েছিল বিসিবি। তারই অংশ হিসেবে নাফিস ইকবাল ভারতের ভিসা নিয়েছিলেন। দলের সঙ্গে যাওয়ার তার বিমান টিকিটও কাটা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, নাফিস ইকবাল এই সফরের জন্য ডিএ-ও ( ডেইলি অ্যালাউন্স) পেয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে তাকে নিউজিল্যান্ড সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ ওয়ানডে ম্যাচের সময় শুনতে হলো বিসিবি তাকে বিশ্বকাপের এই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে। 

বিসিবিতে নিজের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এই নির্দেশনা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিনা বিতর্কে নাফিস সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেন। ড্রেসিংরুমে গিয়ে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে বিসিবির সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে আসেন। নিজের জিনিসপত্র গোছগাছ শুরু করেন। বিসিবির একাউন্টসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিশ্বকাপের জন্য পাওয়া দৈনিক ভাতার টাকা ফেরত দেন। 

মোদ্দা কথা এটা পরিস্কার যে নাফিস ইকবাল নিজে থেকে এই দায়িত্ব থেকে সরে দাড়াননি। তাকে সরে দাড়াতে বলেছে তার চাকরিদাতা কৃর্তপক্ষ বিসিবি। 

হঠাৎ কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলো বিসিবি? 

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নিশ্চয়ই জেমস বন্ডের মতো গোয়েন্দাগিরির প্রয়োজন নেই। সহজ হিসেব তামিম ইকবালকে বিশ্বকাপ দলে কোচ এবং অধিনায়ক চান না। তাহলে তার ভাই কেন বিশ্বকাপের সময় লজিস্টিক ম্যানেজার হয়ে ড্রেসিংরুমে থাকবেন?

অধিনায়কের ইচ্ছের কাছে বিসিবিকে হার মানতেই হলো আরেকবার। এটা অবশ্য নতুন ঘটনা নয়। ২০২২ সালের টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময়ও এমন ঘটনা ঘটেছিল। সেবারও বিশ্বকাপের আগেভাগে একেবারে শেষ মূর্হুতে দলের অধিনায়ক হন সাকিব আল হাসান। নাফিস ইকবালও তখন দলের লজিস্টিক ম্যানেজার। কিন্তু অধিনায়ক সাকিব দলের লজিস্টিক ম্যানেজার পদে নাফিস ইকবালের নামটা পছন্দ করলেন না। বাধ্য হয়ে বিসিবি নাফিসকে সেবারও সরিয়ে দিয়েছিল।

সম্পর্কিত খবর