বিতর্ক ছাপিয়ে বিশ্বকাপ আয়োজনে কাতারের বিস্ময়
২০২২ বিশ্বকাপ মধ্যপ্রাচ্যে- তাও ধর্মীয়ভাবে কঠোর দেশ কাতারে। যেখানে মাঠে বসে মদ পান করা যাবে না। পোশাক পরিধানেও থাকবে কঠোর বিধিনিষেধ। এটা করা যাবে না ওটা করা যাবে না; এমন দেশে কিনা বসবে গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ? ২০১১ সালে এমন ঘোষণার পর, ফিফাকে শুনতে হয়েছে নানা কথা। কাতারকে বিশ্বকাপের আয়োজক করায় অভিযোগ তোলা হয়েছে দুর্নীতির। তার ওপর ওই সময়টাকে বিশ্বকাপের জন্য পর্যাপ্ত অবকাঠামো ছিল না দেশটিতে।
এতো এতো নেতিবাচক আলোচনাতেও দমে যায়নি কাতার। বিশ্বকাপ আয়োজনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। মনোযোগ দেয় অবকাঠামোগত উন্নয়নে। বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়ে নির্মাণ করে আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন সব স্টেডিয়াম। বিশ্বের নানা প্রান্তের দর্শকদের কথা মাথা রেখে একই সঙ্গে জুর দেওয়া হয় হোটেল, পর্যটন ও পরিবহন খাতে। সব মিলিয়ে প্রস্তুত হয় কাতার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই চমকে দেয় গোটা বিশ্বকে। শুরু হয় মাঠের লড়াই।
যেখানে দীর্ঘ এক মাস ৩২ দলের লড়াই শেষে ফাইনালে পা রাখে গত বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স ও মেসির আর্জেন্টিনা। ফাইনালে শ্বাসরুধকর এক লড়াইয়ের সাক্ষী হয় গোটা ফুটবল উন্মাদ সমর্থকরা। টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে হারিয়ে শেষ হাসিটা হাসে মেসির আর্জেন্টিনা। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অবশেষে বিশ্বকাপে হাত পরে মেসির। তাও এমন এক কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে; যাকে বলা হচ্ছে সর্বকালের অন্যতম সেরা ফাইনাল।
আয়োজনেও বাহবা পেয়েছে কাতার। LGBTQ, ধর্ম কিংবা পোশাক নিয়ে যেই বিতর্ক ছিল কাতারে; সেটাও বেশ দক্ষতার সঙ্গে সামাল দিয়েছে কাতার। সবার জন্য নিরাপদ হয়ে উঠে দেশটি। যার প্রশংসা করেছে খেলা দেখতে আসা বিশ্বের নানা প্রান্তের দর্শকরা। কাতারের এমন আয়োজনের প্রশংসা করেছে ফিফা সভাপতি ইনফান্টিনোও। তার মতে সর্বকালের সেরা আয়োজন এটিই।
যেখানে মাঠে বসে খেলা দেখেছে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ। ম্যাচ প্রতি যেই সংখ্যা টা ছিল ৫৩ হাজারের উপর। এমন সফল এক আয়োজনের পর মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে ধারণাই পাল্টে গেছে বিশ্বের। দাবি উঠেছে আগামীতেও মধ্যপ্রাচ্যে বিশ্বকাপ আয়োজনের। যেই সুবিধাটা ২০৩০ এই নিয়ে ফেলতে পারে সৌদি আরব। আপাতত অপেক্ষায় থাকুন সেটির।