পেসারদের স্বপ্নের সকালে নিউজিল্যান্ড গুটিয়ে গেল ৯৮ রানে
স্বপ্নের সকাল। এ ছাড়া আর কীইবা বলা যায়?
উইকেটে ঘাস আছে। অসমান বাউন্সও আছে। তবে এরপরও নিউজিল্যান্ডকে তাদেরই মাটিতে ৯৮ রানে গুঁড়িয়ে দেওয়াটা তো স্বপ্নের মতো কিছুই! তানজিম হাসান সাকিব, শরিফুল ইসলাম, সৌম্য সরকাররা তাই করে দেখিয়েছেন। গড়েছেন রেকর্ডও।
হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। পেস সহায়ক উইকেট তো আছেই, সঙ্গে ছিল খানিকটা আদ্রতাও। তবে তার ব্যবহার পেসাররা এমনভাবে করবেন, সে ভাবনা কি একটুও ছিল অধিনায়কের মগজে?
শুরুটাও তো তেমন কিছু বলছিল না! পাওয়ারপ্লেতে পেসাররা শুরুটা ভালোই করেছিলেন। বিশেষ করে তানজিম সাকিব। নিজের দ্বিতীয় আর চতুর্থ ওভারে সাজঘরে ফেরালেন রাচিন রবীন্দ্র আর হেনরি নিকলসকে। পাওয়ারপ্লেতে ২৭ রান তুলল নিউজিল্যান্ড।
প্রথম ওয়ানডেতেও শুরুটা এমন হয়েছিল, যার পর নিউজিল্যান্ড ইনিংস শেষ করেছিল ওভারপ্রতি আট রান নিয়ে। তেমন কিছুর চোখরাঙানি আজও পাচ্ছিল বাংলাদেশ। টম ল্যাথামকে সঙ্গে নিয়ে ওপেনার উইল ইয়াং জুটি গড়ে এগিয়ে চলছিলেন বেশ।
তবে শরিফুলের দ্বিতীয় স্পেলে সব ভেস্তে গেল একেবারে। ওপাশ থেকে পেসারদের জন্য বাড়তি সহায়তা ছিল বলেই হয়তো, অধিনায়ক শান্ত আক্রমণে আনেন শরিফুলকে। বাঁহাতি এই পেসার প্রতিদানটা দেন দিনের সেরা বলটা করে। দারুণভাবে বলটা ভেতরে ঢোকান ল্যাথামের, বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন কিউই অধিনায়ক।
পরের ওভারে আরেক থিতু ব্যাটার ইয়াংকেও ফেরান শরিফুল। অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ দেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ইয়াং। দুই ওভারে দুই সেট ব্যাটারকে খুইয়ে যে নিউজিল্যান্ড চাপে পড়ল, তা থেকে বেরোনো হলো না আর।
নিজের পরের ওভারে আরও একবার শরিফুল ভাসলেন শূন্যে। অনেকটা ল্যাথামকে ফেরানোর মতো একটা বলেই এবার ফেরালেন মার্ক চ্যাপম্যানকে। শান্ত এরপর সরিয়ে নেন শরিফুলকে, আক্রমণে আনেন তানজিমকে। তিনিও সাফল্য এনে দিলেন একেবারে ফেরার পর প্রথম ওভারেই। তার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে তাড়া করতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ দেন টম ব্লান্ডেল।
এরপর পালা আসে সৌম্যের। তাকেও শরিফুল, তানজিমের ব্যবহার করে যাওয়া প্রান্ত থেকেই আক্রমণে আনেন শান্ত। তিনিও পরপর তিন ওভারে তিন সাফল্য এনে দেন। তাও কীভাবে? একটা অ্যাঙ্গেল করে ভেতরে ঢোকানো বলে, একটা ইয়র্কারে বোল্ড করে, একটা অফ স্টাম্পের বাইরে করিডর অফ আন্সার্টেইন্টি থেকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলিয়ে! ৯৭ রান তুলতেই ৯ উইকেট খুইয়ে দুই অঙ্কে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে যায়।
সে শঙ্কাটাকে বাস্তবে রূপ দেন মুস্তাফিজুর রহমান। উইল ও’রোর্কেকে বোল্ড করে ফেরান সাজঘরে। নিউজিল্যান্ড অলআউট হয় ৯৮ রান তুলতেই।
বাংলাদেশের বিপক্ষে এর আগে সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার ‘কীর্তি’টা নিউজিল্যান্ড গড়েছিল ২০১৩ সালে। তবে সে ১৬২কে দুইয়ে ঠেলে এক নম্বরে জায়গা করে নিল আজকের এই ৯৮/১০। এ কীর্তি গড়ে নিউজিল্যান্ড আর যাই হোক, ‘খুশি’ হবে না, তা বলাই বাহুল্য!