বিসিবির চুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন তামিম

বিসিবির চুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন তামিম

 

এমনটাই হওয়ার কথা ছিল। তামিম ইকবাল নিজেকে এবার বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে সরিয়ে নিলেন। বিসিবির টিম অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের কাছে তিনি এই অনুরোধ জানিয়েছেন। বলেছেন, নতুন বছরের জন্য বিসিবি ক্রিকেটারদের কেন্দ্রীয় চুক্তির যে পরিকল্পনা করছে তাতে যেন তার নাম অর্ন্তভুক্ত না করা হয়। জালাল ইউনুস রোববার দুপুরে বিসিবিতে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। চলতি ডিসেম্বরে বিসিবির সঙ্গে ক্রিকেটাদের পুরানো চুক্তি শেষ হবে। 

তামিম ইকবাল তার এই সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে আরেকবার জানিয়ে দিলেন, আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে ফেরার তার আর কোনো ইচ্ছে বা সম্ভাবনা নেই। গতমাসেই তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিতে চেয়েছিলেন। সেসময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখাও করেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেই সাক্ষাতের প্রসঙ্গে তামিম জানান, ওটা ছিল একটা সৌজন্য সাক্ষাত। 

তামিম সেই সময় ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা দিতে চাইলেও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন তাকে আরেকটু সময় নিতে বলেন। পাপন জানান, জাতীয় নির্বাচনের পর বিপিএল শুরুর সময় আমরা তামিম ইকবাল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত জানাবো। তামিমও সেদিনই সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘আমি কি করতে চাই, সেটা আপনারা (সাংবাদিকরা ) সবাই জানেন। বিসিবিকেও আমি আমার ইচ্ছের কথা জানিয়েছি। বিসিবি সভাপতি কিছুটা সময় চেয়েছেন। বলেছেন, বিপিএলের সময় তারা এই বিষয় নিয়ে কথা বলবেন।’ 

কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে তামিমের সরে আসার এই ঘোষণা স্পষ্ট করে দিলো যে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে তার শেষ খেলাটা এর মধ্যেই খেলে ফেলেছেন এই ওপেনার। 

কোচ ও বিসিবি সভাপতির বক্তব্যে নাখোশ হয়ে তামিম ইকবাল গত জুলাইয়ে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম ম্যাচ শেষে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তিনি পরদিনই অবশ্য তার অবসরের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। বিশ্বকাপের ঠিক ২ মাস আগে আগে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তিনি ওয়ানডে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন। আর বিশ্বকাপের দল ঘোষণার ঠিক আগেভাগে কোচ ও টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত না হয়ে জানিয়ে দেন বিশ্বকাপের দলে তাকে যেন বিবেচনা না করা হয়। কোচ ও টিম ম্যানেজমেন্ট বিশ্বকাপে তাকে ওপেনিং পজিশন ছেড়ে মিডলঅর্ডারে ব্যাট করার পরামর্শ দিয়েছিল। সেই পরামর্শকে অপমানসূচক মনে করেন তামিম। ক্যারিয়ারের ১৭ বছর ধরে ওপেনার হিসেবে খেলে এখন শেষ ধাপে তার ব্যাটিং অর্ডার বদলকে তিনি সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি। স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সঙ্গে তার বিরোধটা প্রকাশ্য হয়ে পড়ে।

তামিম ইকবালকে ছাড়া বিশ্বকাপ মিশনে বাংলাদেশ ভয়াবহভাবে ব্যর্থ হয়। তামিমও সিদ্ধান্ত নেন জাতীয় দলে আর না খেলার। কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ার তার অনুরোধটা সেই ধাপেরই অংশ।

সম্পর্কিত খবর