চোখের সমস্যা নিয়ে বিশ্বকাপ খেলেছিলেন সাকিব
২০১৯ আর ২০২৩, বিশ্বকাপ দুটোকে চাইলেও যেন ভুলতে পারবেন না সাকিব আল হাসান। প্রথমটায় বাংলাদেশের ইতিহাস-সেরা তো বটেই, বিশ্বকাপের ইতিহাসের তর্কসাপেক্ষে সেরা ব্যক্তিগত নৈপুণ্যটা দেখিয়েছিলেন তিনি। আর দ্বিতীয়টায় তিনি নানা আলোচনার জন্ম দিয়ে গিয়েছিলেন, পারফর্ম্যান্সটাও কথা বলেনি তার পক্ষে।
এই বিশ্বকাপটায় কী হয়েছিল তার? এমন প্রশ্ন গোটা বিশ্বকাপজুড়েই ঘুরে ফিরেছে সমর্থকদের মুখে মুখে। সম্প্রতি তিনি এক সাক্ষাৎকারে জানালেন, বিশ্বকাপে তিনি খেলেছিলেন চোখের সমস্যা নিয়ে। চোখে ঝাপসা দেখার এ আবার তৈরি হয়েছিল মানসিক চাপের কারণে।
ব্যাট হাতে সাকিবের সময়টা ভালো কাটেনি বিশ্বকাপে। দুই ম্যাচ তিনি বাইরে ছিলেন চোটের কারণে। বাকি যে সাত ম্যাচে খেলেছেন, তাতে তিনি রান করেছেন মোটে ১৮৬, গড় ২৬ এর একটু ওপরে। এ ব্যাডপ্যাচ থেকে বাঁচতে তিনি বিশ্বকাপের মাঝপথে ঢাকায় এসেছিলেন কোচ নাজমুল আবেদিন ফাহিমের পরামর্শ নিতে। তবে তাও কাজে দেয়নি। এর আগেও যেমন শর্ট বলে ভুগেছেন, ঢাকা থেকে বিশ্বকাপে ফিরে স্টান্স বদলেও তিনি সেই শর্ট বলের সমস্যাতেই উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন।
সাকিব জানালেন, এমনটা হয়েছে তার চোখের সমস্যার কারণে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, চোখ হচ্ছে মস্তিষ্কের বর্ধিত একটা অংশ। যখন মস্তিষ্কে চাপ পড়ে, তখন চোখ আর তার ভাসকুলার সিস্টেমেও তার প্রভাবটা পড়ে ভালোভাবে। স্ট্রেস হরমোন যখন মস্তিষ্ক থেকে বেরোয়, তখন তা সরাসরি দৃষ্টিশক্তিতে প্রভাব ফেলে।
দীর্ঘমেয়াদি চাপ উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়, রক্তনালী সরু হয়ে আসে, তাতে রেটিনায় রক্ত চলাচলে বাঁধাপ্রাপ্ত হয়। চিকিৎসা শাস্ত্রে এর নাম হাইপারটেনসিভ রেটিনোপ্যাথি। এর ফলে ডাবল ভিশন কিংবা চোখে ঝাপসা দেখার মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে। সাকিব বিশ্বকাপের সময় পড়েছেন এই সমস্যাতেই।
তিনি ক্রিকবাজকে জানান, বিষয়টা স্রেফ একটা দুটো ম্যাচে তাকে ভোগায়নি, ভুগিয়েছে পুরো বিশ্বকাপজুড়ে। তার কথা, ‘বিশ্বকাপের একটা-দুটো ম্যাচে এমনটা হয়নি। পুরো বিশ্বকাপেই আমার এ সমস্যাটা হচ্ছিল। (ব্যাটিংয়ের সমস্যার কারণ এটা) হতেই পারে। বলের মুখোমুখি হওয়াতে আমার বেশ সমস্যা হচ্ছিল।’
‘বিষয়টা হচ্ছে, যখন আমি ডাক্তারের কাছে গিয়েছি আমার কর্নিয়াতে পানি থাকার সমস্যা নিয়ে, তারা আমাকে ড্রপ দিয়েছিল, বলেছিল আমি যেন আমার ওপর থাকা চাপটা কমাই। আমি ঠিক জানি না চোখের সমস্যার কারণ সেটাই ছিল কি না। কিন্তু আমেরিকায় যখন আবার পরীক্ষা করালাম, তখন কোনো সমস্যাই ছিল না। আমি ডাক্তারকে বলেছিলাম, বিশ্বকাপ নেই তো চাপও নেই।’