বিপিএলে থাকছেন না মুজিব-নাভিন-ফারুকি
২০১৫ সালে সর্বশেষ আইপিএলে খেলেছিলেন অজি তারকা পেসার মিচেল স্টার্ক। সেখান থেকে আট বছর পর ফের আইপিএল নিজের নাম লেখালেন এই বাঁহাতি পেসার। এবং গড়লেন নিলামের রেকর্ড। লিগটির ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৪ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে তাকে দলে ভিড়িয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। এতেই প্রমাণ হয়, সেখানে স্টার্কের চাহিদা।
তবে কি আট বছর সেখানে নিজের নাম সরিয়ে রাখায় ভুল করলেন স্টার্ক? কামিয়ে নিতে পারতেন শত কোটির ওপর টাকা। তবে এমনটা মানতে নারাজ এই অজি তারকা। তার কাছে দেশের দায়িত্ব আগে। ফ্রাঞ্চাইজি লিগ থেকে দূরে রাখায় পেয়েছেন সাফল্য। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জিতেছেন দুটি বিশ্বকাপ ও একটি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। ক্যারিয়ার পরিপূর্ণে তাই আর কি ই বা লাগে?
এতেই যখন বেশ প্রশংসা কুড়াচ্ছেন স্টার্ক, সেখানে আফগানিস্তান দলে দেখা মিলল মুদ্রার উল্টো পিঠের। ‘দেশের হয়ে খেলার চেয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেওয়া’। এমন দিক বিবেচনায় দেশের বাইরে ফ্রাঞ্চাইজি লিগ খেলায় তিন ক্রিকেটারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি)। মুজিব-উর-রহমান, নাভিন-উল-হক ও ফজলহক ফারুকির ওপর আগামী দুই বছর বহাল থাকবে এই নিষেধাজ্ঞা। এতেই বিপিএল, আইপিএলসহ অন্যান্য ফ্রাঞ্চাইজি লিগের আগামী দুই আসরে থাছেন না এই তিন ক্রিকেটার।
এক বিবৃতিতে এসিবি জানায়, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হতে যাওয়া কেন্দ্রীয় চুক্তির বাইরে থাকার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন এই তিন ক্রিকেটার। পাশাপাশি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ খেলার অনুমতিও চেয়েছেন বোর্ডের কাছে।
এতেই চটে বসেছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড। জাতীয় দলের দায়িত্ব ছাপিয়ে বিনা বাঁধায় ফ্রাঞ্চাইজি লিগে খেলতে জাতীয় চুক্তিতে সই করেননি তারা। বোর্ড যেটি মোটেও ভালোভাবে নেয় নি। জাতীয় দলের দায়িত্ব বরখেলাপের পরিচয়েই এসেছে এমন নিষেধাজ্ঞা। তবে তাদের জন্য এখনো জাতীয় দলে চুক্তি স্বাক্ষরের পথ খোলা রেখেছে এসিবি।
নিষেধাজ্ঞার কারণে আসন্ন ২০২৪ আইপিএলসহ আগামী দুই বছর কোনো ফ্রাঞ্চাইজি লিগে খেলতে পারবেন না মুজিব, নাভিন ও ফারুকি। মুজিব বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার বিগব্যাশে খেলছেন মেলবোর্ন রেনেগেডসের হয়ে। স্টার্কের কলকাতা মুজিবকে দলে ভিড়িয়েছে ২ কোটি রুপিতে। অন্যদিকে লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস নাভিনকে এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ধরে রেখছে ফারুকিকে।
জাতীয় দলে যত বছর ধরে খেলা যায়, তা ততই সম্মানের। এক সময়ে বাস্তববাদী এই লাইনটা এখন যেন অনেকটাই ফিকে। এখনকার সময়ে জাতীয় দলের ক্যারিয়ারটা খুব একটা বড় করতে চাচ্ছেন না অনেক ক্রিকেটারই। ঝুঁকছেন সহজ পথে, ফ্রাঞ্চাইজি লিগের দিকে।
শচীন টেন্ডুলকার ২৪ বছর, সনাথ জয়সুরিয়া ২৩ বছর, জাভেদ মিয়াঁদাদ ২১ বছর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এত লম্বা সময়ের ক্যারিয়ার এখনো যেন এক অমাবস্যার চাঁদ। তার নেপথ্যে কি কেবলই এই ফ্রাঞ্চাইজি লিগের অতিরিক্ত বিস্তার?