এক মাস হয়ে গেল বিশ্বকাপ তদন্ত কমিটির, সাকিব-তামিমের দেখাই পায়নি!

এক মাস হয়ে গেল বিশ্বকাপ তদন্ত কমিটির, সাকিব-তামিমের দেখাই পায়নি!

২৭ নভেম্বর। বিশ্বকাপ ব্যর্থতার প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন।
২৭ ডিসেম্বর। এখনো তামিম ইকবাল আর সাকিব আল হাসানের সঙ্গে কথা বলতেই পারেনি তদন্ত কমিটি!

কি বুঝলেন? একমাস হয়ে গেল তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে কিন্তু আজও কর্ম সম্পাদনই হয়নি। ‘আসল’ দুজনের সাক্ষাতই পায়নি তদন্ত কমিটি। অথচ সাকিব আল ছিলেন বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অধিনায়ক। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের জন্য তার কথামালা এবং তাকে করা জেরাই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয়।

সাকিব আল হাসান জাতীয় নির্বাচনের জন্য এখন ব্যস্ত। অন্য কোনোকিছুতে তার এই সময়ে নজর দেওয়ার উপায় নেই। প্রতিদিনই তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগে দিনরাত কাটাচ্ছেন। রাজনীতিবিদ হয়ে উঠার জন্য স্বল্প-সময়ে যা যা করার প্রয়োজন তার সবকিছুই নিয়ম মেনে করে চলেছেন তিনি। এরই মধ্যে অবশ্য একবার বিদেশও ঘুরে এসেছেন সাকিব।

দুবাইয়ে টি-টেন লিগে বাংলা টাইগার্সের হয়ে তার খেলার কথা ছিল। কিন্তু আঙ্গুলের ইনজুরির জন্য সেই টুর্নামেন্ট তিনি মিস করেছেন। তবে বাংলা টাইগার্সের হয়ে ফটো-সেশন এবং বিজ্ঞাপনের জন্য ঠিকই ক’দিনের জন্য দুবাই উড়ে গিয়েছিলেন তিনি। অন্যসব ‘কাজ’ এর জন্য সময় বের করতে পারলেও তিনি পারেননি শুধু বিশ্বকাপ ব্যর্থতায় গঠিত তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হতে?

প্রশ্ন হলো তদন্ত কমিটি কি তাকে ডেকেছিল? উত্তর মিলল, হ্যাঁ তাকে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু সাকিব সময় বের করতে পারেননি। সাকিব কবে সময় দেবেন, কবে কথা বলবেন-এখন সেই ফাঁকেই আটকে আছে তদন্ত কমিটির সামনে চলা।

তদন্ত কমিটির এই রিপোর্টে কি থাকছে? কোনো সুপারিশ?

তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তা জানালেন, আমরা মূলত বিশ্বকাপে ব্যর্থতার কারণগুলো এখানে উল্লেখ করবো। কাউকে রাখার বা কাউকে সরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করার কাজ আমাদের না। কেন এবং মূলত কি কি কারণে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ৯ ম্যাচের মধ্যে সাতটি ম্যাচে একতরফা ভঙ্গিতে হেরেছে সেটাই আমরা তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করবো।

তাহলে এই বিশ্বকাপে তো তামিম ইকবাল খেলেননি। তাকে কেন ডাকা হচ্ছে? তিনি তো বিশ্বকাপের দলেই ছিলেন না!

উত্তর মিলল-তামিম ইকবাল খেলেননি। কিন্তু কেন খেলেননি সেটাও খুঁজে বের করতে হবে। সেই প্রশ্নের পরিষ্কার উত্তর পেতে হবে। নির্বাচকরা বলছেন তারা তামিম ইকবালকে বিশ্বকাপ দলে রেখেছিলেন কিন্তু তামিম নিজেই তাকে দলে না রাখার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। বলেছিলেন বিশ্বকাপে আমি খেলবো না। আমরা দেখবো কেন এবং কি পরিস্থিতিতে তামিম এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তার বিশ্বকাপ দলে না থাকাটা কি প্রভাব রেখেছে নাকি রাখেনি সেটাও আমাদের তদন্ত রিপোর্টে যোগ করতে হবে। তাই তামিমের ভাষ্য আমাদের প্রয়োজন।

তদন্ত কমিটির সেই প্রয়োজন সাকিবের মতো তামিমও এখন মেটাতে পারেননি। তামিমের অবশ্য নির্বাচনজনিত কোনো সমস্যা নেই। তিনি ঘরোয়া ক্রিকেটেও ব্যস্ত নন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তো তিনি সেই সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহের পর আর খেলেনইনি। তারপরও কেন তদন্ত কমিটির সামনে তিনি এখনো হাজির হননি, তারও কোনো সদোত্তর নেই!

বোঝাই যাচ্ছে তদন্ত কমিটির তদন্তকে আরো অনেকে গুরুত্ব দিলেও মোটেও পাত্তা দিচ্ছেন সাকিব-তামিম।

সম্পর্কিত খবর