বাংলাদেশের এক যুগের আক্ষেপ ঘোচাল নেপিয়ার
নেপিয়ারের সবুজ গালিচা যেন দু’হাতে উজাড় করে দিচ্ছে বাংলাদেশকে। দূর করছে তাসমান সাগরপাড়ে বাংলাদেশের একের পর এক আক্ষেপ। দু’দিন আগে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম ওয়ানডে জয়ের পর এবার এল টি-টোয়েন্টিতে জয়। সেটিও ওয়ানডের মতোই প্রথম ও স্মরণীয়। কিউইদের ১৩৪ রানে আটকে দেওয়ার পর বাংলাদেশ জয় তুলেছে ৫ উইকেট হাতে রেখে। তিন ম্যাচের সিরিজে লিড নিয়েছে ১-০তে।
অথচ এর আগে ২০১০ সালে কিউইদের মাটিতে প্রথম টি-টোয়েন্টির পর চার দফা ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। অবশেষে পঞ্চমবারে এসে কাঙ্ক্ষিত জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আর সেটিও এসেছে ১১ ম্যাচ পর। অভিজ্ঞ সাকিব-মুশফিক-রিয়াদ ও তাসকিনকে ছাড়া বাংলাদেশের এমন জয় বার্তা দিচ্ছে নতুন দিনের।
নেপিয়ারে এদিন অবশ্য স্বপ্নের মতোই এক শুরু পেয়ে যায় বাংলাদেশ। টসে জিতে কিউইদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে শুরুতেই স্বাগতিকদের চেপে ধরে বাংলাদেশি বোলাররা। প্রথম ওভারে উইকেট মেইডেন আদায় করেন শেখ মাহেদী। পরের ওভারে এসে ১ রান খরচায় শরিফুল তুলে নেয় কিউইদের দুই ব্যাটার ফিন অ্যালেন ও গ্লেন ফিলিপসকে। ১ রানে ৩ উইকেট নেই কিউইদের। এমন দুঃস্বপ্নের মতো শুরু শেষ কবে করেছে কিউইরা?
এমন স্বপ্নের শুরুর দিনে বাকি গল্পটাও যে নিজেদের হবে সেটা অনুমেয়ই ছিল। বোলিং মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন মাহেদী, মুস্তাফিজ ও শরিফুল। অভিষিক্ত তানজিম সাকিব খরুচে হলেও তাতে কিউইদের রান বাড়েনি খুব একটা। বাকিদের কিপটে বোলিংয়ের বিপরীতে কেবল সুবিধা করতে পেরেছিলেন জেমস নিশাম। তার করা ২৯ বলে ৪৮ রান ও স্যান্টনারের ২২ ও অ্যাডাম মিলনের ১৬ রানে ৯ উইকেট খরচায় বাংলাদেশকে ১৩৫ রানের টার্গেট ছুড়ে কিউইরা।
লক্ষ্যটা ছোট হলেও বাংলাদেশের শুরুটা হয়নি ভালো। দলীয় ১৩ রানেই সাজঘরে ফিরেন রনি তালুকদার। এরপর থিতু হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয়েছে অধিনায়ক শান্ত, সৌম্য, তাওহিদ ও আফিফকে। একটা সময় শঙ্কায় ঝেঁকে বসেছিল। তীরে এসে তরী ডুববে না তো আরও একবার। তবে শেষ পর্যন্ত সেটি হতে দেননি মাহেদী। লিটনকে সঙ্গ দিয়েছেন।
বোলিংয়ের মতো ব্যাট হাতেও কিউইদের শাসন করেছেন। তার ১৬ বলে ১৯ ও লিটনের ৩৬ বলে ৪২ রানে ভর করেই ৮ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয় তুলে বাংলাদেশ। রচিত হয় কিউই ডেরায় নতুন ইতিহাস। এখন অপেক্ষা সেই ইতিহাসটাকে আরও সমৃদ্ধ করা। হাতে এখনও দুই ম্যাচ বাকি থাকায় বাংলাদেশ দল নিশ্চয় সেই স্বপ্ন দেখতেই পারে। তার ওপর ভেন্যুটি যখন হয় মাউন্ট মঙ্গানুই। যেখানে কিউইদের টেস্ট হারানোর সুখ স্মৃতি আছে বাংলাদেশের।