মুদ্রার উলটো পিঠটাও দেখলেন শান্ত
ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে পূর্ণ সিরিজে নাজমুল হোসেন শান্তর রেকর্ড বেশ প্রশংসনীয়। বাংলাদেশ যে তিনটা সিরিজ খেলেছে তার অধীনে, প্রত্যেকটাতেই পেয়েছে একটা না একটা ‘নতুন’ কিছুর দেখা। তবে একটু এদিক ওদিক হলে আরও ভালো কিছুর দেখাও পেয়ে যাওয়া যেত। তাসমান সাগরপাড় থেকে ফেরা যেত নিদেনপক্ষে একটা সিরিজ জিতে। সেটা হয়নি শান্তর একটা ভুলের কারণেই!
অধিনায়কত্বের স্বাদটা আগেই পেয়েছেন শান্ত। তবে পূর্ণ সিরিজে অধিনায়ক হওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে বিশ্বকাপের পরে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে। সে সিরিজ শুরুর আগে তিনি জানিয়েছিলেন দিনে দিনে ঋদ্ধ হওয়ার কথা। বলেছিলেন, ‘বোলিং পরিবর্তন, ফিল্ডিং ঠিক করা এসব বিষয়ে দখল বাড়ছে।’
তার একটা ছাপ মাঠেও দেখা যাচ্ছিল। সেই টেস্ট সিরিজ থেকে যখনই বোলিংয়ে পরিবর্তন আনছিলেন, একটা না একটা কিছু হচ্ছিল, যার ফলটা পাচ্ছিল বাংলাদেশ। সে ধারা চলতি নিউজিল্যান্ড সফরেও চলমান ছিল। মুদ্রার একটা পিঠই কেবল দেখছিলেন শান্ত।
তাতে ছেদ পড়ল বোধহয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনটাতেই। ম্যাচটা জিতলেই সিরিজের ট্রফিটা চলে আসবে বাংলাদেশে। সেই ম্যাচে ১১০ ডিফেন্ড করতে নেমে ৪৯ রানে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে দল ছিল চালকের আসনে। ভুলটা তখনই করলেন শান্ত। দেখলেন মুদ্রার অন্য পিঠটা।
নিজেকে আনলেন বোলিংয়ে। কারণ কী? উইকেটের দুই পাশে ছিলেন দুই বাঁহাতি। একাদশের ডানহাতি স্পিনার শেখ মাহেদি হাসানের চার ওভার শেষ তার আগেই। ম্যাচ আপ তত্ত্ব মানতে শান্তর হাতে ডান হাতি স্পিন বোলিং অপশন ছিল স্রেফ তিনি নিজে আর আফিফ হোসেন। কিন্তু শান্ত শেষমেশ বাজিটা ধরলেন নিজেকে দিয়েই। ভুলটা ওখানেই হলো।
বৃষ্টি চোখ রাঙাচ্ছিল সকাল থেকেই। এর আগ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে ছিল ডিএলএস পদ্ধতিতে। শান্তর সে ওভারে একটা করে ছক্কা আর চারে সামনে চলে আসে কিউইরা। সেই যে চাপটা সরিয়ে দিল নিউজিল্যান্ড, তাদের আর চাপে ফেলা গেল না কোনোভাবেই।
ম্যাচ আপ তত্ত্ব মানতে গিয়ে বাংলাদেশ ম্যাচ খুইয়েছে, এমন নজির শেষ তিন চার বছরে কম নেই। আজকের এই ম্যাচ সে তালিকায় যোগ হলো নতুনভাবে। শান্তর ভুল আরও একভাবে হয়েছে, টি-টোয়েন্টিতে পার্টটাইমারের ব্যবহার করে। টি-টোয়েন্টির পরিধি ছোট, ভুলের সুযোগটা খুব কম। পুঁজিটা যখন নেমে আসে ১১০ রানে, তখন তো সুযোগটা আরও কম! সে কারণে টি-টোয়েন্টিতে পার্ট টাইমারের ব্যবহার দেখা যায় না খুব একটা। শান্ত করলেন সেটাই। বিষয়টা যে ভুল, সেটা জিমি নিশাম প্রমাণ করে দিলেন ভালোভাবেই।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ক্যাপ্টেন্সির আঙিনায় শান্তর পদচারণাটা নতুন। আজকের এ মুদ্রার উলটো পিঠ দেখাটা যে তার শেখার খাতায় নতুন একটা অধ্যায়ই যোগ করবে, তা বলাই বাহুল্য।