নান্নুর চেয়ে বেশি বেতন চান হান্নান সরকার!
- হ্যাপি নিউ ইয়ার। নতুন বছরে আপনাকে তাহলে একটা সুংবাদ জানাই। চাকরি তো এখনো আছে!
টেলিফোনের ওপ্রান্ত থেকে জাতীয় দলের এক নির্বাচক হো হো করে হেসে উঠলেন। তবে সেই হাসিতে যতোখানি না স্বস্তি তারচেয়ে বেশি অনিশ্চয়তার একটা রেশ ঠিকই মিলল!
চলে যাওয়ার বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জাতীয় দলের নির্বাচকদের সঙ্গে ক্রিকেট বোর্ডের চুক্তি ছিল। যেহেতু আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আসেনি তাই ধরেই নেওয়া যেতে পারে তাদের চাকরি তথা চুক্তি এখনো আছে।
নতুন বছরে বেশকিছু জায়গায় অদল বদলের পরিকল্পনা করেছে বিসিবি। তার মধ্যে বদল এজেন্ডার শীর্ষে রয়েছে নির্বাচক কমিটি। এই কমিটিতে থাকা দুজন প্রায় ১২ বছর ধরে দায়িত্বে আছেন। মিনহাজুল আবেদিন নান্নু সেই ২০১১ সাল থেকে নির্বাচক কমিটিতে আছেন। তিনি ২০১৬ সাল থেকে আবার প্রধান নির্বাচকের দায়িত্বে আছেন। তার অন্যতম ডেপুটি হাবিবুল বাশার সুমনও দায়িত্ব সামাল দিচ্ছেন সেই ২০১১ সাল থেকে। কমিটির তৃতীয় সদস্য আব্দুর রাজ্জাক রাজ সবচেয়ে জুুনিয়র। নির্বাচক কমিটিতে তার অর্ন্তভুক্তি ২০২১ সালে।
প্রধান নির্বাচক পদে বদল আনার জন্য বিসিবি একেবারে আঁটঘাট বেঁধে নেমেছে। এই পদে যথাযথ কাউকে পাচ্ছে না বলে বিসিবি অপেক্ষায় আছে। পাওয়া গেলে নতুন বছরের আগেই তারা প্রধান নির্বাচককে বিদায় জানিয়ে ফুলের স্তবক তুলে দিতো।
নির্বাচক পদে তেমন যোগ্য কাউকে না পাওয়া এবং জাতীয় নির্বাচনের ব্যস্ততা-এই দুই কারণে অলিখিতভাবে নির্বাচক কমিটির চুক্তির মেয়াদও বেড়ে গেছে! তবে নতুন নির্বাচক প্যানেল তৈরির জন্য বিসিবির কয়েকজন পরিচালক তাদের কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। পুরো বিষয়টা এখনো নেহাত তাদের চিন্তাভাবনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
সেই পরিচালকদের একজন স্পোর্টস বাংলাকে জানালেন, ‘এই নির্বাচক কমিটির তো অনেকদিন হয়ে গেল। পরিবর্তন প্রয়োজন। এই কমিটির খুব বড় কোনো সাফল্যও তো নেই। দেখি নতুন কাকে আনা যায়। চেষ্টা করছি বয়সভিত্তিক দলের নির্বাচকদের কাউকে উপরের দিকে নিয়ে আসার।’
খোঁজ জানাচ্ছে, জাতীয় দলের নির্বাচক কমিটিতে সাবেক ক্রিকেটার হান্নান সরকারের নামটা উচ্চারিত হচ্ছে। হান্নান সরকার বর্তমানে অনুর্ধ্ব-১৯ দলের নির্বাচক কমিটির দায়িত্বেও আছেন। তার মেয়াদে বয়সভিত্তিক দলটা ভালো সাফল্য পেয়েছে। ২০২০ সালের অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আবার গেল বছর অনুর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেছে প্রথমবারের মতো।
তাকে নিয়ে বিসিবির এই নড়াচড়ার খবর হান্নান সরকারের কানেও পৌছেছে। স্পোর্টস বাংলাকে এই প্রসঙ্গে হান্নান বলেন, আমি যে আগ্রহী না, তা বলছি না। উন্নতি তো সবাই চায়। আমিও জাতীয় দলের জন্য কাজ করতে চাই। আমার কাছে অবশ্য এখনো এমন কোনো প্রস্তাব আসেনি। তবে একটা বিষয় নিশ্চিত আমি এই পদে চাকরি করলে আরো বেশি বেতন দাবি করবো।
- কতো বেশি? সেটার পরিমান কি?
হান্নান হাসতে হাসতে বললেন, নান্নু ভাই এখন যা পান তার চেয়ে বেশি তো অবশ্যই।
বিসিবি হান্নান সরকারের এই দাবি মানবে কিনা- সেটা এখন প্রশ্নের বিষয়। কারণ হান্নানের দাবি মেটাতে হলে নির্বাচক কমিটির অন্যান্য সদস্যদের বেতনও বাড়াতে হবে। বিসিবি তা করবে নাকি আগের নির্বাচক কমিটির সঙ্গেই আরেকদফা চুক্তির মেয়াদ বাড়াবে?
জাতীয় নির্বাচনের ব্যস্ততায় আটকে আছে সেই সিদ্ধান্তও।