বাংলাদেশের লক্ষ্য সেমিফাইনাল, স্বপ্নও

বাংলাদেশের লক্ষ্য সেমিফাইনাল, স্বপ্নও

সপ্তাহ তিনেক আগে এক সাক্ষাৎকারে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে যা বলেছিলেন, তা ছিল বেশ রঙহীন। বলেছিলেন, ‘কেউ যদি এখন এই স্বপ্ন দেখে যে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিতবে, তাহলে আমি তাঁকে বলব, ঘুম থেকে জেগে উঠুন।’ এরপর দলের মাঠের বাইরের পরিস্থিতিটা আরও ঘোলাটে হয়েছে। শীর্ষ দুই তারকা তামিম ইকবাল আর সাকিব আল হাসানের কথা নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি।

তবে এরপর এসে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরুর ঠিক আগে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে নিজের দলকে নিয়ে জানালেন লক্ষ্যের কথা। বললেন, সেমিফাইনালই দলের লক্ষ্য; সেটা স্বপ্নও হতে পারে, কিন্তু দিনশেষে দুটো একই বিষয়।

বিশ্বকাপের আগে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গটাও উঠে এল তাই সামনে। সে কথার একটা ব্যাখ্যা অবশ্য দিলেন তিনি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের আগে জানালেন, দলকে চাপমুক্ত রাখাই তো তার কাজ! প্রত্যাশার চাপটা নাহয় সামলানো গেছে। কিন্তু সেই সাক্ষাৎকারের পর মাঠের বাইরে শেষ কিছু দিনে যা ঘটেছে, তা কি একটুও প্রভাব ফেলবে না ক্রিকেটারদের মানসপটে? 

সেটা হোক না হোক, হাথুরুসিংহে কিন্তু ঠিকই তার চেষ্টাটা করেছেন। স্কোয়াডে না থাকা তামিম ইকবাল হোক, কিংবা অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, দুজনের ইস্যুতেই তিনি নিলেন কূটনীতির আশ্রয়। প্রশ্ন সামলালেন সুকৌশলে। তাতেও যদি কাজ হয়!

প্রস্তুতি ম্যাচে প্রস্তুতিটা নেহায়েত মন্দ হয়নি। সামনে এবার আফগানিস্তান, যাদের বিপক্ষে সবশেষ দেখাতেই জয় আছে বাংলাদেশের। তবে তার আগের স্মৃতিটা অবশ্য মোটেও সুখকর নয়, দেশের মাটিতে তাদের কাছে সিরিজ হারের গ্লানি সঙ্গী হয়েছিল দলের। 

আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপের স্মৃতিটাও বেশ ভালো বাংলাদেশের। ওয়ানডে হোক কিংবা টি-টোয়েন্টি, বিশ্বকাপের মঞ্চে বাংলাদেশকে কখনোই হারাতে পারেনি আফগানরা। যদিও আফগানিস্তান সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশের দুর্বলতায় আঘাত করাই লক্ষ্য তাদের। সেটা হয়ে গেলে যে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম জয়টাও মিলে যায়!

কোচ হাথুরুসিংহের কথায় অবশ্য আফগানদের কথা উঠে এল সামান্যই। নিজেদের নিয়ে ইস্যু যে কম নয়! যদিও প্রস্তুতি ম্যাচের পারফর্ম্যান্সে মাঠের বাইরের কথাগুলোকে আপাতত ভালোভাবেই সামলেছে বাংলাদেশ। তবে মূল পরীক্ষাটা তো আসল ম্যাচে! প্রস্তুতি ম্যাচে যে প্রস্তুতিটাই থাকে মূখ্য, যে কারণে তীব্রতা থাকে কম। মূল ম্যাচ তো মূল ম্যাচই! বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সাফল্য আর ব্যর্থতা মাপা হবে তো এই ম্যাচ দিয়েই! আফগানদের বিপক্ষে তাই পরীক্ষাটা কঠিনই হতে চলেছে দলের।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের লক্ষ্য ৪ থেকে পাঁচটা ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালের পথে এগিয়ে যাওয়ার। সে হিসেবে, বাস্তবতার নিরিখে আফগানিস্তান ম্যাচটা বাংলাদেশের জন্য ‘মাস্ট উইন’। বিষয়টা বাড়তি চাপ হয়ে এলেও আসতে পারে দলের জন্য।

তবে অন্য একটা ফ্যাক্ট বাংলাদেশকে দিতে পারে খানিকটা স্বস্তি। শেষ চার বিশ্বকাপের তিনটিতেই শুরুর ম্যাচে জিতেছিল দল। বাংলাদেশ আজ নিশ্চিতভাবেই চাইবে সংখ্যাটা পাঁচ ম্যাচে ৪ জয়ে উন্নীত করতে। সেটা হলে বাংলাদেশও নিয়ে ফেলবে তাদের লক্ষ্য অর্জনের পথে প্রথম পদক্ষেপটা। 

সম্পর্কিত খবর