‘টেস্ট ক্রিকেট ধ্বংসের নেপথ্যে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ’
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ। প্রতিপক্ষ টুর্নামেন্টে একবার শিরোপা জয়ী দল নিউজিল্যান্ড। তাও স্বাগতিক হিসেবে নামবে মাঠে। অথচ এই সিরিজে নিজেদের সেরা দলকে পাঠাচ্ছে না দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই টেস্টের জন্য ১৪ সদস্যের দলে আনক্যাপড খেলোয়াড়ের সংখ্যা সাত! এরমধ্যে আবার অধিনায়কের নেই কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা! বিস্ময়ে চোখ কপালে উঠার জো।
অথচ ২০১৯ সালে একরকম ঢাকঢোল পিটিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আইসিসি। বলা হয়েছিল এতে করে টেস্ট খেলায় আগ্রহ বাড়তে ক্রিকেটারদের। ফের জৌলুস ফিরে পাবে ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রাচীনতম এই সংস্করণ। এই কি তবে ক্রিকেটারদের সেই আগ্রহের নমুনা?
দুঃখজনক হলেও সত্য, টেস্ট ক্রিকেটের চেয়ে এখনও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের দিকেই ঝুঁক তারকা ক্রিকেটারদের। কেননা, এখানে খুব অল্প সময় ও অল্প পরিশ্রমে মিলে কাড়িকাড়ি টাকা। যেটা কল্পনাও করা যায় না টেস্ট ক্রিকেটে। মূলত, এ কারণে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটটাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন ক্রিকেটাররা। যার সবশেষ উদাহরণ হয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটাররা। নিজ দেশে হওয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট এসএ টি২০ লিগ খেলার জন্য নিউজিল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন না তারা। যা ফরম্যাটটিকে দিচ্ছে অশনি সংকেত।
এ নিয়ে অনেকেই দোষ দেখছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটারদের। রীতিমতো সমালোচনার তীরে বিদ্ধ করছেন তারকা ক্রিকেটারদের। কেউ কেউ বা আবার আঙুল তুলছেন আইসিসি ও বোর্ডের ওপর। ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার মার্ক বুচার অবশ্য বলছেন উল্টো কথা। টেস্ট ক্রিকেট বাঁচাতে চালু হওয়া বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপকেই তিনি দেখছেন এর ধ্বংসের প্রধান অন্তরায় হিসেবে!
তিনি বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট বাঁচানোর চেষ্টা হিসেবে তারা বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করছে। কিন্তু আগে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ দেখার জন্য দুই দেশের সমর্থকরা উন্মুখ থাকত। টেস্ট ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটত। কিন্তু এটা চালুর তিন বছরের ব্যবধানে এখন সেটা দেখা যায় না। আমি মনে করি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলাটিকে আরও খারাপ করে তুলেছে।’
কেবল সমালোচনাতেই থেমে থাকেননি ইংল্যান্ডের হয়ে ৭১টি টেস্ট খেলা বুচার। টেস্ট ক্রিকেটকে বাঁচাতে দিয়েছেন পরামর্শ, ‘এতদিন আসলে ভুলভাবে চেষ্টা করা হয়েছে। টেস্ট বাঁচাতে যে জায়গাগুলো পার্থক্য তৈরি করতে পারে, যেমন, টিভি সম্প্রচারের জন্য রাজস্ব বৃদ্ধি করা, দেশগুলো যেন তাদের সেরা খেলোয়াড়দের ধরে রাখতে সক্ষম হয় সে লক্ষ্যে, টেস্ট ম্যাচের জন্য একটি সর্বজনীন অর্থ প্রদান করা। এটি ঠিক রেখে তারপরে ধনী বোর্ডগুলি যদি তাদের খেলোয়াড়দের কিছু দিতে চায় তারা তা দিতেই পারে- এই জিনিসগুলি ঠিক হলেই দেখবেন অনেকটা ঠিক হয়ে গেছে সব।’