আমি বিসিবির ইতিহাসের সেরা সভাপতি হবো

আমি বিসিবির ইতিহাসের সেরা সভাপতি হবো

সেরা, বিষয়টার সঙ্গে যেন সাকিব আল হাসানের যোগ বেশ পুরোনো। সাকিব তার সব কাজে সেরাটাই চান, এবং সেটা ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই। ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বিকেলে এসে ভাবনায় পরিবর্তন এসেছে বটে, কিন্তু এখনো একটা যায়গায় তার চাওয়াটা রয়ে গেছে একই, সেরা হওয়া!

আজ থেকে ঠিক ১৫ বছর আগে সাকিব আল হাসানের একটা সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছিল। তখন পর্যন্ত ব্যক্তিগত নৈপুণ্য বলতে কালেভদ্রে কিছু ঝলকই বুঝত। কোনো একটা র‍্যাঙ্কিংয়ে সেরা হওয়ার তো কোনো অভিজ্ঞতাই ছিল না কারো! 

সেই তখন সাক্ষাৎকারটায় সাকিব অকপটে বলে দিলেন, ‘আমার কাছে ক্রিকেট মনে, কোনো ডিপার্টমেন্টে ছাড় দেওয়া যাবে না। আমি স্বপ্ন দেখি, আমাকে আন্তর্জাতিক সব ক্রিকেটার তিন ভূমিকাতেই মনে রাখছে । বোলাররা বল করার সময় ভাববে, ব্যাটাররা আমার বল খেলতে গিয়ে ভাববে আবার আমার ফিল্ডিং পজিশনে বল পাঠিয়ে রান নিতে গিয়ে ভাববে।’ 

সে সাক্ষাৎকারটা সাকিব শেষ করেছিলেন এই বলে— ‘অনেক বড় স্বপ্ন দেখি। পারলে আকাশ ছুঁতে চাই।’ এর কিছু দিন পরই সাকিব র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ অলরাউন্ডার বনে যান।

সাকিবের এই ‘বলা আর হয়ে যাওয়া’র মূল রসদটা যে মূলত তার তীব্র আত্মবিশ্বাস, সেটা তখনই বলেছিলেন তার সিনিয়র মোহাম্মদ আশরাফুল। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘দেখুন, সে নেট অনুশীলনে বল তেমন করেই না। কিন্তু ম্যাচে সে ঠিকই উইকেট পাচ্ছে! এমনটা তীব্র আত্মবিশ্বাস না থাকলে হয় না।’

সাকিবের বিশ্বাস, খানিকটা আলাদা দর্শনই তাকে নিয়ে এসেছে এই পর্যায়ে। এবার সাকিবের বিশ্বাসে ভর করেছে আরও একটা বিষয়। ক্যারিয়ার প্রায় শেষের দিকে চলে এসেছে। দূরদ্রষ্টা সাকিব সবসময়ই তার চোখ রেখেছেন দূর দিগন্তে। ক্যারিয়ারের শেষে এসে এখন ভাবছেন খেলোয়াড়ী জীবন ছাড়ার পরের কথা। সারা জীবন যে বিশ্বাস তাকে রসদ জুগিয়েছে বড় কিছুর, সে রসদটা সাকিবকে এখনো অনুপ্রেরণা দিচ্ছে।

নিজের প্রতি তার তীব্র বিশ্বাসের ধারণাটা আবারও মিলল তার দল বাংলা টাইগার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে। তিনি বললেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আমি যখন যাব তখন বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা বিসিবি সভাপতি হবো। এটা আমার বিশ্বাস। পাই না পাই এটা পরের কথা। চিন্তাই যদি না থাকে সেরা হওয়ার, সেরা কাজটা কীভাবে করব?’

তার আগে সুযোগটা আসতে হবে। সে সুযোগটা হাতছাড়া করবেন না কোনোভাবেই, জানান সাকিব। বলেন, ‘বিসিবি সভাপতি হতে পারলে ভালোই লাগবে। বাকিটা জানি না। কখনও যদি এই সুযোগ আসে আমি হাতছাড়া করব না।’

তবে তার আগে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হবে তাকে। চার ক্যাটাগরির কোনো একটি থেকে তাকে হতে হবে বিসিবি পরিচালক, এরপর পরিচালকদের ভোটে হতে পারবেন সভাপতি। তবে এই দূরযাত্রার পথ পাড়ি দেওয়ার সাহস যে সাকিব করবেন নিশ্চিতভাবেই, সেটা তার কথা থেকেই পরিষ্কার। তবে বাকি কথার বাস্তবায়ন হবে কতটুকু, সে প্রশ্ন তোলা রইল সময়ের কাছেই।

 

সম্পর্কিত খবর