ভিনটেজ ডি ব্রুইনায় প্রাণ ফিরে পেল সিটি
‘ছিঁড়িয়াছে পাল/কে ধরিবে হাল/আছে কার হিম্মত?’
সেইন্ট জেমস পার্কে গত রাতে পরিস্থিতিটা এমনই হয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটির। কতো শতো চেষ্টা, তবু ভাঙছে না নিউক্যাসলের রক্ষণ। দল তখন এক গোলে পিছিয়ে, হারের শঙ্কা চোখ রাঙাচ্ছে। তখন একজন খালাসির দরকার ছিল সিটির, যিনি ডরবেন না, লড়বেন। তরিয়ে দেবেন দলের ডুবতে থাকা তরী।
নিউক্যাসলের মাঠে পেপ গার্দিওলার ডুবতে থাকা নৌকাটা গতকাল বাঁচালেন তিনি, যিনি আজ বহু বছর ধরে কাজটা করে আসছেন, সে কেভিন ডি ব্রুইনা। তিনি মাঠে এলেন বদলি হিসেবে, একটা গোল করলেন, যোগ করা সময়ে আরেকটা করালেন; হারতে থাকা সিটি প্রাণ ফিরে পেল তাতে, ভিনটেজ কেভিন ডি ব্রুইনায় ভর করে ম্যাচটা ৩-২ জিতল একাধারে ইংল্যান্ড, ইউরোপ আর বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন সিটি।
ম্যাচ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেপ গার্দিওলা যেন আকাশ ছুঁতে চাইলেন। এরপর মাঠে নেমে এসে এমনভাবে সবাইকে বাহবা দিতে লাগলেন, যেন সিটি কোনো একটা ট্রফি জিতে গেছে। সিটিজেনদের জন্য ম্যাচটা এমন গুরুত্বপূর্ণই ছিল। মৌসুমের শুরুটা ভালো হয়নি। তাতে লিগের শীর্ষস্থানটা এখনো দূর আকাশের তারা হয়ে আছে প্রায় দু’মাস হয়ে গেল। সেটা ফিরে পেতে হলে টানা জয় চাই, সিটি তা পারছে কই?
গতকাল জিতলে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে অ্যাস্টন ভিলাকে টপকে সিটি চলে আসত তালিকার দুইয়ে, ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা লিভারপুলের ওপর চাপটা বাড়ানো যেত তাতে। তবে নিউক্যাসলের মাঠে সে সুযোগটাই কি-না হেলায় হারাতে বসেছিল সিটি!
বের্নার্দো সিলভার গোলে এগিয়ে যাওয়ার ১০ মিনিট পর সিটি ধাক্কাটা খায়। অ্যালেক্সান্ডার আইজ্যাক আর অ্যান্থনি গর্ডন গোল করে বসেন দুই মিনিটের ব্যবধানে। ২-১ গোলে পিছিয়ে বিরতিতে যায় সিটি।
এরপর থেকে একের পর এক চেষ্টা করেই যাচ্ছিল সিটি। কিন্তু কাজের কাজটা হচ্ছিল না কিছুতেই। শেষমেশ ম্যাচের যখন ২১ মিনিট বাকি, তখন ইনজুরি-ফেরত ডি ব্রুইনাকে মাঠে নামান গার্দিওলা। মাঠে নেমে পাঁচ মিনিটে পাঁচ বার বল ছুঁলেন, পঞ্চম ছোঁয়াতে করলেন বাজিমাত।
রদ্রি এর্নান্দেজের কাছ থেকে পাওয়া বলটা বক্সের বাইরে থেকে নিচু এক শটে পাঠান স্বাগতিকদের জালে। যোগ করা সময়ে তার বাড়ানো বলেই সিটি নিশ্চিত করে সিটি। তার এক লব পাস নিউক্যাসল রক্ষণকে তছনছ করে পৌঁছে যায় বদলি খেলোয়াড় অস্কার ববের কাছে। দারুণ ক্লোজ কন্ট্রোলে ডিফেন্ডার আর গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে স্বাগতিকদের স্বপ্নভঙ্গ উপহার দেন অস্কার। সিটি ম্যাচটা জিতে যায় তখনই।