বিপিএলের লভ্যাংশ ভাগাভাগি করবে না বিসিবি
বিপিএল শুরুর আগে প্রতিবারই কিছু বিতর্ক উঠবে। তারপর সেই তর্ক-বিতর্ক হল্লা নিয়ে বিপিএল মাঠে গড়াবে। বিষয়টি যে অলিখিত একটা ‘নিয়মই’ হয়ে দাঁড়িয়েছে!
উদাহরণ চান? হাতের কাছেই জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ!
গেলবার বিপিএল শুরুর আগে সাকিব আল হাসান বলেছিলেন-বিপিএল হলো যা তা লিগ! এবার টুর্নামেন্ট মাঠে গড়ানোর আগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মালিক নাফিসা কামাল জোর গলায় দাবি তুললেন, লভ্যাংশের ভাগ দিতে হবে। নইলে সামনের বছর থেকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স দল গড়বে কি না তা নিয়ে সংশয় আছে।
বিপিএলের লভ্যাংশ ভাগাভাগির একটা প্রতিশ্রুতি বহু আগে দিয়েছিল বিসিবি। সেই টুর্নামেন্টের শুরুর সেই সময় এমন একটা আশা দিয়েছিল বিসিবি বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে। কিন্তু বিপিএলের দশম আসরে এসেও সেই প্রতিশ্রুতি পালন হলো না।
এবারের আসর শুরুর আগে বিসিবি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এই টুর্নামেন্টের লভ্যাংশ ভাগাভাগির কোনো ইচ্ছে তাদের নেই। এই প্রসঙ্গে বিপিএলের গর্ভর্নি কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক বলেন, ‘বিপিএলে আমরা প্রফিট শেয়ারিং মডেলে যাবো কি যাবো না সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা কিছু জানাতে পারি না। ওটা পুরোপুরি বিসিবির বোর্ডের সিদ্ধান্ত। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বোর্ড থেকে আমাদেরকে একটা গাইডলাইন দিয়ে দেওয়া হয়, আমরা সেটাই অনুসরণ করি। বিপিএল শুরুর প্রথম বছর আমাদের প্রফিট শেয়ারিং মডেলের একটা সিস্টেম ছিল। কিন্তু সেটা আমাদের এখানে শেষপর্যন্ত কার্যকর হয়নি। তখন বিপিএলে অনেক রকমের অনিয়ম ছিল। এমনকি খেলোয়াড়দের পেমেন্টস হতো না এমন উদাহরণও রয়েছে। দ্বিতীয় বিপিএল থেকে আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরও দেখেছি অনেক খেলোয়াড়ের পেমেন্ট পাওনা রয়ে গিয়েছিল। আমাদেরকে আরবিটট্রেশনে যেতে হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ঝুট ঝামেলায় পড়তে হয়েছিল। পরে ফ্র্যাঞ্চাইজি ও খেলোয়াড়দের নিয়ে বসে আমাদের সমঝোতার ভিত্তিতে এসব বিষয় সমাধান করতে হয়েছে। আমাদের এই রেভিনিউ শেয়ারিং মডেলের অভিজ্ঞতা মোটেও ভালো না। তাছাড়া বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় টি- টোয়েন্টি লিগে ফ্র্যাঞ্জাইজিগুলো যে টাকা দিয়ে মালিকানা কেনে এখানে যদি সেই পরিমান অর্থ দিয়ে দলে মালিকানা কেনেন আমাদের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো তাহলে তো আমাদের লভ্যাংশ ভাগাভাগি করতে কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু সেক্ষেত্রে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে দলের মালিকানা কিনতে হবে ১৫/১৬ কোটি টাকা দিয়ে। যদি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো এতে সম্মত হয় তাহলে আমার মনে হয় না বোর্ডেরও কোনো আপত্তি থাকবে।’
বিপিএল সদস্য সচিবের কথায় স্পষ্ট যে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিসিবি এই টুর্নামেন্টের লভ্যাংশ শেয়ারের চিন্তাটা মাথা থেকে বাতিল করে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘প্রথম দুবছর আমরা এই শেয়ারিং মডেলের পদ্ধতি অনুসরণ করেছিলাম কিন্তু আমাদের সেই অভিজ্ঞতা মোটেও সুখকর কিছু ছিল না। তাই আমরা সেই সিস্টেম থেকে সরে এসেছি।’
মল্লিক জানান, ‘আমাদের আর্থ-সামাজিক যে কাঠামো সেটাকেও তো মাথায় রাখতে হবে। আমরা এখন যে পরিস্থিতিতে আছি তাতে লভ্যাংশ ভাগাভাগি করে এই টুর্নামেন্ট টিকিয়ে রাখা যাবে না। আর্থিক বিষয়টা এখন আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মালিককে তাদের সিদ্ধান্ত তাহলে জানিয়ে দিল বিসিবি। দশবারের টুর্নামেন্টে চারবারের চ্যাম্পিয়নরা এখন কি সিদ্ধান্ত নেয় সেটাই দেখার বিষয়।