একাদশে বাড়তি স্পিনারের খোঁজে বাংলাদেশ

একাদশে বাড়তি স্পিনারের খোঁজে বাংলাদেশ

এম. এম. কায়সার, ধর্মশালা থেকে 

কড়া রোদে দু’বার মাঠে এলেন কোচ চন্দিকা হাতুড়েসিংহে ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। দুপুরে একবার। বিকেলে শেষবার। দু’বারই একই কাজে; উইকেট পরিদর্শনে। ধর্মশালার উইকেট কেমন হবে, ম্যাচে কেমন আচরণ করবে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেই কোচ অধিনায়কের এই যৌথ প্রয়াস। 

  উইকেট কেমন হবে? সেই প্রশ্নের উত্তরও সম্ভবত পেয়ে গেছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। তারই প্রতিফলন দেখা গেল দলের অনুশীলনে। প্র্যাকটিস নেটে স্পিনার শেখ মাহেদিকে বেশ তৎপর দেখা গেল। শুধু বল হাতেই নয়, ব্যাটিংয়েও লম্বা সময় নিলেন। পরীক্ষার আগের রাতের প্রস্তুতির মতো। বড় কোনো বিস্ময় না হলে মঙ্গলবারের ম্যাচে বিশ^কাপে অভিষেক হচ্ছে এই ফিঙ্গার স্পিনারের। 

ধর্মশালায় আফগান বধ ম্যাচে স্পিনাররা বেশ ভালো সাফল্য পেয়েছিলেন। এখানকার উইকেটে বেশ টার্নও ছিল। সেই ম্যাচে সাকিব-মিরাজের স্পিনের ওপর ভরসা করে নেমেছিল বাংলাদেশ। আর ব্যাটিংয়ে শক্তি বাড়াতে সবশুদ্ধ আটজন ব্যাটার একাদশে রাখে। ইংল্যান্ড ম্যাচে সম্ভবত সেই পরিকল্পনা থেকে সরে আসছে দল। দলে বাড়তি স্পিন শক্তি বাড়াতে আগের ম্যাচের একাদশ থেকে একজন ব্যাটসম্যানকে কমিয়ে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। আর সেই পরিকল্পনারই অংশ হিসেবে ইংল্যান্ড ম্যাচের একাদশে শেখ মাহেদি সম্ভবত খেলছেন। 

প্রশ্ন হলো কার জায়গায়?

মাহমুদল্লাহ রিয়াদ ছাড়া যে আর কারোর একাদশ থেকে বাদ পড়ার কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না!

তবে ধর্মশালার উইকেট স্লো এবং লো বাউন্সের হবে কিনা সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেয়েও এই ম্যাচের প্রিভিউয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা করে নিয়েছে এই মাঠের আউটফিল্ড। প্রচন্ড সমালোচনা হচ্ছে ধর্মশালা স্টেডিয়ামের আউটফিল্ডকে ঘিরে। দৌড়ানোর সময় এই মাঠের ঘাস উপড়ে নিচের বালি বেরিয়ে পড়ছে। বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচের সময় বেশ কয়েকবার এমন ‘দুর্ঘটনা’ ঘটে। বিশেষ করে বোলিং রানআপে অংশে বারবার বোলাররা এই সমস্যায় পড়েন। ভাগ্য ভালো যে সেই ম্যাচে কোনো বোলার বা ফিল্ডার আহত হননি। কিন্তু এই মাঠের আউটফিল্ডের অবস্থা দেখে সাবেক এবং বর্তমানের অনেক ক্রিকেটার ফেটে পড়েছেন। কাল সংবাদ সম্মেলনে আসা বাংলাদেশ কোচ রঙ্গনা হেরাথকেও শুনতে হলো প্রশ্নটা এই মাঠের সার্বিক যে অবস্থা তাতে কি আপনার দল এই মাঠে খেলে স্বস্তিতে আছে? নাকি আপনার এবং আপনাদের ভিন্ন কোনো অবস্থান আছে? রঙ্গনা হেরাত কর্তৃপক্ষের পক্ষ নেন। ইনিয়ে বিনিয়ে জানিয়ে দেন, আইসিসি যখন এখানে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তখন তার জেনে শুনেই নিয়েছে। এখানে খেলা নিয়ে আমার তেমন কোনো অসন্তোষ নেই।’

 হেরাথ আইসিসির মনরক্ষা করার ভঙ্গিতে কথা বললেও খোঁজ নিয়ে জানা গেল এই মাঠের জন্য যে ঘাস ব্যবহার করা হয়েছে তা খুবই ফাঙ্গাস প্রবন। ফাঙ্গাস ধরায় ঘাস মাঠে আটকে থাকতে পারছে না। বুনোট সরে যাওয়ায় নিচের বালি বেরিয়ে আসছে। এই মাঠে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচেই এমন দশা। সবমিলিয়ে এই ভেন্যুতে খেলা হবে বিশ্বকাপের পাঁচটি ম্যাচ। 

এবার আরেকটি তথ্য জানাই। এই স্টেডিয়ামের মালিকের নাম অনুরাগ ঠাকুর। স্টেডিয়ামে প্রবেশের আধা কিলোমিটার জুড়ে চারধারে কেবল তার ছবি আর ছবি। এই স্টেডিয়াম তার পৈতৃক সম্পত্তি। তার আরেকটি পরিচয় তিনি ভারত সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী। বাড়তি পরিচয়টাও জানিয়ে দেই, তিনি ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট। 

ভারতীয় এক বন্ধু সাংবাদিক হাসতে হাসতে বললেন, ধর্মশালায় গাছের পাতাও অনুরাগ ঠাকুরের নির্দেশে হেলে!

সম্পর্কিত খবর