আনফিট মাশরাফি খেলছেন ফ্র্যাঞ্চাইজির শর্তে!
পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে ম্যাচ খেলার মতো ফিটনেস নেই মাশরাফির। দৌড়াতে পারছেন না ঠিকমতো। ঝুঁকতে কষ্ট হচ্ছে। আগের ম্যাচে বোলিং করেছিলেন কয়েক পা দৌড়ে। রংপুরের বিরুদ্ধে ম্যাচে মঙ্গলবার তো বোলিংই করলেন না। ব্যাট হাতে নেমেছিলেন ওয়ানডাউন পজিশনে। কিন্তু ব্যাট হাতেও ব্যর্থ। ৬ রান করে রান আউট হয়ে ফিরে আসেন।
ফিটনেস নেই। তারপরও খেলছেন। অধিনায়কত্ব করছেন। দলের জন্য তেমন কোনো প্রভাবও রাখতে পারছেন না এমন সময়টায় এই কায়দায় খেলে।
প্রশ্ন উঠছে, এটা কি আদর্শ কোনো উদাহরণ হচ্ছে কি না?
৪ উইকেটে ম্যাচ হারের পর সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি মেনে নিলেন- ‘মানছি, এটা কোনো আদর্শ পরিস্থিতি না। তারপরও খেলতে হচ্ছে। ফ্র্যাঞ্চাইজির চাওয়া আছে। অনেক কিছু দাবি দাওয়া আছে। সেই শর্ত পূরণ করতে হয়। আমি সেই বিষয়টা এখানে বলতে চাইছি না। শরীরে বেশি সমস্যা নেই। শুধু হাঁটুতে সমস্যা আছে।’
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে এই এক সমস্যা। মালিকের মন মতো সবকিছু হতে হবে। আপনি ফিট না হলেও মাঠে নামতে হবে! তাতে আনফিট শরীর আরো আনফিট হোক না কেন! সিলেট স্ট্রাইকার্সের ফ্র্যাঞ্চাইজি নাকি বলেছেন, মাশরাফি মাঠে থাকলেই হলো। আর কিছু না করলেও চলে!
এসব যুক্তি কি প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে টিকে? বাংলাদেশ বলেই এমনসব সম্ভব হচ্ছে। হেঁটে হেঁটে যে কায়দায় আগের ম্যাচে মাশরাফি বোলিং করেন তাতে তিনি উইকেট পেয়েছেন বটে কিন্তু পুরো পরিস্থিতি বা দৃশ্যটা ক্রিকেটের জন্য সহনীয় বা সুন্দর কিছু হচ্ছে না। দেখে মনে হচ্ছে জোর করে কাউকে শুধুমাত্র কিছু স্বীয় স্বার্থ হাসিলের জন্য খেলানো হচ্ছে। এবং সত্যিকার অর্থেও তাই হচ্ছে।
মাশরাফির স্বীকারোক্তিতেই তো তার প্রমাণ!
এবারের বিপিএলে খেলতে নামার আগে মাশরাফি কোনো অনুশীলনই করেননি। নির্বাচন নিয়ে বিপিএলের আগে ব্যস্ত ছিলেন। খেলার জন্য ফিটনেস ছিল না তার। প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিটনেস হলো পূর্বশর্ত। সেই শর্তের সবচেয়ে বড় অংশটাই ভেঙ্গে মাঠে নেমেছেন মাশরাফি। খেলছেন। আন্ডার পারফর্ম করছেন। দলও হারছে। একবার হারলো ১৭৭ রান তুলে। আরেকবার গুটিয়ে গেল ১২০ রানে মাত্র। দলে প্রভাবক কোনো ভূমিকাতেই নেই মাশরাফি। বিষয় যখন মাশরাফি তখন এমন দৃশ্যটা বড় বেশি অসুন্দর দেখাচ্ছে।
৩০ জানুয়ারি থেকে নতুন জাতীয় সংসদের কার্যদিবস শুরু হচ্ছে। নড়াইল-২ আসন থেকে নির্বাচিত মাশরাফিকে নিশ্চয়ই তখন সংসদ অধিবেশনে ব্যস্ত থাকতে হবে। এবারের সংসদে তার দায়িত্ব আরো বেড়েছে। জাতীয় সংসদে হুইপের পদ পেয়েছেন তিনি। ৩০ জানুয়ারি আবার বিপিএলের খেলাও রয়েছে।
এই সময়টায় মাশরাফি কোথায় থাকবেন, সংসদে নাকি বিপিএলের মাঠে? পরিস্কার উত্তর পাওয়া গেল না মাশরাফির কাছে। বললেন- দেখি চিন্তা করছি!