বিপিএলের ঘটনাবহুল ঢাকা পর্ব
কুমিল্লায় শুরু, কুমিল্লায় শেষ। ঢাকা পর্বটাকে এমন নাম দিয়ে দেওয়া যায় সহজেই। তবে আরও একটা নামও দেওয়া যায়, ঘটনাবহুল ঢাকা পর্ব।
নবাগত দুর্দান্ত ঢাকার কাছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হার দিয়ে শুরু হয়েছিল বিপিএলের এবারের আসর, সে ম্যাচটা দেখেছিল দেশের অন্যতম সেরা পেসার শরিফুল ইসলামের হ্যাটট্রিকও। আর শেষটা হলো ম্যাথিউ ফোর্ডের বীরত্বে বরিশালের বিপক্ষে কুমিল্লার জয় দিয়ে।
নবাগত ঢাকার কাছে কুমিল্লার হারটা অপ্রত্যাশিতই ছিল। সে ম্যাচটাকে যদি অঘটন বলেন, তা হলে বিপিএলের মাঝে বিপিএল দেখল অনেকগুলো ‘ঘটন’। সাকিব-তামিমের দ্বৈরথের দেখা মিলল দ্বিতীয় দিনে, মুশফিকের ব্যাটিং নৈপুণ্য, মাহমুদউল্লাহর ঝলকও দেখা গেল। তবে এতসবের ভীড়ে মাশরাফি বিন মুর্তজা শিরোনামে এলেন নেতিবাচক কারণে, চোট সামলে মাঠে নেমে যে পারফর্মই করতে পারছেন না তিনি!
তবে এত কিছুর ভীড়ে প্রত্যেকটা ম্যাচেই একটা বিষয়ের দেখা মিলেছে অবধারিতভাবে। বিপিএলের এক থেকে আট, এই আটটা ম্যাচেই জিতেছে পরে ব্যাট করা দল। আরেকটু স্পষ্ট করে বললে, টস জিতে শুরুতে বোলিংয়ে নামা দল।
শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত ঢাকাকে দিয়ে, শেষ করল কুমিল্লা। এর মাঝে দারুণ তিনটি রান তাড়ার নজির দেখেছে বিপিএল। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের, ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে খুলনা টাইগার্সের, আর সবশেষ ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে কুমিল্লার।
আগের প্রায় সব বিপিএলে স্পিনারদের দাপট, ব্যাটারদের হাপিত্যেশ নিয়ে কথা শোনা গেছে বেশ। তবে এবারের বিপিএলের প্রথম অংশে অন্তত ছড়ি ঘুরিয়েছেন পেসাররা। আট ম্যাচে ৯৩ উইকেট পড়েছে, যার ৪৮টিই গেছে পেসারদের দখলে। প্রথম ম্যাচেই হ্যাটট্রিক করে বুঝি সেটারই আভাস দিয়েছিলেন শরিফুল ইসলাম।
ব্যাটাররাও রান পেয়েছেন। মুশফিকুর রহিম জোড়া ফিফটির দেখা পেয়েছেন, বাবর আজম রংপুরের হয়ে নেমেই ম্যাচ জেতানো ফিফটি করেছেন, এর আগে এনামুল হক বিজয়, এভিন লুইস, শেই হোপরাও আলো ছড়িয়েছেন খুলনার হয়ে।
টুর্নামেন্টের একেবারে শুরুর দিকে শিরোনামে এসেছেন সাকিব আল হাসান আর তামিম ইকবাল। যদিও পারফর্ম্যান্স হোক কিংবা ফলাফল সব দিক থেকে শেষ হাসিটা তামিমই হেসেছেন। মুশফিক-মাহমুদউল্লাহও ব্যাটিং দিয়ে কেড়েছেন আলো।
মাশরাফি বিন মুর্তজাও আলোচনায় এসেছেন, তবে ভিন্ন কারণে। বয়স ৪০ ছুঁয়ে ফেলেছে গেল বছর। চোটজর্জর শরীরটাও সায় দিচ্ছে না আর। হাঁটুর সমস্যা আবারও ফিরে এসেছে। প্রয়োজন অস্ত্রোপচারের। কিন্তু সেই মাশরাফি এবারও বিপিএলে খেলছেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে। তবে আনফিট থাকায় পারফর্ম্যান্সেও পড়েছে তার ছাপ। দুই ম্যাচ মিলিয়ে উইকেট পেয়েছেন একটা। দ্বিতীয় ম্যাচে তো বোলিংই করেননি। ব্যাটিং করেছিলেন, তবে সেখানেও সুবিধা করতে পারেননি, করেছেন ৬ রান। ফলে সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি।
সব মিলিয়ে বিপিএলের প্রথম পর্বটা বেশ ঘটনাবহুল আটটা ম্যাচই উপহার দিয়েছে এবার।