শোয়েব মালিককে যে দুই কারণে বিদায় করলো বরিশাল

শোয়েব মালিককে যে দুই কারণে বিদায় করলো বরিশাল

ফরচুন বরিশালের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিটা ঠিক এমন– ‘এই মৌসুমের জন্য বিপিএল ছেড়েছেন শোয়েব মালিক।’

সাত শব্দে এক লাইনের বিবৃতিতে তথ্যটা জানালেও ভেতরের খবরটা এতো অল্প বা ছোট কিছু নয়। মাত্র তিন ম্যাচ খেলার পরই শোয়েবকে এক অর্থে বিদায় করে দিয়েছে ফরচুন বরিশাল। অথচ বিপিএলের জন্য ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শোয়েব মালিকের সঙ্গে চুক্তি ছিল ফরচুন বরিশালের। এই সময় পর্যন্ত সবগুলো ম্যাচে খেলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন পাকিস্তানের সাবেক এই অধিনায়ক। ১০ ফেব্রুয়ারির পর পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) খেলতে চলে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু কোনো কথাই যে রইল না!

শোয়েব মালিককে মাত্র তিন ম্যাচ খেলে বরিশাল বিদায় জানিয়ে দিল মূলত দুটো কারণে। প্রথমত: ঢাকা পর্ব শেষ হওয়ার পর শোয়েব ক’দিনের ছুটি চান। সিলেটে দল মাঠে নামার আগের সময়টা দুবাইয়ে কাটাতে চান। সেখানে তার নববিবাহিত স্ত্রী রয়েছেন। ফরচুন বরিশাল কর্তৃপক্ষ তার সেই ছুটি মঞ্জুরও করে। তবে শর্ত ছিল সিলেট পর্বের প্রথম ম্যাচ থেকেই তাকে যেন পাওয়া যায়। 

শোয়েব সেই শর্তও ভাঙ্গলেন। দুবাইয়ে ছুটিতে গিয়ে সেখান থেকে জানালেন তিনি সিলেট পর্বে খেলতে চান না। পরের পর্বে খেলবেন। ৪ ফেব্রুয়ারি দলে যোগ দেবেন। শোয়েবের এই নতুন দাবি শুনে বেঁকে বসে ফরচুন বরিশাল। সিলেট পর্ব শেষ হবে ৩ ফেব্রুয়ারি। পুরো একটা পর্বে এমন একজন ক্রিকেটারকে যদি না পাওয়া যায় তাহলে তাকে দলে রাখা কেন? লাভ-ক্ষতির অঙ্ক কষে ফরচুন বরিশাল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। শোয়েবকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তোমাকে তাহলে আমাদের আর প্রয়োজন নেই। তুমি পুরো বিপিএল থেকেই ছুটি নিতে পারো!

এক অর্থে গোস্বা করেই ফরচুন বরিশাল এই সিদ্ধান্ত নেয়। মালিককে টুর্নামেন্টের প্রথম পর্ব শেষে দল থেকে ছেঁটে ফেলার দ্বিতীয় কারণ হলো তার এক ওভারে তিনটি নো বল করার সন্দেহজনক ইস্যুটি। 

খুলনা টাইগার্সের বিরুদ্ধে টুর্নামেন্টে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ৮ উইকেটে হারে বরিশাল। ১৮৭ রানের বিশাল সঞ্চয় গড়েও সহজেই ম্যাচ হারে তামিম ইকবালের দল। সেই ম্যাচের চতুর্থ ওভারে শোয়েব মালিক বোলিং করেন। তাতেই তার নো বল হলো ৩টি! সবমিলিয়ে তার সেই ওভারে খরচা হলো ১৮ রান। ম্যাচের সবচেয়ে খরুচে ওভার ওটাই। একজন স্পিনার ওভারে ১৮ রান দিতেই পারেন। কিন্তু তাই বলে এক ওভারেই তিনটি নো বল! এর মধ্যে শেষের নো বল যেটি হলো সেটা ছিল পপিং ক্রিজ থেকে প্রায় একহাত দুরে। যেন ওটা অবশ্যই নো বল হয়, এমন নিশ্চয়তা নিয়ে বোলার বল করলেন!

শোয়েবের সেই ওভার এবং নো বল কান্ডে সবাই অবাক। মাঠে দাড়ানো অধিনায়ক তামিম ইকবালও জিজ্ঞাসু চোখে তাকালেন। চারধারে হাসাহাসি উঠলো। মূহুর্তের মধ্যেই সন্দেহের তীর ছুটলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। 

পুরো ম্যাচে শোয়েব মালিককে আর বোলিংয়ে ডাকল না বরিশাল। পরের ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিরুদ্ধে তো তাকে বোলিংয়ে রাখলোই না বরিশাল।

খুলনার বিরুদ্ধে করা শোয়েবের সেই ওভার বিপিএলের প্রথম পর্বের সবচেয়ে খারাপ বোলিং এবং সন্দেহের নজির হয়ে রইল! ৫২৮টি টি- টোয়েন্টি খেলা একজন ক্রিকেটার ঠিক কেন এবং কি কারণে এক ওভারে একই কায়দায় তিন তিনটি নো বল করবেন, সেই প্রশ্নের সঠিক খোঁজে তদন্তের দাবি উঠতেই পারে!

বরিশাল সামনের সময় সেই বদনামের আর ভাগীদারও হতে চাইলো না। শোয়েবের সঙ্গে এই বিপিএলে তাদের চুক্তি এখানেই শেষ। আর শোয়েব পিসিএলের আগে দুবাইয়ে নববিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে হানিমুনে!

এবারের বিপিএলে শোয়েব মালিকের পারফরমেন্স:    

প্রতিপক্ষ রান বল বোলিং
রংপুর ১৭ ১৮ ৯/১
খুলনা ১৮/০
কুমিল্লা

সম্পর্কিত খবর