শুরুতেই শেষ যে ম্যাচ!
জনি বেয়ারস্টো ৫২। দাভিদ মালান ১৪০। জো রুট ৮২। রানগুলোর যোগফল ২৭৪। আর ৫০ ওভার শেষে ইংল্যান্ড দল ৯ উইকেটে ৩৬৪। এবার বিয়োগ করুন। ৩৬৪ থেকে ২৭৪। যা পেলেন তা থেকে অতিরিক্ত খাতের ৭ রান বিয়োগ করুন। এবার যা পেলেন সেটা এই ম্যাচে ইংল্যান্ডের বাকি ব্যাটসম্যানদের রান।
-হিসেব পরিষ্কার।
দলের রানের প্রায় সবটুকুই করলেন ইংল্যান্ডের ওই তিনজন। যারা ব্যাট করেন এক, দুই ও তিনে।
এবার বাংলাদেশের দিকে হিসেব মেলাই। শুরুর পাঁচ ব্যাটসম্যানের রানের যোগফল ৮৬। যার মধ্যে কেবল লিটন দাসের রানই ৭৬। শুরুর পাঁচ ব্যাটসম্যানের মধ্যে দুই তিন চার পাঁচ নম্বরের কেউ ডাবল ফিগারেও পৌছাতে পারলেন না!
ইংল্যান্ডের প্রথম উইকেট পড়লো ১১৫ রানে। বাংলাদেশ শুরুর দশ ওভারের মধ্যে চার উইকেট হারিয়ে দিশেহারা। ব্যাটিংয়ের বাকি সময় কাটলো শুধু সংগ্রাম করেই। ম্যাচ থেকে তো বাংলাদেশ ছিটকে গেছে সেই কবে? সম্ভবত ইংল্যান্ডের ইনিংসের পরপরই!
স্যাম কারেনের বলে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে তাসকিনের উইকেট যখন ভাঙ্গলো এই ম্যাচের সমাপ্তি সেখানেই। সেটা কেবল আনুষ্ঠানিকতা। এই ম্যাচ ইংল্যান্ড মূলত জিতে নিয়েছে তাদের ইনিংসে স্কোরবোর্ডে ৩৬৪ রানের বিশাল স্বাস্থ্যের সঞ্চয় জমা করেই। আর ব্যাটিংয়ের শুরুতে দল ৯ ওভারে ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর অপেক্ষা তখন শুধু একটাই-কত রানে হারছে বাংলাদেশ, কত রানে জিতছে ইংল্যান্ড?
১৩৭ রানের বড় ব্যবধানে জিতে ইংল্যান্ড সেই উত্তরটা জানিয়ে দিল। ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের শুরুর ঝড় সামাল দিতে পারেনি বাংলাদেশের বোলিং। আবার ব্যাটিংয়ের শুরুটাও আশা জাগানোর মতো কিছুই হলো না। এক অর্থে দুই অর্ধের শুরুতেই শেষ এই ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে বাড়ার স্বপ্ন।
বড় ব্যবধানে হারা এই ম্যাচের ঠিক কোথায় কোথায় বড় ভুল করলো বাংলাদেশ? ম্যাচ শেষে সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বসা বাংলাদেশ কোচ চন্দিকা হাতুরুসিংহে জানালেন, ভুল তো অনেক জায়গায় হয়েছে। এই উইকেটে ঠিক যে জায়গায় বল করার প্রয়োজন, বোলাররা সেটা করতে পারেনি। শুরুতে উইকেট হারানোটাকে আমরা বাজে অভ্যাস বানিয়ে ফেলেছি। কোনো চ্যালেঞ্জ তৈরি করার আগেই শুরুর দিকের ব্যাটসম্যানরা ফিরে আসছেন। ওপেনিং জুটিতে বারবার ব্যর্থতা অবশ্যই দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে। শুরুর বোলিংয়ে বোলাররা রিদম হারাচ্ছেন। সঠিক লাইন লেন্থে বল রাখতে পারছে না। পাওয়ার প্লেতে ব্যাটিং- বোলিং দুই জায়গায় দলকে বিবর্ণ দেখাচ্ছে।
এক জয় এবং এক হার নিয়ে বিশ্বকাপে এখন বাংলাদেশের সাফল্য ব্যর্থতার হিসেব নিকেশ সমান সমান। সামনে প্রতিপক্ষ আরো কঠিন। ম্যাচ শেষে তাসকিন আহমেদও আরেকবার মনে করিয়ে দিলেন- বিশ্বকাপের সব ম্যাচই কঠিন। বিশ্বকাপ কঠিন!
এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেই কঠিন সময়টা শুরু হয়ে গেল।