বাজবল ১, ভারত ০
‘ইংল্যান্ড এখানে বাজবল খেললে ম্যাচ দুই দিনেই শেষ হয়ে যাবে’ – কথাটা মোহাম্মদ সিরাজের। সিরিজ শুরুর আগে একটা সতর্কবার্তাই দিয়ে রেখেছিলেন প্রতিপক্ষকে। সুনীল গাভাস্কার তো আরেক কাঠি সরেস। বলেছিলেন, ‘ইংল্যান্ডের বাজবলের জবাব ভারত দেবে ‘বিরাটবল’ দিয়ে’। কথার খেলায় ভারত এগিয়ে ছিল বেশ। ম্যাচের তৃতীয় দিন পর্যন্ত মাঠেও ছিল এগিয়ে। তবে এরপরই ইংল্যান্ড তাদের খেলটা দেখাল, ‘বাজবল’ দিয়ে। ২৩১ রানের লক্ষ্য ঝুলিয়ে দিয়েও শেষমেশ জিতল ২৮ রানে। তাতে অন্তত প্রথম লড়াইটা শেষে ‘বাজবল ১, ভারত ০’ এ কথা বলাই যাচ্ছে।
দিনটাকে দুটো ভাগে ভাগ করা যায়। দুটো ভাগেই হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধী স্টেডিয়ামে রাজ করে গেলেন দুই ইংলিশ।
প্রথম ভাগটা ওলি পোপের। ওপাশে একের পর এক সঙ্গীদের আসা যাওয়ার মিছিল দীর্ঘ হচ্ছিল, পোপ ছিলেন ঠায় দাঁড়িয়ে। জ্যাক লিচ প্রায় খোঁড়াতে খোঁড়াতে এলেন ক্রিজে। যদি আরও কিছু রান বাড়ানো যায়, যদি পোপকে ডাবল সেঞ্চুরিটা করতে দেওয়া যায়! তবে শেষমেশ তা আর হয়নি, পোপ স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন যশপ্রিত বুমরাহর বলে।
ড্রেসিং রুমে বসে ছিলেন কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, তাকে ছোঁয়া হলো না। ২০১০ সালে ভারতের মাটিতে দ্বিতীয় ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েছিলেন তিনি। পোপ আজ ব্যর্থ হওয়ায় সেটাই হয়ে রইল দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের মাটিতে সফরকারী কোনো ব্যাটারের শেষ ডাবল সেঞ্চুরি।
পোপ দিনটা শুরু করেছিলেন ১৪৮ রান নিয়ে। সঙ্গী রেহান আহমেদের সঙ্গে জুটিটা ৬৪ রানের বেশি যায়নি। এরপর হার্টলির সঙ্গে গড়েন ৮০ রানের ইনিংস। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন হার্টলি। এরপর মার্ক উডও টেকেননি। ফলে নামতে হয় চোটগ্রস্ত লিচকে, যিনি এই টেস্টে আর বল করবেন কি না, তা নিয়েই ছিল শঙ্কা। এরপরই ৪ রানের আক্ষেপ নিয়ে বিদায় নেন পোপ নিজে। ইংল্যান্ডের বোর্ডে জমা পড়ে ২৩০ রান।
পুঁজিটা বেশ ভালো, অন্তত চতুর্থ ইনিংসের কথা মাথায় রাখলে। দিনের দ্বিতীয় অংশে সেটা প্রমাণ করেন অভিষিক্ত টম হার্টলি। প্রথম ইনিংসে দুই উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। তবে ভারতকে অতোটা বিপাকে ফেলতে পারেননি। ফেললেন আজ। যশস্বী জয়সওয়ালকে ফিরিয়ে তার শুরু, এরপর একে একে রোহিত শর্মা, শুভমান গিল, অক্ষর পাটেলদের ফিরিয়ে একটু একটু করে ভারতকে ঠেলে দিতে থাকেন খাদের দিকে।
ভারত অবশ্য ম্যাচে ফেরার একটা চেষ্টা চালিয়েছিল অষ্টম উইকেট জুটিতে। স্রীকার ভরত ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের জুটিটাকেও ভাঙেন এই হার্টলিই, দারুণ এক বলে বোল্ড করেন ভরতকে। তুলে ফেলেন ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ উইকেট। তিনি সেখানেই থামেননি। এরপর তিনি তুলে নিয়েছেন অশ্বিন আর সিরাজের উইকেটও। তাতে তিনি ম্যাচটা শেষ করেন ৭ উইকেট নিয়ে। আর ইংল্যান্ড তুলে নেয় ২৮ রানের দারুণ এক জয়।