পাঁচ ঘণ্টার নাটক শেষে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ-ভারত

পাঁচ ঘণ্টার নাটক শেষে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ-ভারত

নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ১-১ সমতায় থাকা বাংলাদেশ-ভারতের ফাইনাল ম্যাচটা গড়ায় টাইব্রেকারে। পেনাল্টি শুটআউটে দুই দলের সবাই জাল কাঁপিয়েছেন, সমতা সেখানেও, ১১-১১। ম্যাচের এই যখন অবস্থা তখন রেফারিরা সিদ্ধান্ত নেন টসের মাধ্যমে শিরোপা ফয়সালার। সেই টসে জিতে ভারত শিরোপা জয়ের আনন্দ করে। নেচে-গেয়ে উৎসবও করা হয়ে যায় তাদের।

আসল নাটকের শুরুটা তারপর। বাংলাদেশ দল ফল প্রত্যাখ্যান করে মাঠে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকে। রেফারিদের সাথে একচোট বচসাও হয়ে যায়। মাঠের মধ্যে চলে হট্টগোল। তবে সাধারণত আন্তর্জাতিক ফুটবলে হেরে যাওয়া দলগুলো কোনো কারণে ফল নিয়ে প্রতিবাদ জানালেও সেটা বদলায় না। তবে আজ তার ব্যতিক্রম হয়েছে। আপনি বলতেই পারেন 'অনলি ইন বাংলাদেশ'!

ম্যাচের ফল নির্ধারণের ধরন নিয়ে বাংলাদেশ আপত্তি জানানোর পর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শুরু হয়ে দেনদরবার। ম্যাচ শেষের পর তখন অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে। হঠাৎ সাফের ম্যাচ কমিশনার জানিয়ে দেন, টসের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ভারতের ফাইনাল জয়ের সিদ্ধান্তও বাতিল হয়েছে।

এই সিদ্ধান্তের পর ভারত দল মাঠ ছেড়ে চলে যায়, তবে বাংলাদেশ দল তখনও মাঠে অবস্থান করছিল। ভারত দল আর মাঠে না ফিরলে বাংলাদেশকে জয়ী ঘোষণা করা হবে, এমন গুঞ্জনও শোনা যায়। তবে ভারত আর না ফেরায় পাঁচ ঘণ্টার নাটকের পর বাংলাদেশ এবং ভারতকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করে কাজ সারে সাফ কর্তৃপক্ষ।

কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ম্যাচ শুরু হতে না হতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। ৮ মিনিটে বাংলাদেশ রক্ষণের ভুলের সুযোগটা নেয় ভারত। মাঝমাঠের একটু ওপর থেকে নিতু লিন্ডার থ্রু থেকে দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে বেরিয়ে যায়। সে বলটা ফাঁকায় পেয়ে যান শিবানি দেবি। বক্সে ঢুকে দারুণভাবে ফিনিশ করেন তিনি। বাংলাদেশ গোলরক্ষক স্বপ্না রানী মণ্ডল এগিয়ে এসেছিলেন জায়গা ছেড়ে। শেষমেশ সেভটা তিনি করতে পারেননি। শিবানি তাকে পাশ কাটিয়ে দারুণভাবে প্লেসিং করে স্বাগতিক দর্শকদের স্তব্ধ করে দেন।

সে গোল শোধ করতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় ৯৩ মিনিট পর্যন্ত। শিরোপা যখন ভারতের জন্য স্রেফ মিনিটখানেকের দূরত্বে, তখন ভারতীয় রক্ষণের ভুলে বল পেয়ে যান ভারতের বিপক্ষে এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের আগের ম্যাচে জয়ের কারিগর সাগরিকা। আবারও তার গোলেই বাংলাদেশ প্রাণ ফিরে পায়। ১-১ গোলের সমতায় নিয়ে আসে ম্যাচ।

১-১ গোলে সমতায় থাকা বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ায়। সেখানে পেনাল্টি শুটআউটে বাংলাদেশ এবং ভারত উভয়ই ১১ বার করে একে অপরের জাল কাঁপিয়েছে। গোলকিপাররা অসহায় হয়ে দেখেছেন সেই দৃশ্য। দলের শেষ খেলোয়াড় হিসেবে টাইব্রেকারে শট নিতে হয়েছে তাদেরও। তবে ২২ পেনাল্টি কিকের পরও যখন ম্যাচের ফল সমতায়, তখন ম্যাচের চতুর্থ রেফারি এসে মূল রেফারিকে কয়েন টসের মাধ্যমে ম্যাচ সমাপ্তির ইঙ্গিত দেন।

সম্পর্কিত খবর