জাদেজাকে ছেলে বলে পরিচয় দিতেও কষ্ট হয় বাবার
খালি চোখে যা দেখা যায় সব সময় সেটাই সত্যি নয়। ঘটনার পেছনেও ঘটনা থাকে। সাদা-কালোর সূক্ষ্ম রেখা থাকে। যা একটু ভেতরে গেলেই টের পাওয়া যায়। কিংবা কখনো কখনো ভেতরেও যেতে হয় না; আচমকা বেড়িয়ে আসে থলের বিড়াল। সত্যিটা জানার পর পরে যায় হইচই। ভারতীয় ক্রিকেটের তারকা অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজার গল্পটাও তেমনি। তার বাবা অনিরুদ্ধ সিং জাদেজার এক সাক্ষাৎকারে রীতিমতো হইচই পড়ে গেছে জাদেজাকে নিয়ে।
যেই বাবার হাত ধরে প্রথম হাঁটতে শেখা। কাঁধে চড়ে স্কুলে যাওয়া। বিয়ের পর মা হারানো নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ সেই বাবার খুঁজটা পর্যন্ত রাখেন না ছেলে। পরিচয় দেন না বাবর। ছেলের সঙ্গে সম্পর্কের এই টানাপোড়নের কথা দীর্ঘদিন কাউকে না জানালেও অবশেষে মুখ খুলেছেন বাবা। তারকা ক্রিকেটার ছেলে ও রাজনীতিবিদ পুত্রবধূর কথা তুলতেই ক্ষোভ ঝরেছে অনিরুদ্ধ সিং জাদেজার কণ্ঠে।
‘আমাকে সত্যিটা বলতে দিন। রবি বা তার স্ত্রী রিভাবা জাদেজার সঙ্গে আমার কোনোও সম্পর্ক নেই। আমরা তাদের ডাকি না, তারাও আমাদের ডাকে না। রবির বিয়ের দুই-তিন মাস পরেই আমাদের ছেড়ে চলে যায় তারা।’
বর্তমানে জামনগরে একা থাকছেন জাদেজার বাবা অনিরুদ্ধ। আর ছেলে থাকছেন সদ্য গুজরাট বিধানসভার সদস্য হওয়া স্ত্রী রিভাবার সঙ্গে। আর এই সবই হয়েছে ২০১৬ সালে জাদেজার বিয়ের পর। যেমনটা হয় অনেক সংসারেই। বিয়ের পর বৃদ্ধ বাবা-মার কথা ভুলে যান সন্তানরা। স্ত্রীর কথা রাখতে আলাদা থাকতে শুরু করেন। জাদেজাকেও তার স্ত্রী রিভাবা তেমনই জাদু করেছে বলে অভিযোগ অনিরুধের।
‘জানি না স্ত্রী তার উপর কী জাদু করেছে। সে আমার ছেলে এটা বলতে আমার হৃদয় পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এখন মনে হয় বিয়ে না করালেই ভালো হতো। ক্রিকেটার না হলেই ভালো হতো। তখন হয়তো আমরা এই পরিস্থিতিতে থাকতাম না।’
অথচ চাইলেই আলো ঝলমলে জীবন হতে পারত জাদেজাকে জন্ম দেওয়া বাবা অনিরুদ্ধের। ছেলেকে নিয়ে গর্বে বুকের ছাতিটা চাওড়া হতে পারত তার। জাদেজার একমাত্র কন্যা ‘নিধান জাদেজা’র সঙ্গে হেসেখেলে কাটতে পারত জীবনের শেষ সময়টা। তবে হলো না কিছুই। ছেলেকে সংগ্রাম করে ক্রিকেটার বানানো মানুষটার কেবলই বাড়ল দীর্ঘশ্বাস। ২২ গজে তারকা খ্যাতি পাওয়া জাদেজাকে পারবেন সেই দায় এড়িয়ে যেতে?