একতরফা জয়ে রংপুর এখন বিপিএলের লিডার
জয়ের টার্গেট পাহাড়সম, ২১২ রান।
কিন্তু জবাবি ব্যাটিংয়ে নামা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ব্যাটিং দেখে যে কোনো সময় মনে হলো না তারা এই ম্যাচ জিততে নেমেছে! শুরুর ৬ ওভারে ১ উইকেটে মাত্র ৩২ রান। ফিল্ডিং যখন গুটিয়ে তখনো চট্টগ্রামের ব্যাটিং শামুকের গতিতে। আবার ৬ ওভার পর ফিল্ডিং ছড়িয়ে ছিটিয়ে তখনো চট্টগ্রামের ব্যাটিংয়ে টার্গেট ছোঁয়ার চ্যালেঞ্জ কই?
ম্যাচ হারের পর চট্টগ্রামের অধিনায়ক শুভাগত হোমও স্বীকার করলেন, টার্গেট অনেক বড় ছিল। এমন টার্গেটের পেছনে ছুটতে হলে শুরুটা ভালো এবং ঝড়ে করা উচিত ছিল আমাদের। তেমন শুরুটা আমরা করতে পারিনি।
১০ ওভার শেষে চট্টগ্রামের ইনিংস দলীয় পঞ্চাশও পেরুলো না। সৈকত আলীকে ঠিক কি বুঝে এই ম্যাচে ওপেনার হিসেবে নামানো হয়েছিল সেই পরিকল্পনা বোঝা গেল না। শুরুর ৩০ বলে করলেন তিনি ১৫ রান। তাতেও কোনো বাউন্ডারি নেই। খানিকবাদে তিন ছক্কায় তার স্ট্রাইক রেটকে বলের সঙ্গে রানের হিসেবের পাশাপাশি নিয়ে গেলেও ততক্ষনে যে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান রেট ২০ এর বেশি!
আর তাই সৈকত আলীর ৪৫ বলের ৬৫ রানের ইনিংস হয়তো তার ব্যক্তিগত সাফল্যের কথা বলছে, কিন্তু দলের জয়ের প্রয়োজন মেটাতে পারল কই? চট্টগ্রামের শুরুর এই ধীরগতির ব্যাটিংয়ের জন্যই শেষে তাদের প্রয়োজন দাড়ায় পাহাড়সম। যে টার্গেটের অনেক পেছনে থেমে গেল তারা। শেষ ২৪ বলে জয়ের জন্য চট্টগ্রামের প্রয়োজন হয় ১০৬ রান! শেষমেষ ম্যাচ হারল তারা ৫৩ রানে।
রান তাড়ার শুরুতে জস ব্রাউনকে হারায় চট্টগ্রাম। টম ব্রুসও থামেন ১৩ বলে মাত্র ১৪ রান তুলে। শাহাদাত হোসেন দিপুর ব্যাটও এদিন হাসল না। ১৩ বলে ৯ রানে ফিরলেন দিপু কাভারে জিমি নিশামের দুর্দান্ত ক্যাচ হয়ে। বোলার ছিলেন সাকিব।
কার্টিস ক্যাম্পার মিডলঅর্ডারে নেমে ২১ বলে ২৪ রান করলেন। অধিনায়ক শুভাগত হোমের স্ট্রাইক রেটও তিনশ’র ওপর থাকলো। কিন্তু শুরুর স্লো ব্যাটিংয়ের কারণেই এই ম্যাচে কোনো চ্যালেঞ্জই দাড় করাতে পারল না চট্টগ্রাম।
শেষ ওভার ম্যাচ জয়ের হিসেব দাড়াল, ৬ বলে চাই ৬৭ রান! এই ম্যাচের হিসেব নিকেষ এবং রংপুরের একতরফা ভঙ্গিতে জয়ের গল্প ওতেই লেখা।
যে উইকেটে পরিকল্পিত ব্যাটিংয়ে রংপুর ২১১ রান তুলল, সেই একই উইকেটে চট্টগ্রামের ইনিংস থামলো ১৫৮ রানে। রংপুরের ৫৩ রানের বড় জয়ের এই ম্যাচে ব্যাটিং-বোলিং-কোচিং, পরিকল্পনা-সববিভাগেই চট্টগ্রাম ছিল অনেক অনেক পিছিয়ে পড়া দল।
মিরপুরের বড় জয়ের এই ম্যাচকে অনেক কারণ স্মরণীয় করে রাখলো রংপুর। চলতি বিপিএলে প্রথমবারের মতো দুশোর ওপর স্কোর গড়া দল তারা। সেই সঙ্গে টানা পাঁচ ম্যাচে জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে নিজেদের স্থানটা আরো পোক্ত করলো রংপুর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: রংপুর রাইডার্স: ২১১/৩ (২০ ওভারে, রনি তালুকদার ২৪, রিজা হেনড্রিকস ৫৮, সাকিব ২৭, সোহান ৩১*, নিশাম ৫১*, অতিরিক্ত ২০, শাকিল ২/১৫)। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ১৫৮/৬ (২০ ওভারে, সৈকত আলী ৬৫, ক্যাম্পার ২৪, শুভাগত হোম ৩১*, নিশাম ২/৩২, সাকিব ২/২৪)। ফল: রংপুর ৫৩ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা: জিমি নিশাম।