লিটন-জ্যাকস-মইনের তাণ্ডব, কুমিল্লার রেকর্ড
২০১৯ সালে রংপুর রাইডার্স গড়েছিল এই রেকর্ড। গেল বছর সে রেকর্ডের খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিল ফরচুন বরিশাল। তবে এক রানের জন্য তা ছোঁয়া হয়নি। এবার বিপিএলে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটা ছুঁয়েই ফেলল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। লিটন দাস শুরুটা করে দিয়ে গিয়েছিলেন, এরপর উইল জ্যাকসের সেঞ্চুরি আর মইন আলীর হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করে ২৩৯ রানের পাহাড় গড়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। নিজেদের নামটা তুলে ফেলেছে বিপিএলের ইতিহাসের পাতায়।
ভুলে ভরা একটা ইনিংস। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স এমনটা ভাবতেই পারে। অধিনায়ক শুভাগত হোম করলেন প্রথম ভুলটা। টস জিতলেন, ব্যাটিং স্বর্গে নিলেন বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত। এখানেই যদি শেষ হতো, তাহলেও বর্তে যেত চট্টগ্রাম। কিন্তু না, তাদের ভুলের মিছিল সেখানে থামেনি। ইনিংস শেষে যার নামের পাশে জ্বলজল করছিল তিন অঙ্কের রান, সেই উইল জ্যাকসও তো ফিরে যেতে পারতেন শুরুতে, তাও আবার রানের খাতা খোলার আগেই!
নিহাদুজ্জামানের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েও সে যাত্রায় বেঁচে যান জ্যাকস, তার ক্যাচটা ফেলে দেন টম ব্রুস। জ্যাকস তার দ্বিতীয় ‘জীবনের’ পূর্ণ ব্যবহারটাই করলেন। চট্টগ্রামের বোলারদের ওপর তাণ্ডবলীলা চালিয়ে তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরিটা।
চট্টগ্রাম ভুল করেছে, সন্দেহ নেই। তাতে অবশ্য কুমিল্লার কৃতিত্ব ম্লান হয় না একটুও। স্থিতধী শুরুর পর লিটন দাস হাত খুলতে সময় নেননি একেবারেই। পাওয়ারপ্লেতে কুমিল্লা যে তুলে ফেলল ৬২ রান, তার কৃতিত্বটা তো তারই! তিনি যখন ফিরলেন, তখন তার নামের পাশে যোগ হয়ে গেছে ৩১ বলে ৬০ রান। এরপর অবশ্য আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান তাওহীদ হৃদয় হতাশ করলেন, ব্যাটিং স্বর্গেও রানের খাতা খোলার আগে ফিরে গেলেন সাজঘরে। ব্রুক গেস্টও তাই, ১০ বল খেলে করলেন মোটে ১১।
তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে গেস্টের বিদায়ের পর নামলেন মইন আলী। এর আগ পর্যন্ত জ্যাকসও খানিকটা চুপচাপই ছিলেন। ২৪ বলে তখন তার রান ৩৫, তিনটে চার আর দুটো ছক্কা... এই তার অবদান। রুদ্ররূপটা ধারণ করলেন এরপর। ওপাশে মইন আলীও ব্যাট চালালেন শুরু থেকেই। দুজন মিলে চতুর্থ উইকেটে যোগ করলেন ১২৮ রান, তাও মাত্র ৫৩ বল খরচায়। ইনিংস যখন শেষ হলো, তখন মইনের রান ২৪ বলে ৫৩। আর ওপাশে? উইল জ্যাকসের ১০৮ রান, ৫৩ বলে; চার মেরেছেন মোটে ৫টা, আর ছক্কা ১০টি!
দুইজনের এই তাণ্ডবলীলায় কুমিল্লা তাদের ইনিংস শেষ করে ২৩৯ রান তুলে। ২০১৯ সালে রংপুর রাইডার্স এই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষেই রেকর্ডটা গড়েছিল। পাঁচ বছর পর এই চট্টগ্রামকেই সইতে হলো আরও একটা রেকর্ডগড়া রান হজমের বঞ্চনা।