আইসিসির মাসসেরা গাব্বায় ইতিহাস লেখা জোসেফ
সময়টা এখন কেবলই শামার জোসেফের। একের পর এক ভালো খবরের মাধ্যমে আলোচনায় আসছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই তরুণ। অথচ ক্যারিয়ারটা মাত্র ২ টেস্টের। এরমধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে গাব্বায় লিখে ফেলেছেন ইতিহাস। জিতে ফেলেছেন ম্যান অফ দ্য ম্যাচ, ম্যান অফ দ্য সিরিজের পুরস্কার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২৭ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে জিতেছেন বহু ক্রিকেট প্রেমীদের হৃদয়। এবার জিতলেন আরও এক পুরস্কার।
জোসেফকে জানুয়ারি মাসের সেরা ক্রিকেটার হিসেবে নির্বাচিত করেছে আইসিসি। তার দিনে নারী ক্রিকেটের মাসসেরার পুরস্কার উঠেছে আয়ারল্যান্ডের অ্যামি হান্টারের হাতে। তবে এসব ছাপিয়ে আলোচনা এখন জোসেফকে নিয়েই।
গত মাসে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে হার না মানার যেই মহাকাব্য তিনি লিখেছেন। পায়ের চোট উপেক্ষা করে বল হাতে তুলে নেওয়ার যেই দৃঢ়তা তিনি দেখিয়েছেন; তার প্রশংসা হয়েছে গোটা বিশ্বেই। ২৩ বছরের এক তরুণের কাছে হার মেনেছে সকল প্রতিবন্ধকতা। তাই মাসসেরার দৌড়ে ইংলিশ ব্যাটার অলি পোপ ও অস্ট্রেলিয়ার তারকা পেসার জস হ্যাজেলউড থাকলেও তা ম্লান হয়ে গেছে তালিকায় জোসেফ থাকায়।
যেন আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপ হাতে পেয়েছেন শামার জোসেফ। ইচ্ছে মতো প্রদীপ ঘসে দৈত্য বের করছেন; আর হুকুম করছেন। সেই হুকুম তামিলে ব্যস্ত দৈত্য। আর সেই সুবাধে একের পর এক সাফল্যের মাল্য গলায় পড়ছেন জোসেফ।
অথচ টেস্ট না খেলে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে ব্যস্ত থাকায় একরকম বাধ্য হয়েই অস্ট্রেলিয়ায় অভিষেক করানো হয়েছিল জোসেফকে। মাথায় আভিজাত্যের টেস্ট টুপি পরিয়ে মাঠে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল মাত্র ৭টি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা নাইট গার্ডের কাজ করা এই তরুণকে। তবে সুযোগটা হেলায় পেলেও রাঙাতে ভুল করেননি জোসেফ।
প্রথম টেস্টে ৫ উইকেট নেওয়ার পর জোসেফ জানিয়েছিলেন, তার সংগ্রামের দিনগুলোর কথা মনে করে তিনি কেঁদেছেন। তবে দ্বিতীয় টেস্ট ৭ উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুর্দান্ত একটা জয় এনে দিয়ে জোসেফ জানিয়েছেন, কতটা খুশি তিনি। সেই এও জানিয়েছেন, পায়ে চোট থাকলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে মাঠে নামতে কোনো ক্লান্তি নেই তার। পায়ে চোট থাকলেও তিনি এখনও পারবেন বোলিংটাকে চালিয়ে যেতে।
হার না মানার এমন দৃঢ় মানসিকতা যার। জয়ের মাল্য তো তার গলাতেই শুভা পায়। জোসেফ এমনি করেই জয় করুক সব প্রতিবন্ধকতা। ডুবতে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেট ফের জেগে উঠুক এই তরুণের ক্রিকেট পাগলামিতে।