চট্টগ্রামে ‘সাকিব ঝড়’
টপক্লাস ইনিংস!
সাকিবের হাফসেঞ্চুরি হতেই চারধার থেকে এই শব্দই শোনা গেল! মাত্র ২০ বলে ফিফটি পুরো। সেই সঙ্গে চলতি টুর্নামেন্টে দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির রেকর্ড সম্পন্ন। ৪ বাউন্ডারি, পাঁচ ছক্কা! দুর্দান্ত ব্যাটিং!!
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সাকিবকে ব্যাট হাতে নামতে হয়। ওপেনার রনি তালুকদার ফিরে যান সিঙ্গেল ডিজিটে। ইনিংসের বয়স তখন মাত্র ১০ বল। নিজের খেলা প্রথম বলটা ডট দিলেন। দ্বিতীয় বলেই লুক উডের বলে দুই রান। সেই এগিয়ে চলা।
ব্যাট হাতে বাকিটা সময় সাকিব যা করলেন তার অন্য নাম ঝড়! পেসার নাহিদুলের পরের ওভারে শেষ দুই বলে দুই ছক্কা। শুরুর ছয় বলে সাকিবের ব্যাটে রান এলো ১৫। এরই মধ্যে অপরপ্রান্ত থেকে আরেক ওপেনার রিজা হেনড্রিকও আউট। ৩.২ ওভারে ২৪ রানে দুই ওপেনারকে হারানোর পর সাকিব রক্ষনাত্মক নয়, বেছে নিলেন আক্রমণ! স্পিন, পেস-সামনে যাকেই পাচ্ছেন তাকেই উড়িয়ে গ্যালারিতে পাঠাচ্ছেন। ব্যাটিং সঙ্গী হিসেবে পেলেন মাহেদি হাসানকে।
ব্যাটে ঝড় তোলা এই ইনিংসে সাকিব সবচেয়ে বেশি তুলোধুনো করলেন স্পিনার নাসুম আহমেদকে। তার এক ওভারেই সাকিব তিন ছক্কা ও দুই বাউন্ডারিতে তুললেন ২৬ রান। চোখের পলকেই হাফসেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌছে গেলেন। ইনিংসের ৬ ওভার শেষে রংপুরের স্কোর ২ উইকেটে ৬৯ রান। এর মধ্যে সাকিবের রানই ৪৬। তাও আবার মাত্র ১৬ বলে!
৪৬ রানে একবার ‘জীবন’ পান সাকিব। লংঅনে সহজ ক্যাচটা তার হাত থেকে ফেলে দিলেন নাহিদ রানা। বেচারা বোলার ছিলেন মাকিদুল। ‘জীবন’ পেয়ে চটজলদি হাফসেঞ্চুরি তুলে নিলেন সাকিব। মাত্র ২০ বলে এলো তার হাফসেঞ্চুরি। চলতি টুর্নামেন্টে বলের হিসেবে এটাই দ্রুততম। আগের রেকর্ডটা ছিল খুলনা টাইগার্সের ওপেনার এভিন লুইসের ২১ বলে, সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিরুদ্ধে।
হাফসেঞ্চুরির পর সাকিবের ব্যাটে ধার কোমল না! পরের ১০ বলে আরো ১৯ রান যোগ করলেন। ১০ ওভারের মধ্যেই রংপুরের ইনিংস একশ ছাড়িয়ে গেল। লুক উডের ফিরতি স্পেলে সাকিব আউট হলে খুলনা যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে। লুককে উড়িয়ে মারতে গিয়ে কাভারে এভিন লুইসের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন। নামের পাশে তখন ৩১ বলে ৬৯ রানের ঝলমলে ইনিংস। স্ট্রাইকরেট ২২২.৫৮। রংপুরের স্কোরবোর্ড তখন রং ছড়াচ্ছে ১১.২ ওভারে ৩ উইকেটে ১৩৩ রান।
রংপুরের এই ঝড়ের মুখে খুলনার বেচারা বোলার হয়ে থাকলেন স্পিনার নাসুম আহমেদ। দুই ওভারে তার খরচ ৫২ রান! এর মধ্যে সাকিব একাই পিটিয়ে তার কাছ থেকে আদায় করলেন ৩৪ রান, তাও মাত্র ১০ বলে!
সাকিবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাহেদি হাসানও ব্যাট চালিয়েছেন। ৬০ করেছেন ৩৬ বলে। এরপর জিমি নিশাম আজ ফ্লপ হলেও পরে নেমে নুরুল হাসান সোহান আর ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসরা রান তুলেছেন সময়ের দাবি মিটিয়ে। তাতে ভর করেই মূলত ইনিংস শেষে রংপুর পেয়ে গেছে ২১৯ রানের বিশাল এক পুঁজি।