সিলেটকে বিদায় করে প্লে অফের দাবিদার বরিশাল

সিলেটকে বিদায় করে প্লে অফের দাবিদার বরিশাল

এই ম্যাচের আগে সিলেট স্ট্রাইকার্সের সামনে হিসেবটা ছিল এমন- জিতলে প্লে অফের ন্যূনতম সম্ভাবনা থাকবে। আর হারলে দুই ম্যাচ আগেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়। অন্যদিকে ফরচুন বরিশাল জিতলে প্লে অফের পথে আরেকধাপ এগিয়ে যাবে। এমন সমীকরণের ম্যাচে ফরচুন বরিশাল ১৮ রানে ম্যাচ জিতে প্লে অফের চারদলের একদল হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা জাগিয়ে রাখল। আর সিলেটের জন্য এবারের বিপিএল আগেভাগেই শেষ। দুর্দান্ত ঢাকার সারিতে তারাও এবারের বিপিএলে ব্যর্থ দল।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শনিবার দুপুরের ম্যাচে ফরচুন বরিশাল টসে জিতে ব্যাটিং বেছে নেয়। শুরুটা ভালো হয়নি তাদের। তামিম ইকবাল ও আহমেদ শেহজাদ উইকেটে সেট হয়ে আউট হন। সৌম্য সরকারও এই ম্যাচে ব্যর্থ ব্যাটার। ৯ ওভারে ৬৫ রানে ৩ উইকেট হারানো বরিশালকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেন কাইল মেয়ার্স ও অভিজ্ঞ মুশফিক রহিম। দুজনে মিলে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বোলিংকে মামুলি বানিয়ে ছাড়েন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইলি মেয়ার্স চলতি টুর্নামেন্টে বরিশালের হয়ে তার প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন। ৩ ছক্কা ও ৩ বাউন্ডারিতে ৩১ বলে ৪৮ রান করে যখন মেয়ার্স শর্ট ফাইন লেগে শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হলেন ততক্ষনে বরিশাল রান অনেক উচুঁতে। মেয়ার্সের সঙ্গী হয়ে মুশফিকুর রহিমও খেলেন দারুণ কার্যকর ইনিংস। ৩২ বলে ৫২ রান আসে মুশফিকের ব্যাটে। বিপিএলের ক্যারিয়ারে এটি তার ২১তম হাফসেঞ্চুরি। আর চলতি আসরে তৃতীয়। এই হাফসেঞ্চুরির সুবাদে টুর্নামেন্টের ১০ ম্যাচে মুশফিকের রান ২৯১। এবারের বিপিএলে সর্বোচ্চ রানের তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন ফরচুন বরিশালের এই উইকেটকিপার কাম ব্যাটার।

মুশফিক ও মেয়ার্সের পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৪৮ বলে যোগ হওয়া ৮৪ রান বরিশালকে বড় সঞ্চয় এনে দেয়। শেষের দিকে নেমে দুই ছক্কায় ৭ বলে অপরাজিত ১৫ রান করেন মেহেদি মিরাজ। বরিশালের স্কোরবোর্ডে তখন ১৮৩ রানের ঝলমলো হাসি।
বিশাল রান তাড়ায় নেমে সিলেট স্ট্রাইকার্সের শুরুটা হলো ভয়াবহ। প্রথম ওভারেই হারায় তারা দুই উইকেট। প্রথম তিন ব্যাটারের সংগ্রহ মোটে ৫ রান! ওপেনার হ্যারি টেক্টর ফিরলেন শূন্য রানে। জায়গা বদলে ওয়ানডাউনে এসে নাজমুল হোসেন শান্তও ফর্মে ফিরতে পারলেন না। মেয়ার্সের বলে সৌম্যর হাতে ক্যাচ দিয়ে তিনিও শূন্য রানে বিদায়।

১০ ওভার শেষের আগেই সিলেটের স্কোরবোর্ডের ভাঙ্গাচোরা চেহারা ৪০ রানে নেই ৬ উইকেট! এই দুরবস্থা থেকে দলকে টেনে তুলেন বেনি হাওয়েল ও আরিফুর রহমান। সপ্তম উইকেট জুটিতে দুজনে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে সিলেটকে ম্যাচে রাখেন। ১৬ ওভার শেষে সিলেটের স্কোর দাড়ায় ৬ উইকেটে ১১১। ম্যাচ জিততে শেষ ২৪ বলে প্রয়োজন হলো ৭৩ রানের। কিন্তু জুটিতে ১০৮ রান যোগ করেও এই দুজনে শেষের রান ও বলের কঠিন দুরত্বের হিসেব মেলাতে পারেননি। দুজনেই হাফসেঞ্চুরি করেন। তবে দলকে জেতাতে পারেননি।

ব্যাটে-বলে এই ম্যাচটা পুরোদুস্তর নিজের করে রাখলেন কাইল মেয়ার্স। ব্যাট হাতে ঝড় তোলার পর বোলিংয়েও দুর্দান্ত পারফরমেন্স। ৪ ওভারে ১ মেডেনসহ মাত্র ১২ রানে ৩ উইকেট। ডটবল ১৬টি। হ্যারি টেক্টর, নাজমুল হোসেন শান্ত ও মোহাম্মদ মিঠুনের প্রাইজ উইকেট শিকার করেন মেয়ার্স। ম্যাচ সেরাও তিনিই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: ফরচুন বরিশাল: ১৮৩/৬ (২০ ওভারে, মেয়ার্স ৪৮, মুশফিক ৫২, মিরাজ ১৫*, তানজিম সাকিব ৩/৪৮)। সিলেট স্ট্রাইকার্স: ১৬৫/৮ (২০ ওভারে, আরিফুর ৫৩, হাওয়েল ৫৭, মেয়ার্স ৩/১২)।
ফল: ফরচুন বরিশাল ১৮ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা: কাইল মেয়ার্স।

সম্পর্কিত খবর