চট্টগ্রামকে শেষ চারে নিলেন তামিম

চট্টগ্রামকে শেষ চারে নিলেন তামিম

তামিমের দিন। এ ছাড়া আর কীইবা বলা যায়?

ক্যারিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে গেলেন তানজিদ হাসান তামিম। তাও আবার এমন এক ম্যাচে, যেদিন দলের বাঁচা মরার লড়াই চলছে! সে ম্যাচে তার দল জিতল। আরেকটু পরিষ্কার করে বললে, তার ১১৬ রানই তো প্রতিপক্ষ খুলনা টাইগার্স পার করল অনেক কায়ক্লেশে! ৬৫ রানের দাপুটে জয়ে শেষ চারও নিশ্চিত করে ফেলেছে তার দল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ‘তামিমের দিন’ না বলে কি আর উপায় আছে?

তামিম শো আজ শুরু হয়েছে একেবারে ইনিংসের গোড়া থেকেই। চট্টগ্রামে যাওয়ার পর থেকেই তিনি আছেন ছন্দে। আগের ম্যাচেই তো, ৭০ রান করেছিলেন, দলকে জেতাতে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন, হয়েছিলেন ম্যাচসেরা। সে ছন্দটা আজও দেখা গেল তার ব্যাটে। তবে আজ তিনি আরও সাবলীল, আরও বেশি বিধ্বংসী। দেশী কিংবা বিদেশী, কাউকেই তো ছাড় দেননি, জেসন হোল্ডারকে বোলারস ব্যাক ড্রাইভে হাঁকিয়েছেন ছক্কা, ওয়েইন পারনেলকে পয়েন্ট দিয়ে সীমানাছাড়া করেছেন! এরপর দেশীয় বোলাররাও তার ঝাপটা সইতে হয়েছে বেশ। তিনি বনে যান এবারের বিপিএলে দ্বিতীয় বাংলাদেশি ও সব মিলিয়ে তৃতীয় সেঞ্চুরিয়ান।

তার এই ইনিংস এল এমন এক সময়, যখন দলের তা দরকার ছিল খুব ভালোভাবেই। দুই অঙ্কে যাওয়ার আগেই বিদায় নেন ওপেনার মোহাম্মদ ওয়াসিম। এরপর সৈকত আলীও ১০০ স্ট্রাইক রেটের ইনিংস খেলে বিদায় নেন পাওয়ারপ্লের পরপরই।

পরের গল্পটা শুধুই তামিমের। হ্যাঁ, টম ব্রুসেরও কৃতিত্ব আছে, সঙ্গ দিয়েছেন তামিমকে। তবে চট্টগ্রামের ইনিংস এগিয়েছে তামিমের হাতে হাত রেখে। দলের তখন সেঞ্চুরিও হয়নি, তামিম ফিফটিতে পৌঁছে গেছেন তার আগে। এরপর নিজের ৫৮তম বলটা খেলে তিন অঙ্কে যখন গেলেন তিনি, দলের রান তখন মোটে ১৪৩।

তামিম ওখানেই থামেননি। এগিয়েছেন সমানতালে। পরের সাত বলে তুলেছেন ১৬ রান, একটা করে মেরেছেন ছক্কা আর চার। সব মিলিয়ে ৬৫ বলে তিনি করেছেন ১১৬ রান, ৮টা করে ছক্কা আর চার মেরে। যখন বিদায় নিলেন, ততক্ষণে নিরাপদ পুঁজির খুব কাছে চলে গেছে তার দল। এরপরও টম ব্রুস আর রোমারিও শেফার্ডের ব্যাটে ভর করে পরের ১১ বলে খুলনা তোলে ২২ রান। তাতে ১৯২ রানের পুঁজি পায় চট্টগ্রাম।

জবাব দিতে নেমে খুলনা শুরুটা ভালোই পেয়েছিল। পারভেজ হোসেন ইমন এক অঙ্কে ফিরে যাওয়ার পর থেকে শেই হোপ আর এনামুল হক বিজয় মিলে আস্কিং রেটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলছিলেন। তখন মনে হচ্ছিল, সাগরিকায় বুঝি আজ আরও একটা থ্রিলার নিয়েই অপেক্ষায় বিপিএল! 

সম্ভাব্য সে থ্রিলারের আগুনে ছাই দিতে চট্টগ্রাম খুব একটা সময় নেয়নি। শহীদুলের শিকার হয়ে ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৫ করা এনামুল বিদায় নিতেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে খুলনার ইনিংস। সে ওভারে এভিন লুইসকেও রান আউট করে সাজঘরে ফেরায় স্বাগতিকরা। 

এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১ রান করা হোপকে ফেরান অধিনায়ক শুভাগত। এরপর আফিফ হোসেন, মাহমুদুল হাসান জয়, ওয়েইন পারনেলদের কেউই দুই অঙ্কে যেতে পারেননি, গেছেন শুধু জেসন হোল্ডার, তার সে ইনিংসও থেমে গেছে ১৮তেই। এমন কিছুর পর খুলনা তানজিদের ১১৬ রানই পেরিয়েছে কষ্টেসৃষ্টে। শেষমেশ গিয়ে থেমেছে ১২৭ রানে। ফলে ৬৫ রানের বিশাল এক জয় তুলে নেয় চট্টগ্রাম। চলে যায় শেষ চারেও।

সম্পর্কিত খবর