দিয়াবাতের জোড়া পেনাল্টিতে আবাহনীকে রুখে দিল মোহামেডান
আবাহনী হ্যাটট্রিকই করে বসল বটে! মোহামেডানের সামনে লিড নিয়েও খুইয়ে বসার হ্যাটট্রিক। গেল বছর ফেডারেশন কাপের ফাইনালে দুই গোলের লিড খুইয়েছিল, সপ্তাহ খানেক আগে ফেড কাপ আবারও এগিয়ে গিয়ে ম্যাচ হেরেছিল! এবার হারতে হয়নি, তবে দুই গোলে এগিয়ে গিয়েও ড্রয়ের বঞ্চনায় পুড়তে হয়েছে তাদের। মোহামেডান তাদের রুখে দিয়েছে ২-২ গোলে।
ম্যাচে হ্যাটট্রিক অবশ্য হয়েছে আরও একটা। সেটা সুলেমান দিয়াবাতের। না, কাগজে কলমে হ্যাটট্রিক নয় অবশ্য, পেনাল্টি থেকে দিয়াবাতে বল জালে জড়ালেন তিন বার, তার দুটোকে গোল হিসেবে ধরা হলো। তার এই দুই গোলেই শেষ পর্যন্ত মোহামেডান পয়েন্ট ছিনিয়ে নিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছ থেকে।
গেল বছর ৩০ মে’র ওই অলটাইম ক্লাসিক ফাইনালের পর থেকে নতুন প্রজন্মের কাছে ম্যাচটার মর্যাদা একটু হলেও বেড়েছে৷ সবশেষ ম্যাচটা হোক, কিংবা আজকের এই দ্বৈরথ, দুটো ম্যাচই অন্তত সে প্রত্যাশাটা পূরণ করতে পেরেছে।
ময়মনসিংহের রফিকউদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে আজ ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে গিয়েছিল আবাহনী। ব্রুনো রোকার দারুণ এক ফ্রি কিক মোহামেডান গোলরক্ষক মোহাম্মদ সুজনকে ফাঁকি দিয়ে গিয়ে জমা পড়ে জালে। প্রথমার্ধে মোহামেডান সমতা ফেরানোর সুযোগ পেয়েছে, আবাহনীর সামনেও সুযোগ এসেছিল ব্যবধান বাড়ানোর, তবে তার কোনোটাই আলোর মুখ দেখেনি শেষ পর্যন্ত। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যেতে হয় আবাহনীকে।
প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও একটা গোল করে বসে আবাহনী। কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্টের এই গোলের পর মনে হচ্ছিল, ম্যাচটা বুঝি এবার বের করেই ফেলল আকাশী-নীলরা! ম্যাচের সময় যত গড়াচ্ছিল, ততই সে ভাবনাটা জোর পেয়ে যাচ্ছিল একটু একটু করে।
সে হিসেবটা তালগোল পাকিয়ে গেল ম্যাচের ৬৫ মিনিটে। পেনাল্টি থেকে দিয়াবাতের গোলে। একটা গোলে পাওয়া লাইফলাইনটা কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে দিতে চায়নি সাদা-কালোরা৷ একের পর এক আক্রমণে সমতাসূচক গোলের সন্ধান করছিল কোচ আলফাজ আহমেদের দল। সুযোগটা এল সেখান থেকেই। ম্যাচের ৭৮ মিনিটে মোহামেডানের একটা ক্রস বিপদমুক্ত করতে গিয়ে হাতে লেগে যায় আবাহনী ডিফেন্ডার মিলাদ শেখের। পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়ে বসেন রেফারি সায়মন হোসেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে আবাহনী ডাগআউট৷ শেষমেশ লাল কার্ড দেখে ডাগআউট ছাড়তে হয় ম্যানেজার কাজী নজরুল ইসলামকে। আবাহনীর পুরো একাদশ চলে এসেছিল ডাগআউটের কাছে, ম্যাচটা তখন পণ্ড হয়ে যায় কি-না, সে শঙ্কাও জেগেছিল দলটার। শেষমেশ খেলাটা মাঠে গড়িয়েছে একটু পরেই।
তবে সেখানেও হলো আরেক প্রস্থ নাটক। দিয়াবাতে পেনাল্টি নিলেন, তা জালেও জড়াল; তবে তা রিটেকের ডাক পড়ল, কারণ পেনাল্টির সময় অবৈধভাবে মোহামেডানের খেলোয়াড় ঢুকে পড়েছিলেন বিপদসীমার ভেতরে। তবে পুনর্বার পেনাল্টি নিতে হলেও দিয়াবাতে ব্যর্থ হননি। আরও এক পেনাল্টি থেকে দলকে গোল এনে দেন, ম্যাচেও ফেরে সমতা।
সে গোলের পর দুই দলের হাতে সময় ছিল সব মিলিয়ে ১৫ মিনিট। তবে গোলের দেখা কোনো দলই পায়নি। শেষমেশ একটি পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় দুই দলকে।
দুই দলের এই ড্রয়ে চূড়ান্ত লাভটা হয়েছে বসুন্ধরার। দুইয়ে থাকা মোহামেডানের সঙ্গে তাদের পয়েন্ট ব্যবধানটা ছিল ৫, এই ড্রয়ের পর তা আরও বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগই পাচ্ছে বিপিএলের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা।