বুদ্ধিদীপ্ত ব্যবস্থাপনায় চট্টগ্রামের চমক
প্লে অফের পাওয়ারহাউজেরা - ৩
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স প্লে অফের চার দলের একটা হবে, এ কথা যদি টুর্নামেন্ট শুরুর আগে আপনাকে বলা হতো, আপনি বিশ্বাস করতেন? খুব সম্ভাবনা আছে যে আপনি উত্তরে ‘না’ই বলতেন।
হওয়াটাই যৌক্তিক ছিল। দলটার সবচেয়ে বড় তারকা ছিলেন তানজিদ হাসান তামিম, আর বিদেশীদের ভেতর নাজিবউল্লাহ জাদরান আর মেরেকেটে জশ ব্রাউনকে বলা যায়। সেই দলটার সেমিফাইনালে খেলা নিয়ে পাঁড় চট্টগ্রাম ভক্তও তো বাজি ধরবেন না!
প্লে অফের ঠিক আগে যেমন দলটির অলরাউন্ডার সৈকত আলী যেমন বললেন, ‘আমরা তো প্রথম থেকেই কাগজে-কলমে সাত নম্বর দল ছিলাম মিডিয়া বলছে।’ এমন কথা কম হয়নি আসলেই। তবে সব হিসেব উলটে দিয়ে সেই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সই এবার বিপিএলের প্লে অফে চলে এসেছে, তাও আবার তৃতীয় দল হিসেবে। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স সবাইকে চমকেই দিয়েছে বেশ। তবে এই চমকটা যে ঝড়ে বকে নয়, তার প্রমাণটা চট্টগ্রামের খেলোয়াড়রা পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই দিয়েছেন। পারফর্ম করেছেন ধারাবাহিকভাবে।
তানজিদ তামিম শুরুর দিকে ধুঁকলেও এখন হয়ে উঠেছেন চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় ভরসার নাম। ৩৮২ রান নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হওয়ার দৌড়ে আছেন তিনি। বিদেশীদের ভেতর টম ব্রুস দারুণ কার্যকরী ছিলেন। ৮ ম্যাচ খেলে তিনি করেছেন ২৬১ রান। লিডারবোর্ডে চট্টগ্রামের খেলোয়াড়দের উপস্থিতি কম বটে, কিন্তু দলের প্রয়োজনে কমবেশি সবাই এগিয়ে এসেছেন কোনো না কোনো ম্যাচে।
এরপর আসুন বোলিংয়ে। গত বছর ২৩ সেপ্টেম্বর যখন ওমানের পেসার বিলাল খানকে দলে ভেড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিল, সেই ফেসবুক পোস্টে প্রতিক্রিয়াগুলোই বলে দিচ্ছিল কতটা তাচ্ছিল্য করা হচ্ছে দলটাকে। তবে সেই বিলাল খান চট্টগ্রামকে হতাশ করেননি। ১২ ম্যাচে ১২ উইকেট পেয়েছেন। বোলিংয়ে দলকে ভালো শুরু এনে দিয়েছেন নিয়মিত।
শুধু বিলাল নয়, সালাউদ্দিন শাকিল, স্পিনার নিহাদুজ্জামান থেকে শুরু করে শুভাগত হোম, বোলিংয়ে চট্টগ্রাম বাজিমাত করেছে ভালোভাবেই।
সমীকরণের বাইরে থেকে এসে হিসেব বদলে দেওয়া চট্টগ্রাম এবার প্লে অফে চলে এসেছে। এবার দলটার লক্ষ্য আরও বড় কিছুর। সৈকত আলীর কথাই শোনা যাক আবার, ‘এখন পর্যন্ত যেহেতু আমরা টপ ফোরে আসতে পেরেছি আমাদের ভিতরে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস আছে যে আমরা ফাইনাল পর্যন্ত যেতে পারব।’
ডার্ক হর্স চট্টগ্রামের জন্য যে তা অসম্ভব কিছু নয় মোটেও, তা এবারের বিপিএল দেখে ভালোই বোঝা গেছে!