তামিম-মায়ার্স তাণ্ডবে ফাইনালের আরও কাছে বরিশাল
এলিমিনেটরের মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। হারলেই বাদ। সেই চাপেই কি-না ভেঙে পড়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ। ফরচুন বরিশালের বোলারদের বিপক্ষে দলটির ইনিংস থামে মাত্র ১৩৫ রানে। বোলারদের সহজ করে যাওয়া পথে হাঁটতে নেমে শুরুতে অবশ্য হুঁচট খেতে হয়েছে বরিশালকে। তবে এরপর আর তেমন বড় ভুল করেনি দলটি। তামিম ইকবাল-কাইল মায়ার্স তাণ্ডবে ৭ উইকেটের বড় জয় তুলেছে বরিশাল। তাতে ফাইনালের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গিয়েছে বরিশাল।
বরিশালের জয়ের পথটা অবশ্য প্রশস্ত করে রেখে গিয়েছিল দলটির বোলাররাই। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চট্টগ্রামকে আটকে রেখেছিল ১৩৫ রানে। সহজ সেই লক্ষ্যে শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি বরিশালের। প্রথম ওভারেই ফিরতে হয় সৌম্য সরকারকে। দ্বিতীয় ওভারে ফিরতে পারতেন তামিম ইকবালও। তবে তার সেই সহজ ক্যাচটি লুফে নিতে পারেনি চট্টগ্রাম। দ্রুত উইকেট তুলে চেপে বসতে পারেনি বরিশালের ব্যাটারদের ওপর।
সুযোগটা অবশ্য কাজে লাগাতে ভুল করেননি তামিম। চট্টগ্রামের গলার কাটা হয়ে ম্যাচের বাকিটা সময় ভুগিয়েছেন এই ব্যাটার। সৌম্য ফিরলে উইকেটে এসে চট্টগ্রামের বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালিয়েছেন কাইল মায়ার্স। মাঝে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে শুভাগত হোমের এক ওভারে মায়ার্স তুলেন ২৬ রান। ম্যাচের মুমেন্টাম হারিয়ে ফেলে চট্টগ্রাম।
এরপর আর খুব একটা কষ্ট করতে হয়নি বরিশালের ব্যাটারদের। মায়ার্স ২৬ বলে ৫০ করে সাজঘরে ফিরলেও ডেভিড মিলার ও মুশফিককে নিয়ে হেসেখেলে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়েছেন তামিম। দলকে কোয়ালিফায়ারে নিয়ে যাওয়ার পথে খেলেছেন ৪৩ বলে ৫২ রানের একটা অনবদ্য ইনিংস। আর তাতে ৩১ বল ও ৭ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে বরিশাল। নিশ্চিত করেছে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার।
বুধবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মাঠে নামবে ফরচুন বরিশাল। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার সেই ম্যাচে তামিমের দলের প্রতিপক্ষ হবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে হারা দল। যা নিশ্চিত হবে আজ সন্ধ্যার ম্যাচে। যেখানে ফাইনাল নিশ্চিতের ম্যাচে মুখোমুখি হবে রংপুর রাইডার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
এর আগে, টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি চট্টগ্রামের ব্যাটাররা। শুরুতেই ফিরতে হয় ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমকে। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান এদিন ফিরে যান মাত্র ৩ রানে। বড় ধাক্কা খায় চট্টগ্রাম। সেই ধাক্কা সামলে উঠার চেষ্টা চালিয়ে ছিলেন জশ ব্রাউন, ইমরানুজ্জামান ও টম ব্রোসরা। তবে কেউই নিজেদের ইনিংসটাকে বড় করতে পারেননি।
টপ অর্ডারদের ব্যর্থতার দিনে দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ হয়েছে চট্টগ্রামের মিডল অর্ডার ও লোয়ার অর্ডারের ব্যাটাররাও। মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে একটা জুটি কিংবা ব্যক্তিগত ইনিংস বড্ড বেশি প্রয়োজন ছিল চট্টগ্রামের। তবে সেই কাজটি করতে পারেনি দলটির কোনো ব্যাটার। চট্টগ্রামের আশা যাওয়ার মিছিলে সর্বোচ্চ রান এসেছে ওপেনার জশ ব্রাউনের ব্যাট থেকে। ২২ বলে ৩৪ রান করেন তিনি। চট্টগ্রামের উইকেটে ধস নামাতে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন বরিশালের কাইল মায়ার্স, সাইফুদ্দিন ও ম্যাককয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ১৩৫/৯; (ব্রাউন ৩৪, শুভাগত ২৪, ব্রোস ১৭; সাইফুদ্দিন ২/২৮, মায়ার্স ২/২৮, ম্যাককয় ২/২৯)
ফরচুন বরিশাল: ১৩৬/ ৩; (তামিম ৫২*, মায়ার্স ৫০, মিলার ১৭; শেফার্ড ১/১৭)
ফল: ফরচুন বরিশাল ৭ উইকেটে জয়ী।