লিটন-হৃদয়ের রেকর্ড জুটিতে ফাইনালে কুমিল্লা, অপেক্ষায় রংপুর
রংপুর রাইডার্সের ১৮৬ রানের জবাবে শুরুতেই হুঁচট খেলেও পথ হারায়নি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। লক্ষ্যটা বড় হলেও দলকে পথ হারাতে দেননি লিটন দাস ও তাওহীদ হৃদয়। দু’জনেই তুলে নেন ফিফটি। গড়েন বিপিএলে নিজেদের ইতিহাসে রেকর্ড ১৪৩ রানের পার্টনারশিপ। জয়ের ভিত পেয়ে যায় কুমিল্লা।
এরপর হৃদয়-লিটন ফিরলেও বাকি কাজটুকু দায়িত্ব নিয়ে সারেন বাকিরা। দলকে নিয়ে যান শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে। রংপুরের লক্ষ্য ৯ বল ৬ উইকেট হাতে রেখেই টপকে যায় কুমিল্লা। অবশ্য হারলেও ফাইনালে যাওয়ার পথটা এখনও খোলা আছে রংপুরের। আর সেটি করতে বুধবার ফরচুন বরিশালকে হারাতে হবে তাদের।
অথচ রান তাড়া করতে নেমে এদিন শুরুতেই উইকেট খুয়াতে হয় কুমিল্লাকে। ফজলহক ফারুকির প্রথম বলেই সাজঘরে ফিরতে হয় সুনীল নারিনকে। তবে দলকে চাপে পড়তে দেননি হৃদয়-লিটন জুটি। শুরুতে কিছুটা সময় নিলেও সময়ের সঙ্গে খোলস ছেড়ে বের হন লিটন। আর এই সময়টাতে রানের চাকা বেশ ভালোভাবেই সচল রাখেন হৃদয়। এরপর চালিয়ে খেলা শুরু করেন লিটনও। তাতে দ্রুত রান এসেছে স্কোরবোর্ডে। একটা সময় দু’জনেই পেয়ে যান ফিফটির দেখা। আর তাদের দল কুমিল্লা পেয়ে যায় জয়ের ভিত।
তবে দারুণ খেলতে থাকা হৃদয়কে অবশ্য শেষ পর্যন্ত থামতে হয়েছে ৬৪ রানে। তার আগে ৪৩ বল মোকাবেলা করে ৪টি ছয় ও ৫টি চার হাঁকিয়ে দর্শক মাতিয়ে গেছেন এই ব্যাটার। সাজঘরে ফেরার আগে লিটনের সঙ্গে গড়েছেন ১৪৩ রানের জুটি। যা দলটির ইতিহাসে রেকর্ড। এর আগে ২০২২ সালে চট্টগ্রামের বিপক্ষে ১৩৮ রানের জুটি ছিল লিটন-ইমরুলের।
এই জুটি ভাঙলে জনসন চার্লসকে নিয়ে জয়ের পথে হাঁটেন লিটন। তবে উইকেটে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি চার্লস। ৩ বলে ১০ রান করে এই ব্যাটার সাজঘরে ফিরলে খানিকপর মাঠ ছাড়েন লিটন। তবে তাতে জয় পেতে কষ্ট হয়নি কুমিল্লার। লিটন ফেরার আগে খেলেন ৫৭ বলে ৮৩ রানের অন্যবদ এক ইনিংস। আর তাতের রংপুরের দেওয়া বিশাল লক্ষ্য এক রকম হেসেখেলে পেরিয়ে যায় কুমিল্লা।
এর আগে, এদিন টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে রংপুরের শুরুটা হয় ভয়াবহ। দলীয় ২৭ রানেই ফিরে গিয়েছিল দলটির তিন ব্যাটার। এরপর নিশামকে নিয়ে হাল ধরেন শেখ মাহেদী। ৩৯ রানের এই জুটি ভাঙে মাহেদী ২২ রানে সাজঘরে ফিরলে। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকেন নিশাম। পথে নিকোলাস পুরান ও অধিনায়ক নরুল হাসানকে নিয়ে দলকে বড় সংগ্রহের পথে রাখেন এই কিউই অলরাউন্ডার। অন্য প্রান্তের ব্যাটাররা রয়েসয়ে ব্যাট চালালেও উইকেটের অন্য-প্রান্তে কুমিল্লার ব্যাটারদের ওপর চড়াও হন এই কিউই।
দলকে শক্ত অবস্থানে দাঁড় করাতে প্রথম ফিফটি হাঁকান। এরপর আরও আগ্রাসী হয়ে এগিয়ে যান সেঞ্চুরির পথে। শেষ ওভারে এতোটাই আগ্রাসী ছিলেন এই ব্যাটার যে দলীয় স্কোরটাকে একলাফে ১৫৭ থেকে ১৮৫ তে নিয়ে যান এই কিউই। মুশফিক হাসানের ওই ওভারে তুলেন ২৮ রান। আর তাতেই রংপুরের ইনিংস থামে ৬ উইকেটে ১৮৫ রানে। যেখানে নিশামের ৯৭ রানের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৭টি ছক্কা ও ৮টি চারে। নিশামের দিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩০ রান এসেছে সুহানের ব্যাট থেকে। কুমিল্লার বোলার মুশফিকের খরচ ৪ ওভারে ৭২ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:
রংপুর রাইডার্স ১৮৫/৬; (নিশাম ৯৭*, সুহান ৩০; নারিন ১/১১)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ১৮৬/৪; (লিটন ৮৩, হৃদয় ৬৪; ফারুকী ২/২৭)
ফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৬ উইকেটে জয়ী।