চেন্নাইয়ে শুরুতেই বিষণ্ণ বাংলাদেশ

চেন্নাইয়ে শুরুতেই বিষণ্ণ বাংলাদেশ

শুরুতেই লিটন দাস আউট! শুরু বলতে একদম ম্যাচের প্রথম বলেই! সেই বর্ননা আগে শুনি। ফাস্ট বোলার ট্রেন্ট বোল্টের বলে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এলেন লিটন। খানিকটা হাঁটার ভঙ্গিতে সামনে বাড়লেন। উড়িয়ে ছক্কা মারার ভঙ্গি স্লাইস করার ভঙ্গিতে কোনাকুনি শটস খেললেন। বল আকাশে ভাসলো। ফাইন লেগ কর্নারের দিকে উড়ে গেল। সেখানে বাউন্ডারি সীমানা পাহারায় থাকা নিউজিল্যান্ড ফিল্ডার ম্যাচ হেনরি শুরুতেই এমন ক্যাচের জন্য প্রস্তত ছিলেন না। কিন্তু সেই অফ ব্যালান্স সামাল দিয়ে লাফিয়ে দু’হাতে ক্যাচটা নিলেন।

লিটন আউট শূন্য রানে, ওটা ছিল ম্যাচের প্রথম বল। স্কোরবোর্ডে বাংলাদেশের জমা ০ রানে ১ উইকেট। ম্যাচের প্রথম বলেই লিটনের এমন ছক্কা হাঁকানোর ভঙ্গিও শটস দেখে মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ এই ম্যাচে রান তাড়া করতে নেমেছে। যেন নিউজিল্যান্ড ৫০০ রান জমা করেছে, বাংলাদেশকে প্রতি বলেই মারকাটারি শটস্ খেলতে হবে! খেলায় অনেক সময় ব্রেন ফেইড হয়ে যায়, ম্যাচের প্রথম বলে লিটন সম্ভবত সেই সমস্যায় ভুগছিলেন।

প্রথম বলেই উইকেট হারানোর পর মেহেদি মিরাজকে ম্যাচে নামতে হলো এক অর্থে ওপেনার হিসেবে। পাওয়ার প্লের সময়টা ভালোই সামাল দিলেন মেহেদি। বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে কার্যকর ক্রিকেটার মনে হচ্ছে মেহেদি মিরাজকে এই বিশ্বকাপে। দল যখন যেখানে নামাচ্ছে তিনি সেই দায়িত্ব পালন করছেন। রান করছেন। পারফরমেন্স দেখাচ্ছেন। এই ম্যাচেও আপাত ভঙ্গিতে তাই করে দেখালেন মেহেদি মিরাজ।

বিশ্বকাপে শুরুর দুই ম্যাচে ব্যর্থতার পর তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমও প্রশ্নের মধ্যে পড়েন। কিন্তু কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংঙ্গে তার সমর্থনের যুক্তি দিয়ে এই তরুণের পাশে দাড়ান। নিউজিল্যান্ড ম্যাচে ১৭ বলে ১৬ রানে ফিরে তানজিদ কোচের মুখরক্ষা করতে পারলেন কই?

উইকেটে সেট হয়ে মেহেদি মিরাজ ফিরে এলেন ৪৬ বলে ৩০ করে। লিটন দাসের আউটের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে মেহেদি মিরাজও ড্রেসিংরুমে। লকি ফার্গুসনের বাউন্সারে ছক্কা হাঁকানোর খায়েস হলো তার। ডিপ ফাইন লেগে ম্যাট হেনরি খানিকটা সামনে বেড়ে ক্যাচটা নিলেন। ঠিক যাকে বলে ফাঁদে পা দিয়ে আউট হওয়া; মেহেদি মিরাজেরটা পুরোটাই তাই।

উইকেটে এলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সঙ্গী তার নাজমুল হাসান শান্ত। ব্যাটিংয়ে দুই বাঁহাতি, সহজ হিসেবে তাই এই দুই বাঁহাতির জন্য আক্রমণে অফস্পিনার আনলেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। গ্লেন ফিলিপস এক অর্থে পার্টটাইম অফস্পিনার। সেই তিনিই ম্যাচে তার প্রথম বলেই উইকেট শিকারের আনন্দে ভাসলেন। তার নিরীহ দর্শন বলটা পেছনের পায়ে খেলতে গিয়ে নাজমুল হাসান শান্ত ব্যাটের কানায় লাগিয়ে শট মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন। এমন ক্যাচ মিস করার মতো দল নিউজিল্যান্ড না।

ফল, বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডের চেহারা ৫৬ রানে ৪ উইকেট। ইনিংসের বয়স তখন মাত্র ১২.১ ওভার। পুরো ৫০ ওভার খেলার সুযোগ হবে কিনা দলের- সেই আশঙ্কা নিয়ে ড্রেসিংরুম তখন বিষণ্ণ।

সম্পর্কিত খবর