ফাইনালে উইকেট বড় ফ্যাক্টর হবে
সানোয়ার হোসেন। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক। বর্তমানে অনুর্ধ্ব-১৯ দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন। এবারের বিপিএলে বেশ নজর রেখেছিলেন তিনি। ম্যাচ দেখেছেন। টিভি পর্দায় বিশেষজ্ঞ হিসেবে সেই ম্যাচের বিশ্লেষণ করেছেন। ১ মার্চের ফাইনাল নিয়ে নিজের চিন্তা-ভাবনা তুলে ধরেছেন তিনি এই লেখায়।
পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলা রংপুর কেন ফাইনালের টিকেট পেল না। শীর্ষ দল হিসেবে গ্রুপ পর্ব শেষ করে তারা প্লে অফে নাম লেখায়। ফাইনালে খেলার জন্য দু’বার সুযোগ পেয়েছিল তারা। কিন্তু এই দুটো ম্যাচ জিততে পারেনি রংপুর। নিশ্চয়ই এই ব্যর্থতার জন্য রংপুরের টিম ম্যানেজমেন্ট হিসেব মেলাবে। কোথায় বড় ভুল হলো তাদের। রংপুরের শেষ দুই ম্যাচের পারফরম্যান্স কিন্তু আপ টু দা মার্ক ছিল না। রংপুর রংপুরের মতো খেলতে পারেনি।
প্লে অফের আগ পর্যন্ত বরিশাল সেভাবে পারফর্ম করতে পারেনি। কিন্তু রাইট টাইমে এসে পারফর্ম করা শুরু করেছে। স্ট্রংলি কাম ব্যাক করেছে। আর সবকিছু মিলিয়ে কুমিল্লার ফাইনালে আসা তা এক্সপেক্টেড ছিল। তো বলা যায় যে তিনটা দল আসার কথা ছিল তার মধ্যে দুইটা দলই এসেছে।
যে দু’দল এবার ফাইনালে খেলছে তারা উভয়ে ফেভারিট। শক্তিমত্তা ও অভিজ্ঞতা কোনোদিক থেকেই তারা পিছিয়ে নেই। হয়তো বলতে পারেন কুমিল্লা কিছুটা সুবিধায় আছে, কারণ তারা চারবার এই টুর্নামেন্ট জিতেছে। ফাইনালে খেলাটা তাদের কাছে অভ্যাসের মতোই!
১ মার্চের ফাইনালে কে জিতবে সেই প্রশ্নের উত্তরের জন্য ফাইনালের উইকেট একটা বড় ফ্যাক্টর আমার মনে হয়। কুমিল্লায় অনেক বেশি আক্রমণাত্মক কিছু ব্যাটার রয়েছে, উইকেটটা যদি ব্যাটিং বান্ধব হয় তাহলে এডভান্টেজটা আমার মনে হয় কুমিল্লাই পাবে। আর বরিশালেরও ব্যাটিংয়ে যে কোনো পরিস্থিতি সামার দেওয়ার মতো প্লেয়ার আছে। উইকেট ট্রিকি হলেও বরিশালের সেটা ফেস করার সামর্থ্য বেশি আছে।
কুমিল্লার হয়ে মঈন আলী, নারিন, ইমরুল, লিটস, রাসেল এদের সাকসেস আনার ইতিহাস রয়েছে, ওদের টিমটা পুরোনো, এটা হয়তো তাদের বাড়তি একটা সুবিধা দিতেই পারে। ফাইনালে নার্ভের একটা ব্যাপার থাকে। চাপ নেওয়ার একটা ব্যাপার থাকে। এই প্রেশার হ্যান্ডেল করার সক্ষমতা কুমিল্লার বেশি। কুমিল্লার বিদেশিরা অন্য লিগেও খেলেও এরকম চাপ সয়ে অভ্যস্ত। তো বলা যেতেই পারে ফাইনালে চাপের বিষয়টা আমলে আনলে কুমিল্লা কিছুটা এগিয়ে থাকছে বরিশালে বিরুদ্ধে।
টি-টোয়েন্টিতে এক দুইজনের পারফরম্যান্সই দিনশেষে আসল বিষয়। আশা করছি শুক্রবার রাতে ভাল একটা ফাইনাল দেখব। কুমিল্লা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য অন্যতম কন্টেন্ডার। বরিশালেরও অপরচুনিটি আছে।
পরিসংখ্যান জানাচ্ছে প্লে অফের শেষ তিন ম্যাচেই পরে ব্যাট করা দল জিতেছে। মানে টস জেতা একটা বড় ফ্যাক্টর। টস জিতে আগে বোলিং করার সুযোগটা সবাই কাজে লাগাচ্ছে। ফাইনালেও সম্ভবত টস জয়ী অধিনায়ক এমন সিদ্ধান্তই নেবেন। অর্থাৎ আগে বোলিং। দেখা যাচ্ছে রান তাড়া করাটা সহজ হচ্ছে। পরে ব্যাটিং করা দল সুবিধা পাচ্ছে।
ফাইনালে কোনো একটা দল তো জিতবেই। তবে আমি চাই এই ফাইনালে আমাদের দেশি খেলোয়াড়রাই যেন কর্তৃত্ব দেখাক। তারাই যেন মুল নায়ক হয়। এই যেমন আগের ম্যাচে মুশফিক ব্যাট হাতে যেমন ভূমিকা পালন করেছে। ফাইনালেও যেন আমাদের স্থানীয় খেলোয়াড়রা লিডার হয়।
#সানোয়ার হোসেন
জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড়