ক্রিকেট খেলতে হাত লাগে না, দেখালেন আমির
জীবন যুদ্ধ করে যেখানে টিকে থাকাটাই কঠিন সেখানে জীবন যাপন তো বিলাসিতা। সেই বিলাসিতা আবার সবার সাঁঝে না। কাউকে কাউকে শিকার হতে হয় অবহেলা, অবজ্ঞা ও কঠিন বাস্তবতার। তীব্র সংগ্রামের সেই জীবন ছেড়ে পালানোর উপায়ও মিলে না। তবে যারা সাহসী তারা লড়াই করেন। মাথা নত করেন না, কোনো প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতার কাছে। লড়াই চালিয়ে যান এই যুদ্ধে জয়ী না হওয়া অবধি। আর সেই দলের একজন কাশ্মীরের প্যারা দলের ক্রিকেটার আমির হোসেন।
দুটো হাত নেই। প্রিয় ব্যাটটাকে হাতের মুঠোতে শক্ত করে ধরতে পারেন না। তাতে কি? কাঁধ, ঘাড় ও দুটি পা আছে তো। সেটাও তো অনেকেরই আছে। তবে যেটা আর সবার নেই তা হলো তীব্র ইচ্ছে শক্তি ও হার না মানার মানসিকতা; আর সেটা বেশ ভালোভাবেই আছে আমিরের। যেই শক্তির কাছে মাথা নত হতে হয় সকল প্রতিবন্ধকতাকে। ক্রিকেটার হওয়ার সেই তীব্র আকাঙ্ক্ষার কাছে পরাজিত হয় সবকিছু। যা প্রেরণা যোগায়, উদ্যমী করে তুলে সবাইকেই।
ছোট বেলায় কারখানায় কাজ করতে গিয়ে দুটি হাত হারানো সেই আমিরকে ইন্ডিয়ান স্ট্রিট প্রিমিয়ার লিগের উদ্বোধনী ম্যাচে হাজির করেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। ভারতীয় এই কিংবদন্তি ক্রিকেটার জুটি বেধে ব্যাটও করেছেন আমিরের সঙ্গে। আর ফিল্ডিংয়ের সময় নিজে দাঁড়িয়েছেন উইকেটেকিপারের গ্লাভস হাতে। যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এরইমধ্যে ব্যাপক সারা ফেলেছে।
আমির হোসেনের লড়াই দেখে সবচেয়ে খুশি শচীন নিজে। মাত্র ৭ বছর বয়সে দুটি হাত হারানোর পরও আমিরের ক্রিকেটের হয়ে উঠা। কাশ্মীর যুব প্যারা দলকে নেতৃত্ব দেওয়া। ক্রিকেটের প্রতি আমিরের এই নিবেদন মুগ্ধ করেছে শচীনকে। যা নিয়ে কিছুদিন আগেই শচীন লিখেছিলেন, ‘আশা করি একদিন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে এবং তার নামের একটি জার্সি পাব। লাখো মানুষের মাঝে অনুপ্রেরণা দেওয়া ও খেলার প্রতি আত্মনিবেদনের জন্য তাকে অভিনন্দন।’
দুটি হাত না থাকার পরও ক্রিকেটার হওয়ার যেই সংগ্রামের গল্প লিখেছেন আমিরা তা আবেগী করছে নেটিজেনদের। যোগাচ্ছে অনুপ্রেরণাও। যেই অনুপ্রেরণা কাজে লাগাতে পারলে হয়তো কোনো প্রতিবন্ধকতাই কারো চলার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।