ওয়ার্ন-মুরালির অভিজাত ক্লাবে অ্যান্ডারসন
সালটা ২০০৩। পরিপক্ষ জিম্বাবুয়ের মতো সহজ দল হলেও ভেন্যু ছিল স্বপ্নের এবং সেখানে অভিষেক হওয়ার অভিজ্ঞতা আরও খানিকটা রোমাঞ্চের। লর্ডসের সেই টেস্টে নিজের অভিষেক ইনিংসেই ফাইফার তুলে নিয়েছিলেন ২১ বছর বয়সী টগবগে তরুণ জেমস অ্যান্ডারসন। সেই সময় পেসার নামক রাজ্যে সদ্য রাজত্ব শেষ হয়েছিল ওয়াসিম আকরাম, কার্টলি অ্যামব্রোস, ওয়াকার ইউনুসদের। সেখানে নতুন রাজা বনে গ্লেন ম্যাকগ্রা, ব্রেট লি, শন পলকরা। তবে সেই তালিকায় নতুন অ্যান্ডারসন। যার সুইয়ের জাদুতে কুপোকাত হচ্ছিল তৎকালের বাঘা বাঘা ব্যাটাররা।
অ্যান্ডারসনের অভিষেকের তিন বছরের মাথায় বোলিং ক্ষেত্রে এক অনন্য কীর্তি গড়ে দেখালেন অজি স্পিন জাদুকর শেন ওয়ার্ন। ২০০৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর, বক্সিং ডে টেস্টের প্রথম দিনে ইংলিশ ব্যাটার অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসকে আউট করে প্রথম বোলার হিসেবে ৭০০ উইকেটের মাইলফলকে পৌঁছান ওয়ার্ন। তার পরের বছরের জুলাইয়ে ওয়ার্নের সেই ৭০০ উইকেটের ক্লাবে নাম লেখান মুত্তিয়া মুরালিধরন। ক্যান্ডি টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে শেষ ব্যাটার সৈয়দ রাসেলকে ফিরিয়ে ৭০০ উইকেটের অভিজাত ক্লাবে দ্বিতীয় বোলার হিসেবে নাম লেখান এই লঙ্কান কিংবদন্তি স্পিনার।
ওয়ার্ন ও মুরালির পর ৭০০ উইকেট ক্লাবের তৃতীয় বোলার গত ১৭ বছরেও পায়নি ক্রিকেট বিশ্ব। এবং সেখানে যে প্রবেশ করবে একজন পেসার সেই চিন্তা যেন ছিল বহু দূরে। কেননা পেসারের ক্যারিয়ার স্বাভাবিকভাবেই থেমে যায় স্পিনারদের আগে, একাধিক চোটের ছবলে। সেই ছবলে যেন অ্যান্ডারসন পড়েননি তা নয়, তবে সব ছাপিয়ে খেলে চলছেন দীর্ঘ ২১ বছর ধরে। এতেই ১৭ বছর পর ওয়ার্ন ও মুরালি তাদের ৭০০ উইকেটের ক্লাবে পেলেন নতুন এক সদস্য, তাও আবার একজন পুরোদস্তুর ৪১ বছর বয়সী পেসার।
৭০০ উইকেটের এই মাইলফলক ছুঁতে সবচেয়ে কম ১১৩ টেস্ট লেগেছিল মুরালির, ওয়ার্ন নিয়েছিলেন ১৪৪ টেস্ট এবং ২০২৪ সালে এসে অ্যান্ডারসন এই মাইলফলক ছুঁলেন নিজের ১৮৭তম ম্যাচে। ধর্মশালা টেস্টে নামার আগে এই কীর্তি থেকে দুই উইকেট দূরে ছিলেন এই ডানহাতি পেসার। টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ৬৯৯তম উইকেট নিয়েছিলেন সেঞ্চুরিয়ান শুভমান গিলকে ফিরিয়ে। পরে আজ (শনিবার) তৃতীয় দিনে ভারতের প্রথম ইনিংসে নবম উইকেট কুলদীপ যাদবকে ফিরিয়ে ৭০০তম উইকেট নিজের ঝুলিতে নেন অ্যান্ডারসন।
এদিকে বোলার হিসেবে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ১৮৭ টেস্ট খেলছেন অ্যান্ডারসন। এবং সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ টেস্ট ম্যাচ খেলায় তার আগে আছেন কেবল ভারতীয় কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার। তিনি খেলেছেন মোট ২০০টি টেস্ট।