খেল খতম ওই এক ওভারে
কুশল মেন্ডিসের ঝড় সামলে শ্রীলঙ্কাকে যখন ১৭৪ রানে আটকে রেখেছিল বাংলাদেশ, তখন দলের চোখে-মুখে ছিল স্বস্তির ছাপ। আগের ম্যাচে ১৬৫ রান তাড়া করে জিতেছিল দল, তার চেয়ে মাত্র ১০টাই তো বেশি রান! এ আর এমন কী?
কিন্তু জবাব দিতে নেমে এমন পরিস্থিতি হবে, সেটা কি স্বাগতিকরা মোটেও কল্পনা করতে পেরেছিল? উত্তরটা হচ্ছে, না। যদি করেই থাকত, তাহলে তো এভাবে তুষারার সামনে উদভ্রান্ত হয়ে পড়তে হয় না দলকে!
২৯ বছর বয়সী নুয়ান তুষারা স্লিঙ্গিং অ্যাকশনের বোলার। এমন বোলার তো আগের দুই ম্যাচেও দল সামলেছে। শুধু সামলায়ইনি, প্রথম ম্যাচে মাথিসা পাথিরানার চার ওভারে পঞ্চাশোর্ধ্ব রান তুলে জানান দিয়েছিল, ‘এ আমাদের জন্য নতুন কিছু মোটেও নয়’।
পাথিরানা আর তুষারা যে এক ব্যক্তি নন, তা বাংলাদেশ টের পেতে দেরি করে ফেলল একটা ওভার। আর বাংলাদেশের যত খেল, সব শেষ হয়ে গেছে ওই একটা ওভারেই।
তুষারার অ্যাকশন স্লিঙ্গিং হলেও তার বিশেষত্ব আছে একটা। রিলিজ পয়েন্ট একটু নিচু হওয়াতে বল খুব একটা ওপরে ওঠে না, কিন্তু বলে হয় দারুণ গতি। সেই নিচু হয়ে আসা বলগুলোরই কোনো জবাব দিতে পারলেন না নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয় আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সবারই সর্বনাশ করল ওই নিচু হয়ে আসা বল।
প্রথমে বোল্ড হলেন শান্ত। তাতে অবশ্য তার নিজেরও দায় আছে। ব্যাট প্যাডের মাঝখানে প্রায় মাইলখানেক জায়গা ফাঁকা রেখে দিয়েছিলেন। সে ফাঁকা জায়গাটা দখলে নিল তুষারার নিচু হয়ে যাওয়া বলটা। প্রায় একই রেসিপিতে তাওহীদ হৃদয়কেও বিদায় করলেন তিনি। এরপর অবশ্য একটু বাদানুবাদও হয়ে গেল দুজনের।
শেষমেশ অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকেও একইভাবে বিদায় করলেন তিনি। তবে এবার একটু ভিন্নতা এল ডিসমিসালে। বলটা লাগল তার প্যাডে। রিভিউ নিলেন, সেখানে দেখা গেল ইমপ্যাক্ট আর হিটিং দুটোই আম্পায়ার্স কল। উইকেটটা আর কিছুতেই বাঁচানো গেল না বাংলাদেশের! ইতিহাসে ষষ্ঠ বোলার হিসেবে বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিক করে বসেন তুষারা।
আগের ওভারে লিটন দাসকে খুইয়েছিল স্বাগতিকরা। শান্তর বিদায়ের আগেই একটা লম্বা জুটির প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। শেষে যেহেতু মাহমুদউল্লাহ, জাকের আলীদের মতো পাওয়ার হিটাররা আছেন, সে বিষয়টা মাথায় রাখলে খানিকটা ধীরগতির জুটি হলেও সমস্যা ছিল না। কিন্তু তা আর হলো কই? তুষারা তা হতে দিলেন কই? খেল খতম হয়ে গেল তো ওই এক ওভারেই!