অ্যান্ডারসনের ৭০০ উইকেটকে ব্র্যাডম্যানের ৯৯.৯ গড়ের সঙ্গে তুলনা

অ্যান্ডারসনের ৭০০ উইকেটকে ব্র্যাডম্যানের ৯৯.৯ গড়ের সঙ্গে তুলনা

চোটের সঙ্গে পেস বোলারদের সম্পর্কটা বেশ নিবিড়। ক্রিকেটে সাধারণত একটি দলের পেসাররাই সবচেয়ে বেশি চোটে পড়ে থাকেন। যার খেসারত দিতে হয় দলকেও। আর তাছাড়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পেসারদের ক্যারিয়ার খুব বেশি লম্বা হয় না। প্রায়শই চোটে পড়তে দেখা যায় পেসারদের। তাই অনেকে ক্যারিয়ার লম্বা করতে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে টি-টোয়েন্টির দিকে ঝুঁকেন। পেসারদের ক্ষেত্রে এই বাস্তবতা অনেকটা চিরন্তন সত্যে রূপ নিতে চলেছে। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমই বলা যায় জেমস অ্যান্ডারসকে।

বয়সটা ৪২ ছুঁইছুঁই। যেই বয়সে অনেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছেড়ে কোচিং ক্যারিয়ার বেছে নেন। কিংবা কাটান পরিবারের সঙ্গে অখণ্ড অবসর। সেই বয়সে বল হাতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন অ্যান্ডারসন। গতি ও সুইংয়ে নাকানিচুবানি খাওয়াচ্ছেন প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের। পেসে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইংলিশদের। এইতো কদিন আগেই সবশেষ ধর্মশালা টেস্টে কুলদীপ যাদবকে ফিরিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ৭০০ তম উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন অ্যান্ডারসন। উইকেটের সংখ্যায় যা টেস্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ। আর পেসারদের মধ্যে প্রথম।

তার ওপরে আছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রয়াত কিংবদন্তি স্পিনার শেন ওয়ার্ন (৭০৮) ও শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি স্পিনার মুতিয়া মুরালিধরন (৮০০)। তবে অ্যান্ডারসন ব্যতিক্রম অন্য জায়গায়। ভারতের শচীন টেন্ডুলকারের ২০০ টেস্ট খেলার রেকর্ডের পর দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে এই কীর্তি গড়ার পথে রয়েছেন অ্যান্ডারসন। তার টেস্ট সংখ্যা এখন ১৮৭টি। শচীনের চেয়ে মাত্র ১৩ টেস্ট দূরে এই ইংলিশ পেসার।

অ্যান্ডারসনের এমন লড়াই কারার মনোভাব মুগ্ধ করেছে দেশটির সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসেনকে। নাসেরের অধীনে ২০০৩ সালে টেস্ট অভিষেকের পর অ্যান্ডারসনের এমন কীর্তি; যাকে নাসের তুলনা করেছেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের টেস্টে ৯৯.৯ ব্যাটিং গড়ের সঙ্গে।

নাসের বলেন, ‘একজন পেসার হিসেবে শুধু ৭০০ টেস্ট উইকেটেই নয় অ্যান্ডারসন ২০০টি টেস্ট ম্যাচ খেলার পথে রয়েছেন। যা ডন ব্র্যাডম্যানের ৯৯.৯ ব্যাটিং গড়ের মতো। এখন যেমন ভাবা হয় টেস্ট ম্যাচ ক্রিকেটে কীভাবে একজনের গড় ৯৯.৯ হতে পারে? তেমনি সে অবসর নেওয়ার পর সবাই বলবে, একজন পেসার হয়েও কীভাবে সে ২০০টি টেস্ট ম্যাচ ও ৭০০ উইকেট পেল?’

দীর্ঘদিন দলকে সার্ভিস দেওয়ার পেছনে অ্যান্ডারসনের লড়াই ও উইকেটের ক্ষুধার প্রশংসা করে নাসের বলেন, ‘দ্রুত বোলিং করা খুবই কঠিন কাজ। পরের দিন বিছানা থেকে উঠে সেই বুট জোড়া পরিষ্কার করে আবার মাঠে নামা, তাও সব ব্যথা ভুলে। আপনি কঠোর না হলে এটা সম্ভব নয়। আবার আথারটনের মতো অধিনায়করা যখন সন্ধ্যা ৬ টায় দ্বিতীয় নতুন বল আপনাকে ছুঁড়ে দিয়ে বলছেন, ‘তুমি কি আমাদের জন্য আবার যেতে পারো, জিমি?’ এবং সে এটা করছে। তবেই ভাবুন।’

অ্যান্ডারসনের প্রশংসা করে নাসের আরও বলেন, ‘দক্ষতা, ফিটনেস, ক্ষুধা, খেলার প্রতি ভালোবাসা। মানে তিনি সবখানেই অনন্য। তিনি সম্পূর্ণরূপে, একেবারে উজ্জ্বল। একজন অধিনায়ক, একজন খেলোয়াড় এবং এখন একজন সম্প্রচারক হিসাবে জিমি অ্যান্ডারসনের চারপাশে থাকা একটি পরম আনন্দের।’

সম্পর্কিত খবর