লিটন এখন ‘বিরক্ত’ দাস, ছবি তুললে নিরাপত্তা কর্মী ডাকেন!

লিটন এখন ‘বিরক্ত’ দাস, ছবি তুললে নিরাপত্তা কর্মী ডাকেন!

ঘটনাস্থল: কনরাড পুনে। শহরের ফাইভ স্টার হোটেল এটি। বাংলাদেশ দল এই হোটেলেই থাকছে।
সময়: দুপুর বেলা।
হোটেল লবির একপাশে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি সাংবাদিকদের ভিড়। যদি বাংলাদেশ দল বিষয়ক কোনো তথ্য বা খবর মিলে তাহলে হয়তো রিপোর্ট বানানো যাবে, সেই আশায় সাংবাদিকরা জড়ো হয়েছিলেন এখানে। ১৯ অক্টোবর এই শহরেই বাংলাদেশের ম্যাচ। প্রতিপক্ষ ভারত। তবে ১৭ অক্টোবরের আগে বাংলাদেশ দলের কোনো কার্যক্রম নেই। হোটেলেই বা শহরে ঘুরে ফিরে সময় কাটাবেন ক্রিকেটাররা। যেহেতু মাঠে অনুশীলন নেই, তাই সাংবাদিকরা খবরের খোঁজে টিম হোটেলে আসেন। দলের কোনো খেলোয়াড় অথবা কর্মকর্তা বা টিম ম্যানেজমেন্টের কেউ যদি কথাবার্তা বলেন তাহলে নিউজের খোরাক হতে পারে।
কিন্তু এদিন দুপুরে যা ঘটলো তার জন্য সম্ভবত বাংলাদেশের সাংবাদিকরা মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না। দুপুর বেলা হোটেল লবিতে নামলেন লিটন দাস। দূর থেকে লিটন দাসকে দেখে কয়েকজন সাংবাদিক ছবি তোলায় মনে দিলেন। তাও আবার বেশিরভাগেরই মোবাইল ক্যামেরায়। হঠাৎ এই ভিড় দেখে এবং তাকে নিয়ে সাংবাদিকদের এতো বেশি আগ্রহ দেখে লিটন দাস যা করলেন তা ঠিক ক্রিকেটীয় ভব্যতার সঙ্গে মানানসই না।
সাংবাদিকদের ব্যস্ততা দেখে লিটন দাস হোটেল লবিতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংলিষ্টদের কাছে নিজের অস্বস্তির কথা জানালেন। যা এক অর্থে অভিযোগের মতোই হলো।
খানিকবাদে হোটেলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তা এসে লবির এক কোণায় দাঁড়িয়ে থাকা সাংবাদিকদের ডেকে নেন। তিনি বলেন-সাংবাদিকদের ছবি তোলার আচরণে লিটন দাস বিরক্ত হয়েছেন। আর এই সাংবাদিকরা এখানে কেন, এই প্রশ্নও তুলেছেন।
লিটন দাস এই হোটেলের সন্মানিত বোর্ডার। তাই তার অভিযোগকে গুরুত্ব দিতেই হচ্ছে হোটেল কর্তৃপক্ষকে। পুরো পরিস্থিতি অনুধাবন করে সাংবাদিকরা হোটেল লবি থেকে চলে আসেন।
প্রশ্ন হলো, লিটন দাস কেন এমন আচরণ করলেন? এই সাংবাদিকরা কি কেউ তার অচেনা? মিরপুর মাঠ থেকে শুরু করে পৃথিবীর প্রায় সব মাঠেই তো তিনি বাংলাদেশের এই সাংবাদিকদের দেখেছেন। সংবাদ সম্মেলনে মুখোমুখি হয়েছেন। প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। তাহলে পুনের হোটেলে স্বদেশি কোনো সাংবাদিক যদি তার ছবি তুলতে চান, তাও আবার দূর থেকে; তাহলে কেন তিনি অনিরাপত্তা বা বিরক্তবোধ করবেন?
মানলাম সেই সময় লিটন দাস ছবি তোলার মুড বা মেজাজে ছিলেন না। তা হতেই পারে। কিন্তু তিনি নিজে যদি এগিয়ে এসে সাংবাদিকদের বলতেন, এখন না ভাই, পরে ছবি তুইলেন। তাহলে কি কোনো সাংবাদিক জোরাজুরি করতেন? সর্বোপরি তিনি যদি এমনকিছু নিয়ে অভিযোগ করতে চাইলে সেটা দলের ম্যানেজার বা মিডিয়া ম্যানেজারের কাছেও করতে পারতেন। টেলিফোন তো তার হাতেই ছিল। কিন্তু তিনি হোটেলের নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে যে অভিযোগ করলেন তাতে ক্ষমতা দেখানোর দাপটই স্পষ্ঠ। তিনি যা করতে চাইলেন তার নাম হেনস্থা।
দেখে মনে হচ্ছে সাংবাদিকরাই এই বিশ্বকাপে লিটন দাসদের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যার কারণ। ভয়ের কারণ!
নিউজিল্যান্ডের কাছে বড় ব্যবধানে হারা ম্যাচে লিটন দাস ম্যাচের প্রথম বলেই শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন। একজন ব্যাটসম্যান ম্যাচের প্রথম বলে আউট হতেই পারেন। কিন্তু লিটন দাস যে কায়দায় ম্যাচের প্রথম বলেই উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে ট্রেন্ট বোল্টকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিলেন তা আর কিছু নয়, ব্রেন ফেইডের নমুনা!
সম্ভবত সেই রেশ এখনো কাটেনি লিটন দাসের।

সম্পর্কিত খবর