কাল হোক সিরিজ জেতার দিন
সকাল গড়িয়ে দুপুর হতেই চট্টগ্রামের আকাশের মুখ গোমড়া। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি লেগেই আছে, থামার কোনো চিহ্নই নেই। আকাশের মুখ গোমড়া দেখে ক্রিকেটার ক’জনার মনও খারাপই হয়ে গেল। এমনিতে আজ ঐচ্ছিক অনুশীলনের দিন। দলের অধিকাংশই আছেন ছুটির মেজাজে। তবে এসব উপেক্ষা করে কয়েকজন ছুটে এসেছিলেন অনুশীলনে। মনোবাসনা পূর্ণ না হওয়ার দুঃখ ভর করল তাদের।
আজ মনের আশা পূরণ হয়নি। এমন কিছু কালও হোক, তা ঐচ্ছিক অনুশীলনে আসা খেলোয়াড়রা তো বটেই, দলের কেউই চাইবে না। একটা ম্যাচ জিতে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়া গেছে। এবার অপেক্ষা সিরিজ জেতার। কাল প্রথম সুযোগ। সেখানে জিতে যেতে পারলে পরের ম্যাচটা হয়ে যাবে নেহায়েতই নিয়ম রক্ষার এক ম্যাচ। বাংলাদেশ দল সেটাই চায়।
তাসকিন আহমেদের কথায় ফুটে উঠল বিষয়টা। তিনি বলেন, ‘এটা যদি জিততে পারি, তখন হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্য থাকবে। পরের ম্যাচটাই মূল ফোকাস থাকবে এবং আমার বিশ্বাস, সিরিজ জিতবো।’ শুধু চাওয়া নয়, তাসকিন বিশ্বাসই করছেন ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জিতবে বাংলাদেশ।
সে বিশ্বাসটা দলে ছড়িয়ে দিয়েছে আগের ম্যাচের পারফর্ম্যান্স। মোটাদাগে দেখলে দল হিসেবে পারফর্ম্যান্সটা অমন আহামরি কিছু নয়, বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে। ধাতস্থ হওয়ার আগেই এক এক করে তিনটি উইকেট খুইয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। এরপর সেই খাদের কিনার থেকে দুই জুটিতে ম্যাচ হাতে নিয়ে আসে স্বাগতিকরা।
মানসিকতাটা তেমনই, তবে পারফর্ম্যান্সটা এবার আরও বেশি ক্লিনিক্যাল চাইবেন দলের সবাই। সেটা করতে হলে দলের সবার পারফর্ম করা চাই। ম্যাচের আগে তাসকিন চাইছেন সেটাই। বললেন, ‘আল্লাহ আরও ভালো করাক এবং সামনের ম্যাচগুলোতেও যেন আমাদের সবার অবদান ভালো থাকে, এটাই চাওয়া থাকবে।’
আগের ম্যাচ জিতলেও বাংলাদেশ পাওয়ারপ্লেতে পারফর্ম করতেই পারেনি। সেটা বোলিং-ব্যাটিং দুই বিভাগেই। বোলিংয়ে শেষ ওভারে এসে একটা উইকেট তুলে নিলেও তার আগে রান দিয়ে ফেলেছে ৭১। এরপর ব্যাটিংয়ে শুরুতেই খুইয়েছে ৩ উইকেট। ব্যাটিংয়ের সমস্যাটা অবশ্য আজকের নয়। বেশ পুরোনো। বিশ্বকাপ থেকেই পাওয়ারপ্লেতে ২-৩ উইকেট খুইয়ে বসার রোগ বাসা বেধেছে বাংলাদেশ শিবিরে। সিরিজ জেতার মিশন সামনে রেখে এখানে উন্নতি নিশ্চিতভাবেই চাইবেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।
প্রথম ম্যাচে জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে দলে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা একেবারে ক্ষীণ। আগের ম্যাচে ওপেনার লিটন দাস, সৌম্য সরকার, তাওহীদ হৃদয়দের সবাই ব্যর্থ হয়েছিলেন, তবে টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থা আছে তাদের ওপর। বোলিংয়েও সবাই কম-বেশি পারফর্ম করেছিলেন সবাই, তাই এখানেও পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা একেবারেই কম।
পরিবর্তন যেখানে আসতে পারে, সেটা হলো টসে। আগের দিন শ্রীলঙ্কা সবচেয়ে বড় ভুল করেছিল টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে। ম্যাচের দ্বিতীয় ভাগে দেখা গেছে মাঠে সপারের উপস্থিতি। শিশির মুছতেই বারবার মাঠে সপার আনতে হয়েছে। শিশির থাকা মানে বোলিংয়েও অসুবিধা হওয়া। সে অসুবিধায় কাল কোনো দলই পড়তে চাইবে না নিশ্চিতভাবে। তাই এটা বলেই দেওয়া যাচ্ছে, টস জিতবে যে দল, সিলেটে টি-টোয়েন্টি সিরিজের মতো বোলিংই বেছে নেবে সে দল। টি-টোয়েন্টি সিরিজে টস জেতার হ্যাটট্রিক করলেও ওয়ানডে সিরিজের শুরুর ম্যাচে টস জেতেননি অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। কাল নিশ্চয়ই ম্যাচের আগে টসটাও জিততে চাইবেন তিনি। তাহলেই যে জয়ের রাস্তাটা সহজ হয়ে যায় আরও!